وَلَا تَنۡفَعُ الشَّفَاعَۃُ عِنۡدَہٗۤ اِلَّا لِمَنۡ اَذِنَ لَہٗ ؕ حَتّٰۤی اِذَا فُزِّعَ عَنۡ قُلُوۡبِہِمۡ قَالُوۡا مَاذَا ۙ قَالَ رَبُّکُمۡ ؕ قَالُوا الۡحَقَّ ۚ وَہُوَ الۡعَلِیُّ الۡکَبِیۡرُ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
১৭. ২২ ও ২৩ নং আয়াতে মুশকিরদের বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস রদ করা হয়েছে। কতক মুশরিক তাদের হাতে গড়া প্রতিমাকে ঈশ্বর মনে করত এবং তাদের সম্পর্কে বিশ্বাস পোষণ করত যে, তারা সরাসরি আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ করে। তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করার জন্য ২২ নং আয়াতে বলা হয়েছে, তারা আসমান ও যমীনে অণু পরিমাণ কোন জিনিসেরও মালিক নয় এবং আসমান ও যমীনের কোনও বিষয়ে তাদের কোনরূপ অংশীদারিত্ব নেই।
অপর এক শ্রেণীর মুশরিকদের বিশ্বাস ছিল, এসব প্রতিমা আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কাজকর্মে সাহায্য করে। তাদেরকে রদ করার জন্য ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের মধ্যে কেউ আল্লাহর সাহায্যকারী নয়’।
আবার এক শ্রেণীর মুশরিক দেব-দেবীকে আল্লাহর প্রভুত্বে অংশীদার বা তার সাহায্যকারী মনে করত না বটে, কিন্তু বিশ্বাস রাখত যে, তারা আল্লাহ তাআলার দরবারে তাদের জন্য সুপারিশ করবে। তাদের ধারণা খণ্ডনের জন্য ২৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যাকে অনুমতি দেন তারা ছাড়া অন্য কারও সুপারিশ তাঁর সামনে কোন কাজে আসবে না’। অর্থাৎ দেব-দেবীর সম্পর্কে তোমাদের তো বিশ্বাস ‘তারা আল্লাহর অতি ঘনিষ্ঠ ও সমাদৃত, ফলে তাঁর দরবারে তাদের সুপারিশ করার এখতিয়ার আছে, অথচ আল্লাহর দরবারে না আছে তাদের কোন ঘনিষ্ঠতা ও গ্রহণযোগ্যতা এবং না আছে তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে সুপারিশ করার যোগ্যতা। যাদের বাস্তবিকই ঘনিষ্ঠতা আছে, সেই ফেরেশতাগণও তো আল্লাহ তাআলার অনুমতি ছাড়া কারও পক্ষে কোন সুপারিশ করতে পারে না।
তারপর বলা হয়েছে, সেই ফেরেশতাদের অবস্থা তো এই যে, তারা সর্বদাই আল্লাহ তাআলার ভয়ে তটস্থ থাকে। এমনকি আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তাদেরকে যখন কোন হুকুম দেওয়া হয়, কিংবা সুপারিশের অনুমতি দেওয়া হয়, তখন তারা এতটাই ভয় পায় যে, বেহুঁশ মত হয়ে যায়। যখন ভয় কেটে যায় তখন একে অন্যকে জিজ্ঞেস করে, তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ কী বলেছেন? তারপর তারা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মত কাজ করেন। যখন সেই ঘনিষ্ঠ ও নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাদের অবস্থাই এমন, তখন এসব হাতে গড়া মূর্তি, যাদের কোন মর্যাদা ও নৈকট্য আল্লাহর কাছে নেই, তারা কিভাবে তাঁর দরবারে সুপারিশ করতে পারে?