فَکُلُوۡا مِمَّا ذُکِرَ اسۡمُ اللّٰہِ عَلَیۡہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ بِاٰیٰتِہٖ مُؤۡمِنِیۡنَ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৬১. যারা কেবল অনুমান ভিত্তিক ধর্মের অনুসরণ করে, এতক্ষণ তাদের সম্পর্কে আলোচনা চলছিল। তারা তাদের সে সব পথভ্রষ্টতার কারণেই আল্লাহ তাআলার হালাল কৃত বস্তুকে হারাম বলত এবং আল্লাহ তাআলা যে জিনিসকে হারাম করেছেন তাকে হালাল মনে করত। এমনকি একবার কতিপয় কাফের মুসলিমদের প্রতি প্রশ্ন তুলেছিল যে, যে পশুকে আল্লাহ তাআলা হত্যা করেন, অর্থাৎ যা স্বাভাবিকভাবে মারা যায়, তোমরা তাকে মৃত ও হারাম সাব্যস্ত করে থাক; আর যে পশুকে তোমরা নিজেরা হত্যা কর তাকে হালাল মনে কর। তারই উত্তরে এ আয়াত নাযিল হয়েছে। এর সারমর্ম এই যে, হালাল ও হারাম করার এখতিয়ার সম্পূর্ণ আল্লাহর হাতে। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, যে পশু আল্লাহর নামে যবাহ করা হয় তা খাওয়া হালাল; আর যে পশু যবাহ ছাড়াই মারা যায় কিংবা যা যবাহ করার সময় আল্লাহর নাম নেওয়া হয় না তা হারাম। যারা আল্লাহর আয়াতে বিশ্বাস রাখে, আল্লাহর এ ফায়সালার পর তাদের পক্ষে নিজেদের মনগড়া ধ্যান-ধারণার ভিত্তিতে কোন কিছুকে হালাল বা হারাম সাব্যস্ত করা সাজে না।
চিন্তা করার বিষয় হচ্ছে যে, কাফেরদের উপরে বর্ণিত প্রশ্নের উত্তরে এই যুক্তিও পেশ করা যেত যে, যে পশুকে যথারীতি যবাহ করা হয়, তার রক্ত ভালোভাবে বের হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যে পশু এমনিতেই মারা যায়, তার রক্ত তার শরীরেই থেকে যায়, ফলে তার গোশত নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এর তাৎপর্য বর্ণনা করেননি; বরং কেবল এতটুকু বলেই ক্ষান্ত হয়েছেন যে, যা-কিছু হারাম তা আল্লাহ নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। কাজেই তাঁর বিধানাবলীর বিপরীতে নিজের কাল্পনিক ঘোড়া হাঁকানো কোন মুমিনের কাজ হতে পারে না। এভাবে আল্লাহ তাআলা পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, যদিও আল্লাহ তাআলার প্রতিটি হুকুমের মধ্যে কোনও না কোনও তাৎপর্য নিহিত রয়েছে, কিন্তু নিজ আনুগত্যকে সেই তাৎপর্য বোঝার উপর মওকুফ রাখা মুসলিম ব্যক্তির কাজ নয়। তার কর্তব্য আল্লাহ তাআলার কোনও আদেশ এসে গেলে বিনা বাক্যে তা পালন করে যাওয়া, তাতে সে আদেশের তাৎপর্য বুঝে আসুক বা নাই আসুক।