আনওয়ারুল হাদীস
এক ধরনের জিনিসে কমবেশী করে আদান-প্রদান করা হারাম ও সুদ -এর বিষয়সমূহ
১ টি হাদীস
সহীহ বুখারী
হাদীস নং : ২১৬২
আন্তর্জাতিক নং: ২৩১১ - ২৩১২
১৪৩৮. যদি কেউ কোন ব্যক্তিকে ওয়াকীল নিয়োগ করে, আর সে ওয়াকীল কোন কিছু ছেড়ে দেয়, মুয়াক্কিল (ওয়াকীল নিয়োগকারী) যদি তা অনুমোদন করে, তাহলে তা জায়েয এবং ওয়াকীল যদি নির্দিষ্ট মেয়াদে কাউকে যখন প্রদান করে, তবে তা-ও জায়েয।
উসমান ইবনে হায়সাম (রাহঃ) ....আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে রমযানের যাকাত হিফাযত করার দায়িত্বে নিযুক্ত করলেন। এক ব্যক্তি এসে অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্যসামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে উপস্থিত করব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি খুবই অভাবগ্রস্ত, আমার যিম্মায় পরিবারের দায়িত্ব রয়েছে এবং আমার প্রয়োজন তীব্র। তিনি বললেন, আমি ছেড়ে দিলাম। যখন সকাল হলো, তখন নবী (ﷺ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আবু হুরায়রা, তোমার রাতের বন্দী কি করল? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, সে তার তীব্র অভাব ও পরিবার,পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়, তাই তাকে আমি ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, সাবধান! সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। ‘সে আবার আসবে’ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর উক্তির কারণে আমি বুঝতে পারলাম যে, সে পুনরায় আসবে। কাজেই আমি তার অপেক্ষায় থাকলাম। সে এল এবং অঞ্জলি ভরে খাদ্যসামগ্রী নিতে লাগল। আমি ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। কেননা, আমি খুবই দরিদ্র এবং আমার উপর পরিবার-পরিজনের দায়িত্ব ন্যস্ত, আমি আর আসবো না। তার প্রতি আমার দয়া হলো, এবং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল হলে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আবু হুরায়রা, তোমার রাতের বন্দী কি করল? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, সে তার তীব্র প্রয়োজন এবং পরিবার- পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়। তাই তাকে আমি ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, খবরদার। সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। তাই আমি তৃতীয়বার তার অপেক্ষায় রইলাম। সে আবার আসল এবং অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে অবশ্যই নিয়ে যাব। এ হল তিন বারের শেষ বার। তুমি প্রত্যেকবার বলো যে আর আসবে না, কিন্তু আবার আস। সে বলল আমাকে ছেড়ে দিন। আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দেব। যা দিয়ে আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করবেন। আমি বললাম সেটা কি? সে বলল, যখন তুমি রাতে শয্যায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসী اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে। তখন আল্লাহর তরফ থেকে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। কাজেই তাকে আমি ছেড়ে দিলাম। ভোর হলে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে বললেন, গত রাতে তোমার বন্দী কি বলল? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আমাকে বলল, যে সে আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দেবে যা দিয়ে আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি আমাকে বললেন, এই বাক্যগুলো কি? আমি বললাম, সে আমাকে বলল, যখন তুমি রাতে শয্যায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসী اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ প্রথম থেকে আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে এবং সে আমাকে বলল, এতে আল্লাহর তরফ থেকে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবেন এবং ভোর পর্যন্ত তোমার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না। সাহাবায়ে কিরাম কল্যাণের জন্য বিশেষ লালায়িত ছিলেন। নবী (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ এ কথাটি তো সে তোমাকে সত্য বলেছে। কিন্তু হুশিয়ার, সে মিথ্যুক। হে আবু হুরায়রা, তুমি কি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথাবার্তা বলেছিলে? আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বললেন, না। তিনি (নবী (ﷺ)) বললেন, সে ছিল শয়তান।
পরিচ্ছেদঃ ১৪৩৯. যদি ওয়াকীল কোন দ্রব্য এভাবে বিক্রি করে যে, তা বিক্রি শরীআতের দৃষ্টিতে ফাসিদ, তবে তার বিক্রি গ্রহণযোগ্য নয়
২১৬২। ইসহাক (রাহঃ) ......... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিলাল (রাযিঃ) কিছু বরনী খেজুর (উন্নত মানের খেজুর) নিয়ে নবী (ﷺ) এর কাছে আসেন। নবী (ﷺ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এগুলো কোথায় পেলে? বিলাল (রাযিঃ) বললেন, আমাদের নিকট কিছু নিকৃষ্ট মানের খেজুর ছিল। নবী (ﷺ) কে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে তা দু’সা‘ বিনিময়ে এক সা’ কিনেছি। এ কথা শুনে নবী (ﷺ) বললেন, হায়! হায়! এটাতো একেবারে সুদ! এটাতো একেবারে সুদ! এরূপ করো না। যখন তুমি উৎকৃষ্ট খেজুর কিনতে চাও, তখন নিকৃষ্ট খেজুর ভিন্নভাবে বিক্রি করে দাও। তারপর সেই মূল্যের বিনিময়ে উৎকৃষ্ট খেজুর কিনে নাও।
