کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَتَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَتُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ ؕ وَلَوۡ اٰمَنَ اَہۡلُ الۡکِتٰبِ لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ مِنۡہُمُ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَاَکۡثَرُہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৫০. এ উম্মতের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ বলা হয়েছে দু’টি : (ক) সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করা এবং (খ) আল্লাহর প্রতি ঈমান। প্রশ্ন হতে পারে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করার তথা দাওয়াতের দায়িত্ব তো অন্যান্য উম্মতের উপরও ছিল, যেমন বিভিন্ন আয়াত ও হাদীছ দ্বারা জানা যায়। আর বলা বাহুল্য, আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমানও তাদের ছিল, তা সত্ত্বেও তাদের অপেক্ষা এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ বলার কারণ কী? এর জবাব আয়াতের বাচনভঙ্গির মধ্যেই প্রচ্ছন্ন আছে। বলা হয়েছে, ‘তোমরা সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করে থাক। এর মধ্যে ইশারা রয়েছে যে, অন্যান্য উম্মতের উপর এ দায়িত্ব থাকলেও তারা তা পালনে অবহেলা করত। অবহেলার কারণে কুরআন মাজীদের কোন কোন আয়াতে তাদেরকে তিরস্কারও করা হয়েছে। এবং সে অবহেলারই পরিণাম হল, তাদের ধর্ম কাল পরিক্রমায় বিকৃত ও বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অপরপক্ষে এ উম্মতের কোনও না কোনও দল এ দায়িত্ব যথারীতি আদায় করে আসছে এবং হাদীছের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী কিয়ামত পর্যন্ত পালন করে যাবে, যে কারণে দীনে ইসলাম অদ্যাবধি তার স্বরূপে সংরক্ষিত আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে ইনশাআল্লাহ। সেই সঙ্গে শ্রেষ্ঠত্বের একটা কারণ হল দাওয়াতের পূর্ণাঙ্গতা ও সার্বজনীনতা। অর্থাৎ এ দীন পরিপূর্ণ ও সার্বজনীন হওয়ায় এ উম্মতের দাওয়াতের মধ্যেও পরিপূর্ণতা ও সার্বজনীনতার গুণ বিদ্যমান, যা অন্য কোন উম্মতের দাওয়াতে ছিল না।
আর দ্বিতীয় বিষয় অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ঈমানও যে অন্যান্য উম্মতের যথাযথ নয়, তাও এ আয়াতে স্পষ্ট। সুতরাং বলা হয়েছে, ‘কিতাবীগণ যদি ঈমান আনত’ অর্থাৎ তারা যদি শেষনবী ও কুরআন মাজীদের প্রতি ঈমান আনত! তা না আনার কারণে তাদের আপন-আপন নবী ও কিতাবের প্রতিও ঈমান পূর্ণাঙ্গ থাকেনি। ফলে তাদের ঈমান হয়ে গেছে খণ্ডিত ঈমান। পক্ষান্তরে দাওয়াতের মত এ উম্মতের ঈমানও পূর্ণাঙ্গ। তারা কিছুতে ঈমান আনে, কিছুতে আনে না, এমন নয়। বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত যত কিতাব নাযিল হয়েছে ও যত নবী প্রেরিত হয়েছেন, এরা তার সকলের প্রতিই বিশ্বাস রাখে। তাই বলা হয়েছে, তোমরা আল্লাহর প্রতি (অর্থাৎ তার সমস্ত কিতাব ও সমস্ত নবীর প্রতি) ঈমান রাখ। সুতরাং ঈমানের পরিপূর্ণতা এবং সার্বজনীনতার সাথে দাওয়াতের ধারাবাহিকতা রক্ষার ভিত্তিতেই এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত বলা হয়েছে। (-অনুবাদক)