سَنُرِیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا فِی الۡاٰفَاقِ وَفِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَہُمۡ اَنَّہُ الۡحَقُّ ؕ اَوَلَمۡ یَکۡفِ بِرَبِّکَ اَنَّہٗ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ شَہِیۡدٌ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
২৩. অর্থাৎ কুরআন যে আল্লাহর সত্য কিতাব এর অপরাপর দলীল-প্রমাণ তো আপন স্থানে আছেই। এবার আমি এর সপক্ষে আমার কুদরতের নিদর্শন দেখাব তাদের নিজ অস্তিত্বের ভেতরও এবং তাদের আশপাশে সমগ্র আরব এলাকায়, বরং সারা জাহানে। তা দ্বারা কুরআন ও কুরআনের বাহকের সত্যতা দিবালোকের মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। কী সে নিদর্শন? তা হচ্ছে ইসলামের আজিমুশ্বান দিগ্বিজয়, যা কুরআনী ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী বাহ্যিক আসবাব-উপকরণের সম্পূর্ণ বিপরীত, অত্যন্ত বিস্ময়করভাবে সাধিত হয়েছিল। সুতরাং মক্কার কাফেরগণ বদরের যুদ্ধে খোদ নিজেদের অস্তিত্বের ভেতর, মক্কা বিজয়ে আরব জাহানের কেন্দ্রভূমিতে এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে সমগ্র বিশ্বে এ নিদর্শন নিজেদের চোখে দেখে নিয়েছে।
এমনও হতে পারে যে, এ আয়াতে যে নিদর্শনের প্রতি ইশারা করা হয়েছে, তা হল সেই সব সাধারণ নিদর্শন, যা চিন্তাশীল ব্যক্তি তার নিজ অস্তিত্ব ও বিশ্ব চরাচরের প্রতিটি বস্তুর মধ্যে দেখতে পায়। তা দ্বারা যেমন আল্লাহ তাআলার তাওহীদ ও শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়, তেমনি কুরআন মাজীদে প্রদত্ত বক্তব্যসমূহেরও সত্যতা প্রতিভাত হয়। কেননা লক্ষ্য করলে দেখা যায়, কুরআনের সব কথা বিশ্বজগতে আল্লাহ তাআলার যে শাশ্বত বিধান ও প্রাকৃতিক নিয়ম-নীতি কার্যকর রয়েছে, তার সাথে শতভাগ সঙ্গতিপূর্ণ, আর তা নিত্য-নতুনভাবে মানুষের সামনে পরিস্ফুট হচ্ছে। আর এসব বিষয় যেহেতু মানুষের কাছে একসঙ্গে প্রকাশ পায় না; বরং এক-এক করে ক্রমান্বয়ে তার উপর থেকে পর্দা উন্মোচিত হচ্ছে তাই আল্লাহ তাআলা বিষয়টাকে ‘আমি আমার নিদর্শনাবলী দেখাব’ শব্দে ব্যক্ত করেছেন (-অনুবাদক তাফসীরে উসমানী থেকে)।