অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
(আর্থিক সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে) উপযুক্ত সেই সকল গরীব, যারা নিজেদেরকে আল্লাহর পথে এভাবে আবদ্ধ করে রেখেছে যে, (অর্থের সন্ধানে) তারা ভূমিতে চলাফেরা করতে পারে না। তারা যেহেতু (অতি সংযমী হওয়ার কারণে কারও কাছে) সওয়াল করে না, তাই অনবগত লোকে তাদেরকে বিত্তবান মনে করে। তুমি তাদের চেহারার আলামত দ্বারা তাদেরকে (অর্থাৎ তাদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা) চিনতে পারবে। (কিন্তু) তারা মানুষের কাছে না-ছোড় হয়ে সওয়াল করে না। ২০৬ তোমরা যে সম্পদই ব্যয় কর, আল্লাহ তা ভালো করেই জানেন।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানীঃ
২০৬. হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে, এ আয়াত ‘আসহাবে সুফফা’ সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। ‘আসহাবে সুফফা’ বলা হয় সেই সকল সাহাবীকে, যারা দীনী ইলম শেখার জন্য নিজেদের জীবন ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে মসজিদে নববী সংলগ্ন চত্বরে পড়ে থাকতেন। দীনী ইলম শেখায় নিয়োজিত থাকার কারণে জীবিকা সংগ্রহের সুযোগ পেতেন না। তাই বলে যে তারা মানুষের কাছে হাত পাততেন তাও নয়। দারিদ্র্যের সকল কষ্ট হাসিমুখে বরণ করে নিতেন। এ আয়াত জানাচ্ছে, অর্থ সাহায্য লাভের বেশি উপযুক্ত তারাই, যারা সমগ্র উম্মতের কল্যাণ সাধনের মহতি উদ্দেশ্যে কোথাও আবদ্ধ হয়ে থাকে এবং নিদারুণ কষ্ট-ক্লেশ সত্ত্বেও কারও সামনে নিজ প্রয়োজনের কথা প্রকাশ করে না। ২৬১ নং আয়াত থেকে ২৭৪ নং আয়াত পর্যন্ত দান-সদাকার ফযীলত ও তার বিধানাবলী বর্ণিত হয়েছে। সামনে এর বিপরীত বিষয় তথা সুদ সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছে। দান-সদকা মানুষের দানশীল চরিত্রের আলামত, আর সুদ হচ্ছে কৃপণতা ও বিষয়াসক্তির পরিচায়ক।