اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَاخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَالنَّہَارِ وَالۡفُلۡکِ الَّتِیۡ تَجۡرِیۡ فِی الۡبَحۡرِ بِمَا یَنۡفَعُ النَّاسَ وَمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ مِنَ السَّمَآءِ مِنۡ مَّآءٍ فَاَحۡیَا بِہِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِہَا وَبَثَّ فِیۡہَا مِنۡ کُلِّ دَآبَّۃٍ ۪ وَّتَصۡرِیۡفِ الرِّیٰحِ وَالسَّحَابِ الۡمُسَخَّرِ بَیۡنَ السَّمَآءِ وَالۡاَرۡضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ
উচ্চারণ
ইন্না ফী খালকিছছামা-ওয়াতি ওয়াল আর দিওয়াখতিলা-ফিল্লাইলি ওয়ান্নাহা-রি ওয়াল ফুলকিল্লাতী তাজরী ফিল বাহরি বিমা-ইয়ানফা‘উন্না-ছা ওয়ামাআনঝালাল্লা-হু মিনাছছামাই মিম্মাইন ফাআহইয়া-বিহিল আরদা বা‘দা মাওতিহা ওয়া বাছছা ফীহামিন কুল্লি দাব্বাতিওঁ ওয়া তাসরীফির রিয়া-হিওয়াছছাহা-বিল মুছাখখারি বাইনাছ ছামাই ওয়াল আরদিলাআ-য়া-তিল লিকাওমিইঁ ইয়া‘কিলূন।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
১১৪. আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ব-জগতের এমন সব অভিজ্ঞানের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যা আমাদের চোখের সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যৌক্তিকভাবে চিন্তা করলে দেখা যায়, সেগুলো আল্লাহ তাআলার অস্তিত্ব ও একত্বের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ বহন করে। প্রতিদিন দেখতে দেখতে আমাদের চোখ যেহেতু তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে তাই তাতে আমাদের কাছে বিস্ময়কর কিছু অনুভূত হয় না। নচেৎ তার একেকটি বস্তু এমন বিস্ময়কর বিশ্ব-ব্যবস্থার অংশ, যার সৃজন আল্লাহ তাআলার অপার কুদরত ছাড়া মহা বিশ্বের আর কোনও শক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। আসমান-যমীনের সৃষ্টিরাজি নিরবধি যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, চন্দ্র-সূর্য যেভাবে এক বাঁধাধরা সময়সূচি অনুযায়ী দিবা-রাত্র পরিভ্রমণরত আছে, অফুরন্ত পানির ভাণ্ডার সাগর যেভাবে নৌযানের মাধ্যমে স্থলভাগের বিভিন্ন অংশকে পরস্পর জুড়ে রাখছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী স্থান থেকে স্থানান্তরে পৌঁছে দিচ্ছে এবং মেঘ ও বায়ু যেভাবে মানুষের জীবন-সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেয়, তাতে এসব বস্তু সম্পর্কে কেবল আকাট মূর্খই এটা ভাবতে পারে যে, এগুলো কোনও স্রষ্টা ছাড়া আপনা-আপনিই অস্তিত্ব লাভ করেছে। আরব মুশরিকগণও স্বীকার করত, এ বিশ্বজগত আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। তবে সেই সাথে তারা এ বিশ্বাসও রাখত যে, এসব কাজে কয়েকজন দেব-দেবী তাঁর সাহায্যকারী রয়েছে। কুরআন মাজীদ বলছে, যেই সত্তার শক্তি এত বিশাল যে, তিনি অন্যের কোনও অংশীদারিত্ব ছাড়াই এ বিস্ময়কর মহাজগত সৃষ্টি করেছেন, ছোট ছোট কাজে তাঁর কোনও শরীক বা সহযোগীর দরকার হবে কেন? সুতরাং যে ব্যক্তি নিজের বুদ্ধি-বিবেচনাকে কাজে লাগাবে, সে জগতের প্রতিটি বস্তুর মধ্যেই আল্লাহ তাআলার একত্বের সাক্ষ্য-প্রমাণ দেখতে পাবে।