অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
এবং মুমিন নারীদের বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং নিজেদের ভূষণ অন্যদের কাছে প্রকাশ না করে, যা আপনিই প্রকাশ পায় তা ছাড়া ১৯ এবং তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল নিজ বক্ষদেশে নামিয়ে দেয় এবং নিজেদের ভূষণ ২০ যেন স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাতিজা, ভাগিনেয়, আপন নারীগণ, ২১ যারা নিজ মালিকানাধীন, ২২ যৌনকামনা নেই এমন পুরুষ খেদমতগার ২৩ এবং নারীদের গোপনীয় অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ২৪ ছাড়া আর কারও সামনে প্রকাশ না করে। মুসলিম নারীদের উচিত ভূমিতে এভাবে পদক্ষেপ না করা, যাতে তাদের গুপ্ত সাজ জানা হয়ে যায়। ২৫ হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানীঃ
১৯. এখানে ভূষণ দ্বারা শরীরের সেই অংশ বোঝানো হয়েছে, যাতে অলংকার বা আকর্ষণীয় পোশাক পরিধান করা হয়। এভাবে এ আয়াতে নারীদেরকে হুকুম করা হয়েছে, তারা যেন গায়রে মাহরাম বা পরপুরুষের সামনে নিজেদের গোটা শরীর বড় চাদর বা বোরকা দ্বারা ঢেকে রাখে, যাতে তারা তার সাজসজ্জার অঙ্গসমূহ দেখতে না পায়। তবে শরীরের এ রকম অংশ যদি কাজকর্ম করার সময় আপনিই খুলে যায় বা বিশেষ প্রয়োজনবশত খোলার দরকার পড়ে, তাতে গুনাহ হবে না। সে সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘যা আপনিই প্রকাশ পায় তা ছাড়া’। ইবনে জারীর তাবারী (রহ.) তাঁর তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নারী যে চাদর দ্বারা শরীর ঢাকে, এ ব্যতিক্রম দ্বারা সেটাই বোঝানো উদ্দেশ্য, যেহেতু তা আবৃত করা সম্ভব নয়। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু ব্যাখ্যা করেন, বিশেষ প্রয়োজনে যদি চেহারা বা হাত খুলতে হয়, তবে এ আয়াত তার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু চেহারাই যেহেতু রূপ ও সৌন্দর্যের কেন্দ্রস্থল তাই সাধারণ অবস্থায় তা ঢেকে রাখতে হবে, যেমন সূরা আহযাবে হুকুম দেওয়া হয়েছে (৩৩ : ৫৯)। হ্যাঁ বিশেষ প্রয়োজন দেখা দিলে সেটা ভিন্ন কথা। তখন চেহারাও খোলা যাবে, কিন্তু পুরুষের প্রতি নির্দেশ হল তখন যেন সে নিজ দৃষ্টি অবনমিত রাখে, যেমন এর আগের আয়াতে গেছে।