অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী
তোমাদের মধ্যে যাদের মৃত্যু হয়ে যায় এবং স্ত্রী রেখে যায়, তারা যেন (মৃত্যুকালে) স্ত্রীদের অনুকূলে ওসিয়ত করে যায় যে, তারা এক বছর পর্যন্ত (পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে খোরপোষ গ্রহণের) সুবিধা ভোগ করবে এবং তাদেরকে (স্বামীগৃহ থেকে) বের করা যাবে না। ১৮০ হাঁ, তারা নিজেরাই যদি বের হয়ে যায়, তবে নিজেদের ব্যাপারে তারা বিধিমত যা করবে, তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। আল্লাহ মহাক্ষমতাবান, প্রজ্ঞাময়।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানীঃ
১৮০. শেষ দিকে তালাক সম্পর্কিত যে মাসাইলের আলোচনা চলছিল, তার একটি পরিশেষ এ স্থলে উল্লেখ করা হচ্ছে। বিষয়টি তালাকপ্রাপ্তা নারীদের অধিকার সম্পর্কিত। জাহিলী যুগে বিধবার ইদ্দত হত এক বছর। ইসলাম সে মেয়াদ কমিয়ে চার মাস দশ দিন করে দিয়েছে (দ্র. আয়াত ২ : ২৩৪)। এ আয়াত যখন নাযিল হয়, তখনও পর্যন্ত মীরাছের আহকাম নাযিল হয়নি। উপরে ১৮০ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, মৃত্যুপথ যাত্রীর কর্তব্য, তার সম্পদ থেকে কোন আত্মীয় কতটুকু পাবে সে সম্পর্কে ওসিয়ত করে যাওয়া। এ আয়াতে সে নীতি অনুসারেই বলা হচ্ছে যে, যদিও বিধবার ইদ্দত চার মাস দশ দিন, কিন্তু তার স্বামীর উচিত স্ত্রী সম্পর্কে এই ওসিয়ত করে যাওয়া যে, তাকে যেন এক বছর পর্যন্ত তার সম্পদ থেকে খোরপোষ দেওয়া হয় এবং তাকে যেন তার ঘরে থাকারও সুযোগ দেওয়া হয়। অবশ্য সে নিজেই যদি তার এ হক ছেড়ে দেয় এবং চার মাস দশ দিন পর স্বামীর ঘর থেকে বের হয়ে যায়, তবে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু চার মাস দশ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে তার জন্য স্বামীগৃহ ত্যাগ করা জায়েয নয়। পরবর্তী বাক্যে যে বলা হয়েছে, ‘হাঁ সে নিজেই যদি বের হয়ে যায়, তবে নিজের ব্যাপারে সে বিধিমত যা-কিছুই করবে তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই; তাতে বিধিমত বলতে এটাই বোঝানো হয়েছে যে, সে ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর বের হতে পারবে, তার আগে নয়। তবে এ সমস্ত বিধান মীরাছের আহকাম নাযিল হওয়ার আগে ছিল। যখন সূরা নিসায় মীরাছের বিধান এসে গেছে এবং পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে স্ত্রীর অংশ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তখন এক বছরের খোরপোষ ও স্বামীগৃহে অবস্থানের হক রহিত হয়ে গেছে।