مَا کَانَ اللّٰہُ لِیَذَرَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ عَلٰی مَاۤ اَنۡتُمۡ عَلَیۡہِ حَتّٰی یَمِیۡزَ الۡخَبِیۡثَ مِنَ الطَّیِّبِ ؕ وَمَا کَانَ اللّٰہُ لِیُطۡلِعَکُمۡ عَلَی الۡغَیۡبِ وَلٰکِنَّ اللّٰہَ یَجۡتَبِیۡ مِنۡ رُّسُلِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ ۪ فَاٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَرُسُلِہٖ ۚ وَاِنۡ تُؤۡمِنُوۡا وَتَتَّقُوۡا فَلَکُمۡ اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ
মুফতী তাকী উসমানী
আল্লাহ এরূপ করতে পারেন না যে, তোমরা (এখন) যে অবস্থায় আছো মুমিনদেরকে সে অবস্থায়ই রেখে দেবেন, যতক্ষণ না তিনি পবিত্র হতে অপবিত্রকে পৃথক করে দেন এবং (অপর দিকে) তিনি এরূপও করতে পারেন না যে, তোমাদেরকে (সরাসরি) গায়বের বিষয় জানিয়ে দেবেন। হাঁ, তিনি (যতটুকু জানানো দরকার মনে করেন, তার জন্য) নিজ নবীগণের মধ্য হতে যাকে চান বেছে নেন। ৭৮ সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস রাখ। যদি তোমরা বিশ্বাস রাখ ও তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে মহা প্রতিদানের উপযুক্ত হবে।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৭৮. ১৭৬ নং আয়াত থেকে ১৭৮ নং আয়াত পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে যে, কাফিরগণ আল্লাহ তাআলার অপ্রিয় হলে দুনিয়ায় তারা আরাম-আয়েশের জীবন লাভ করে কেন? উত্তর দেওয়া হয়েছে যে, আখিরাতে যেহেতু তাদের কোনও অংশ নাই, তাই দুনিয়ায় তাদেরকে অবকাশ দিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে তারা আরও বেশি গুনাহ কামাই করে এবং তারা তাই করছে। একটা সময় আসবে, যখন তাদেরকে একত্র করে আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। ১৭৯ নং আয়াতে এর বিপরীতে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে যে, মুসলিমগণ আল্লাহ তাআলার প্রিয় হওয়া সত্ত্বেও তাদের উপর এত বিপদ কেন? তার এক উত্তর এ আয়াতে এই দেওয়া হয়েছে যে, মুসলিমদের জন্য এটা পরীক্ষা। এ পরীক্ষা নেওয়ার উদ্দেশ্য ঈমানের দাবীতে কে খাঁটি এবং কে ভেজাল এটা পরিষ্কার করে দেওয়া! আল্লাহ তাআলা এটা পরিষ্কার না করা পর্যন্ত মুসলিমদেরকে আপন অবস্থায় রেখে দিতে পারেন না। বস্তুত কে ঈমানে অটল থাকে আর কে টলে যায়, তার পরিচয় বিপদের সময়ই পাওয়া যায়। এর উপর প্রশ্ন হতে পারত যে, আল্লাহ মুসলিমদেরকে বিপদে ফেলা ছাড়াই কেন এ বিষয়টি জানিয়ে দেন না? এর উত্তর দেওয়া হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা গায়বের বিষয় প্রত্যেককে জানান না। বরং যতটুকু জানাতে চান তা নিজ নবীকে জানিয়ে দেন। তাঁর হিকমতের দাবি হচ্ছে, মুসলিমগণ মুনাফিকদের দুষ্কর্ম নিজেদের চোখে দেখে নিক ও তাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিক। সে কারণেই এসব বিপদ-আপদ আসে। এর আরও তাৎপর্য সামনে ১৮৫ ও ১৮৬ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।