৬. আল আনআম ( আয়াত নং - ৭৬ )

bookmark
فَلَمَّا جَنَّ عَلَیۡہِ الَّیۡلُ رَاٰ کَوۡکَبًا ۚ قَالَ ہٰذَا رَبِّیۡ ۚ فَلَمَّاۤ اَفَلَ قَالَ لَاۤ اُحِبُّ الۡاٰفِلِیۡنَ
ফালাম্মা-জান্না ‘আলাইহিল লাইলুরাআ-কাওকাবান কা-লা হা-যা-রাববী ফালাম্মাআফালা কা-লা লাউহিব্বুল আ-ফিলীন।

অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং যখন তার উপর রাত ছেয়ে গেল, তখন সে একটি নক্ষত্র দেখে বলল, ‘এই আমার প্রতিপালক’। ৩৪ অতঃপর সেটি যখন ডুবে গেল, সে বলল, যা কিছু ডুবে যায় আমি তা পছন্দ করি না।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানীঃ

৩৪. হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ‘ইরাকের নীনাওয়া’ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেখানকার লোকে মূর্তি ও নক্ষত্র পূজা করত। তার পিতা আযরও সেই বিশ্বাসেরই অনুসারী ছিল; বরং সে নিজে মূর্তি তৈরি করত। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম শুরু থেকেই তাওহীদে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি শিরককে ঘৃণা করতেন। তবে তিনি নিজ সম্প্রদায়ের চিন্তা-ভাবনাকে জাগ্রত করার লক্ষ্যে এই সূক্ষ্ম পন্থা অবলম্বন করলেন যে, তিনি চন্দ্র, সূর্য ও নক্ষত্রকে দেখে প্রথমে নিজ কওমের ভাষায় কথা বললেন। উদ্দেশ্য ছিল একথা বোঝানো যে, তোমাদের ধারণায় তো এসব নক্ষত্র আমার রব্ব। তবে এসো, আমরা খতিয়ে দেখি এ ধারণা মেনে নেওয়ার উপযুক্ত কি না। সুতরাং যখন নক্ষত্র ও চন্দ্র ডুবে গেল এবং শেষ পর্যন্ত সূর্যও, তখন প্রত্যেকবারই তিনি নিজ কওমকে স্মরণ করালেন যে, এসব তো অস্থায়ী ও পরিবর্তনশীল জিনিস। যে জিনিস নিজেই অস্থায়ী, আবার তাতে ক্রমাগত পরিবর্তনও ঘটতে থাকে, সে সম্পর্কে এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, সে নিখিল বিশ্বকে প্রতিপালন করে এটা কতই না অযৌক্তিক ও নির্বুদ্ধিতাপ্রসূত কথা। সুতরাং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম চন্দ্র, সূর্য ও নক্ষত্র সম্পর্কে যে বলেছিলেন, এগুলো তাঁর প্রতিপালক, এটা তার বিশ্বাস ছিল না এবং সে হিসেবে তিনি একথা বলেননি; বরং নিজ সম্প্রদায় যে বিশ্বাস পোষণ করত তার অসারতা ও ভ্রান্তি তুলে ধরার লক্ষ্যেই তিনি এরূপ বলেছিলেন।