আল আহ্‌যাব

সূরা নং: ৩৩, আয়াত নং: ১২

তাফসীর
وَاِذۡ یَقُوۡلُ الۡمُنٰفِقُوۡنَ وَالَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ مَّرَضٌ مَّا وَعَدَنَا اللّٰہُ وَرَسُوۡلُہٗۤ اِلَّا غُرُوۡرًا

উচ্চারণ

ওয়া ইযইয়াকূ লুলমুনা-ফিকূনা ওয়াল্লাযীনা ফী কুলূবিহিম মারাদুম মা-ওয়া‘আদানাল্লাহুয়া রাছূলুহূইল্লা-গুরূরা-।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং স্মরণ কর যখন মুনাফেকগণ এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, তারা বলছিল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। ১৩

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

১৩. বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় আছে, হযরত সালমান ফারসী (রাযি.) যে স্থানে পরিখা খনন করেছিলেন, সেখানে একটি কঠিন পাথরের চাঁই বের হয়ে এসেছিল। সেটি কোনক্রমেই ভাঙ্গা যাচ্ছিল না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষয়টা অবগত করা হলে তিনি স্বয়ং সেখানে উপস্থিত হন এবং হাতে কোদাল নেন। তিনি প্রথমে পাঠ করলেন, وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا “এবং তোমার প্রতিপালকের বাণী সত্যিকারভাবে পূর্ণতা লাভ করল”। তারপর পাথরের উপর কোদাল মারলেন। তাতে পাথরটির এক-তৃতীয়াংশ ভেঙ্গে গেল। সেই সঙ্গে তা থেকে আগুনের এমন এক ফুলকি ছুটল, যার আলোয় তিনি ইয়ামান ও কিসরার অট্টালিকাসমূহ দেখতে পেলেন। তারপর তিনি আবার পাঠ করলেন, وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَّعَدْلًا “এবং তোমার প্রতিপালকের বাণী সত্যিকার ও ন্যায়সঙ্গতভাবে পূর্ণতা লাভ করল”। এই বলে তিনি দ্বিতীয় বার কোদাল মারলেন। তাতে পাথরটির দ্বিতীয় অংশ ভেঙ্গে গেল এবং সেই সঙ্গে আগুনের এমন এক ফুলকি ছুটল, যার আলোয় তিনি রোমের অট্টালিকাসমূহ দেখতে পেলেন। তারপর তৃতীয় আঘাত হানলেন এবং তাতে সম্পূর্ণ পাথরটি ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল। অতঃপর তিনি বললেন, ইয়ামান, ইরান ও রোমের অট্টালিকাসমূহ দেখিয়ে আমাকে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে যে, এসব দেশ আমার উম্মতের করতলগত হবে। মুনাফেকরা তো একথা শুনে হেসেই খুন। তারা ব্যঙ্গ করে বলল, যারা নিজেদের নগর রক্ষা করতেই হিমশিম খাচ্ছে, তারা কিনা রোম ও ইরান জয়ের স্বপ্ন দেখছে। মুফাসসিরগণ বলেন, এ আয়াতে মুনাফেকদের সেই সব মন্তব্যের প্রতিই ইশারা করা হয়েছে।