بَابُ إِذَا وَكَّلَ رَجُلًا، فَتَرَكَ الوَكِيلُ شَيْئًا فَأَجَازَهُ المُوَكِّلُ فَهُوَ جَائِزٌ، وَإِنْ أَقْرَضَهُ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى جَازَ 2311 - وَقَالَ عُثْمَانُ بْنُ الهَيْثَمِ أَبُو عَمْرٍو، حَدَّثَنَا عَوْفٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: وَكَّلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ، فَأَتَانِي آتٍ فَجَعَلَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ، وَقُلْتُ: وَاللَّهِ لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: إِنِّي مُحْتَاجٌ، وَعَلَيَّ عِيَالٌ وَلِي حَاجَةٌ شَدِيدَةٌ، قَالَ: فَخَلَّيْتُ عَنْهُ، فَأَصْبَحْتُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا هُرَيْرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ»، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، شَكَا حَاجَةً شَدِيدَةً، وَعِيَالًا، فَرَحِمْتُهُ، فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، قَالَ: «أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ، وَسَيَعُودُ»، فَعَرَفْتُ أَنَّهُ سَيَعُودُ، لِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ سَيَعُودُ، فَرَصَدْتُهُ، فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ، فَأَخَذْتُهُ، فَقُلْتُ: لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: دَعْنِي فَإِنِّي مُحْتَاجٌ وَعَلَيَّ عِيَالٌ، لاَ أَعُودُ، فَرَحِمْتُهُ، فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، فَأَصْبَحْتُ، فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا هُرَيْرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ»، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ شَكَا حَاجَةً شَدِيدَةً، وَعِيَالًا، فَرَحِمْتُهُ، فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، قَالَ: «أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ»، فَرَصَدْتُهُ الثَّالِثَةَ، فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ، فَأَخَذْتُهُ، فَقُلْتُ: لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ، وَهَذَا آخِرُ ثَلاَثِ مَرَّاتٍ، أَنَّكَ تَزْعُمُ لاَ تَعُودُ، ثُمَّ تَعُودُ قَالَ: دَعْنِي أُعَلِّمْكَ كَلِمَاتٍ يَنْفَعُكَ اللَّهُ بِهَا، قُلْتُ: مَا هُوَ؟ قَالَ: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ، فَاقْرَأْ آيَةَ الكُرْسِيِّ: {اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلَّا هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ} [البقرة: 255]، حَتَّى تَخْتِمَ الآيَةَ، فَإِنَّكَ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ اللَّهِ حَافِظٌ، وَلاَ يَقْرَبَنَّكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ، فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ»، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، زَعَمَ أَنَّهُ يُعَلِّمُنِي كَلِمَاتٍ يَنْفَعُنِي اللَّهُ بِهَا، فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، قَالَ: «مَا هِيَ»، قُلْتُ: قَالَ لِي: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الكُرْسِيِّ مِنْ أَوَّلِهَا حَتَّى تَخْتِمَ الآيَةَ: {اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلَّا هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ} [البقرة: 255]، وَقَالَ لِي: لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ اللَّهِ حَافِظٌ، وَلاَ يَقْرَبَكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ - وَكَانُوا أَحْرَصَ شَيْءٍ عَلَى الخَيْرِ - فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَا إِنَّهُ قَدْ صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ، تَعْلَمُ مَنْ تُخَاطِبُ مُنْذُ ثَلاَثِ لَيَالٍ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ»، قَالَ: لاَ، قَالَ: «ذَاكَ شَيْطَانٌ»
باب إِذَا بَاعَ الْوَكِيلُ شَيْئًا فَاسِدًا فَبَيْعُهُ مَرْدُودٌ
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ ـ هُوَ ابْنُ سَلاَّمٍ ـ عَنْ يَحْيَى، قَالَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَبْدِ الْغَافِرِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ جَاءَ بِلاَلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِتَمْرٍ بَرْنِيٍّ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مِنْ أَيْنَ هَذَا ". قَالَ بِلاَلٌ كَانَ عِنْدَنَا تَمْرٌ رَدِيٌّ، فَبِعْتُ مِنْهُ صَاعَيْنِ بِصَاعٍ، لِنُطْعِمَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ " أَوَّهْ أَوَّهْ عَيْنُ الرِّبَا عَيْنُ الرِّبَا، لاَ تَفْعَلْ، وَلَكِنْ إِذَا أَرَدْتَ أَنْ تَشْتَرِيَ فَبِعِ التَّمْرَ بِبَيْعٍ آخَرَ ثُمَّ اشْتَرِهِ ".

তাহকীক:
তাহকীক চলমান

বর্ণনাকারী: