আন নূর

সূরা নং: ২৪, আয়াত নং: ৫৮

তাফসীর
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لِیَسۡتَاۡذِنۡکُمُ الَّذِیۡنَ مَلَکَتۡ اَیۡمَانُکُمۡ وَالَّذِیۡنَ لَمۡ یَبۡلُغُوا الۡحُلُمَ مِنۡکُمۡ ثَلٰثَ مَرّٰتٍ ؕ مِنۡ قَبۡلِ صَلٰوۃِ الۡفَجۡرِ وَحِیۡنَ تَضَعُوۡنَ ثِیَابَکُمۡ مِّنَ الظَّہِیۡرَۃِ وَمِنۡۢ بَعۡدِ صَلٰوۃِ الۡعِشَآءِ ۟ؕ ثَلٰثُ عَوۡرٰتٍ لَّکُمۡ ؕ لَیۡسَ عَلَیۡکُمۡ وَلَا عَلَیۡہِمۡ جُنَاحٌۢ بَعۡدَہُنَّ ؕ طَوّٰفُوۡنَ عَلَیۡکُمۡ بَعۡضُکُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمُ الۡاٰیٰتِ ؕ وَاللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ

উচ্চারণ

ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূলিইয়াছতা’যিনকুমুল্লাযীনা মালাকাত আইমা-নুকুম ওয়াল লাযীনা লাম ইয়াবলুগুল হুলুমা মিনকুম ছালা-ছা মাররা-তিন মিন কাবলি সালা-তিল ফাজরি ওয়া হীনা তাদা‘ঊনা ছিয়া-বাকুম মিনাজ্জাহীরাতি ওয়া মিম বা‘দি সালা-তিল ‘ইশাই ছালা-ছু‘আওরা-তিল্লাকুম লাইছা ‘আলাইকুম ওয়ালা-‘আলাইহিম জুনা-হুম বা‘দাহুন্না তাওওয়া-ফূনা ‘আলাইকুম বা‘দুকুম ‘আলা-বা‘দিন কাযালিকা ইউবাইয়িনুল্লা-হু লাকুমুল আ-য়া-তি ওয়াল্লা-হু ‘আলীমুন হাকীম।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

হে মুমিনগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীগণ এবং তোমাদের মধ্যে যারা এখনও সাবালকত্বে পৌঁছেনি সেই শিশুগণ যেন তিনটি সময়ে (তোমাদের কাছে আসার জন্য) অনুমতি গ্রহণ করে ফজরের নামাযের আগে, দুপুর বেলা যখন তোমরা পোশাক খুলে রাখ এবং ইশার নামাযের পর। ৪৫ এ তিনটি তোমাদের গোপনীয়তা অবলম্বনের সময়। এ ছাড়া অন্য সময়ে তোমাদের ও তাদের প্রতি কোন কঠোরতা নেই। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে তো সার্বক্ষণিক যাতায়াত থাকেই। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের কাছে আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে থাকেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

৪৫. ২৭-২৯ আয়াতসমূহে হুকুম দেওয়া হয়েছিল, কেউ যেন অন্যের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ না করে। মুসলিমগণ সাধারণভাবে এ হুকুম মেনে চলছিল। কিন্তু ঘরের দাস-দাসী ও নাবালেগ ছেলে-মেয়েদের যেহেতু বারবার এ ঘর-ও ঘর করতে হয় বা এক কামরা থেকে অন্য কামরায় যাতায়াত করতে হয়, তাই তাদের ব্যাপারে তারা এ নিয়ম রক্ষা করত না। এর ফলে অনেক সময় এমনও ঘটে যেত যে, কেউ হয়ত আরাম করছে বা একা খোলামেলা অবস্থায় আছে আর এ সময় হঠাৎ কোন দাস-দাসী বা ছেলে-মেয়ে সেখানে ঢুকে পড়ল। এতে যে কেবল বিশ্রামের ব্যাঘাত হত তাই নয়, অনেক সময় পর্দাও নষ্ট হত। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত নাযিল হল। এতে স্পষ্টভাবে বিধান জানিয়ে দেওয়া হল যে, অন্ততপক্ষে তিনটি সময়ে দাস-দাসী ও শিশুদেরকেও অনুমতি নিতে হবে। বিনা অনুমতিতে তারাও অন্য ঘরে বা অন্য কক্ষে প্রবেশ করবে না। বিশেষভাবে এ তিনটি সময় (অর্থাৎ ফজরের পূর্বে, দুপুর বেলা ও ইশার পর)-এর কথা বলা হয়েছে এ কারণে যে, এ সময়গুলোতে মানুষ সাধারণত একা থাকতে ভালোবাসে। একটু খোলামেলা থাকতে স্বচ্ছন্দবোধ করে। তাই একান্ত জরুরী পোশাক ছাড়া অন্য কাপড় খুলে রাখে। এ অবস্থায় হঠাৎ করে কেউ এসে পড়লে পর্দাহীনতার আশঙ্কা থাকে আর আরাম তো নষ্ট হয়ই। এছাড়া অন্যান্য সময়ে যেহেতু এসব ভয় থাকে না আবার এদের বেশি-বেশি আসা-যাওয়া করারও প্রয়োজন থাকে, তাই হুকুম শিথিল রাখা হয়েছে। তখন তারা অনুমতি ছাড়াও প্রবেশ করতে পারবে।