অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তুমি কি সেই ব্যক্তির অবস্থা চিন্তা করেছ, যাকে আল্লাহ রাজত্ব দান করার কারণে সে নিজ প্রতিপালকের (অস্তিত্ব) সম্পর্কে ইবরাহীমের সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হয়? যখন ইবরাহীম বলল, আমার প্রতিপালক তিনিই, যিনি জীবনও দান করেন এবং মৃত্যুও! তখন সে বলতে লাগল, আমিও জীবন দেই এবং মৃত্যু ১৯৫ ঘটাই! ইবরাহীম বলল, আচ্ছা! তা আল্লাহ তো সূর্যকে পূর্ব থেকে উদিত করেন, তুমি তা পশ্চিম থেকে উদিত কর তো! এ কথায় সে কাফির নিরুত্তর হয়ে গেল। আর আল্লাহ (এরূপ) জালিমদেরকে হিদায়াত করেন না।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানীঃ
১৯৫. বাবেলের বাদশাহ নমরূদের কথা বলা হচ্ছে। সে নিজেকে খোদা বলে দাবী করত। তার দাবী ‘আমি জীবন ও মৃত্যু দান করি’-এর অর্থ ছিল, আমি বাদশাহ হওয়ার কারণে যাকে ইচ্ছা করি তার প্রাণনাশ করতে পারি এবং যাকে ইচ্ছা করি মৃত্যুদণ্ডের উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাকে ক্ষমা করে দেই ও তাকে মুক্তি দান করি। আর এভাবে আমি তার জীবন দান করি। বলাবাহুল্য, তার এ জবাব মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। কেননা আলোচনা জীবন ও মৃত্যুর উপকরণ সম্পর্কে নয়, বরং তার সৃষ্টি সম্পর্কে হচ্ছিল। কিন্তু হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম দেখলেন, সে মৃত্যু ও জীবনের সৃষ্টি কাকে বলে সেটাই বুঝতে পারছে না অথবা সে কূটতর্কে লিপ্ত হয়েছে। অগত্যা তিনি এমন একটা কথা বললেন, যার কোনও উত্তর নমরূদের কাছে ছিল না। কিন্তু লা জওয়াব হয়ে যে সত্য কবুল করে নেবে তা নয়; বরং উল্টো সে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে প্রথমে বন্দী করল, তারপর তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিল, যা সূরা আম্বিয়া (২১ : ৬৮-৭১), সূরা আনকাবূত (২৯ : ২৪) ও সূরা সাফফাত (৩৭ : ৯৭)- এ বর্ণিত হয়েছে।