আল বাকারা

সূরা নং: ২, আয়াত নং: ১৭৮

তাফসীর
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الۡقِصَاصُ فِی الۡقَتۡلٰی ؕ اَلۡحُرُّ بِالۡحُرِّ وَالۡعَبۡدُ بِالۡعَبۡدِ وَالۡاُنۡثٰی بِالۡاُنۡثٰی ؕ فَمَنۡ عُفِیَ لَہٗ مِنۡ اَخِیۡہِ شَیۡءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَاَدَآءٌ اِلَیۡہِ بِاِحۡسَانٍ ؕ ذٰلِکَ تَخۡفِیۡفٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَرَحۡمَۃٌ ؕ فَمَنِ اعۡتَدٰی بَعۡدَ ذٰلِکَ فَلَہٗ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ

উচ্চারণ

ইয়াআইয়ূহাল্লাযীনা আ-মানূ কুতিবা ‘আলাইকুমুল কিসা-সু ফিলকাতলা- আলহুররু বিলহুররি ওয়াল ‘আবদু বিল‘আবদি ওয়াল উনছা-বিলউনছা-ফামান ‘উফিয়া লাহু মিন আখীহি শাইউন ফাত্তিবা-‘উম বিলমা‘রূফি ওয়া আদাউন ইলাইহি বিইহছানিন যা-লিকা তাখফীফুম মিররাব্বিকুম ওয়া রাহমাতুন ফামানি‘তাদা-বা‘দা যা-লিকা ফালাহু ‘আযা-বুন আলীম।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

হে মুমিনগণ! যাদেরকে (ইচ্ছাকৃত অন্যায়ভাবে) হত্যা করা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কিসাস (-এর বিধান) ফরয করা হয়েছে- স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, গোলামের বদলে গোলাম, নারীর বদলে নারী (-কেই হত্যা করা হবে)। ১২৩ অতঃপর হত্যাকারীকে যদি তার ভাই (নিহতের অলি)-এর পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা করা হয়, ১২৪ তবে ন্যায়ানুগভাবে (রক্তপণ) দাবী করার অধিকার (অলির) আছে। আর উত্তমরূপে তা আদায় করা (হত্যাকারীর) কর্তব্য। এটা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে এক লঘুকরণ এবং একটি রহমত। এরপরও কেউ সীমালংঘন করলে সে যন্ত্রণাময় শাস্তির উপযুক্ত। ১২৫

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

১২৩. কিসাস অর্থ সম-পরিমাণ বদলা নেওয়া। এ আয়াতে আদেশ করা হয়েছে, কোনও ব্যক্তিকে যদি ইচ্ছাকৃত অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয় এবং হত্যাকারীর অপরাধ প্রমাণিত হয়, তবে নিহতের ওয়ারিশের এ অধিকার থাকে যে, সে হত্যাকারী থেকে কিসাস গ্রহণের দাবী তুলবে। জাহিলী যুগেও কিসাস গ্রহণ করা হত, কিন্তু তাতে ইনসাফ রক্ষা করা হত না। তারা মানুষের মধ্যে নিজেদের ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী বিভিন্ন স্তর সৃষ্টি করে রেখেছিল, আর সে হিসেবে নিুস্তরের কোনও লোক উচ্চস্তরের কাউকে হত্যা করলে ওয়ারিশগণ হত্যাকারীর পরিবর্তে তার গোত্রের এমন কাউকে হত্যা করতে চাইত যে মর্যাদায় নিহতের সমান। যদি কোনও গোলাম স্বাধীন কোনও ব্যক্তিকে হত্যা করত, তবে গোলামের পরিবর্তে একজন স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করার দাবি জানাত। এমনিভাবে হত্যাকারী নারী এবং নিহত পুরুষ হলে বলা হত, সেই নারীর পরিবর্তে একজন পুরুষকে হত্যা করা হবে। পক্ষান্তরে হত্যাকারী যদি নিহত ব্যক্তি অপেক্ষা উচ্চস্তরের লোক হত, যেমন হত্যাকারী পুরুষ এবং নিহত নারী, তবে হত্যাকারীর গোত্র বলত, আমাদের কোনও নারীকে হত্যা কর; পুরুষ হত্যাকারীর থেকে কিসাস নেওয়া যাবে না। আলোচ্য আয়াত জাহিলী যুগের এই অন্যায় প্রথার বিলোপ সাধন করেছে এবং ঘোষণা করে দিয়েছে, প্রাণ সকলেরই সমান। সর্বাবস্থায় হত্যাকারীর থেকেই কিসাস নেওয়া হবে, তাতে সে পুরুষ হোক বা নারী এবং স্বাধীন ব্যক্তি হোক বা গোলাম।
﴾﴿