یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَالصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
১১০. এ সূরার ৪০নং আয়াত থেকে বনী ইসরাঈল সম্পর্কে যে আলোচনা শুরু হয়েছিল তা খতম হয়ে গেছে। শেষে মুসলিমদেরকে উপদেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন নিরর্থক বাক-বিতণ্ডায় লিপ্ত না হয়; বরং তার পরিবর্তে নিজেদের দীন অনুযায়ী যত সম্ভব বেশি আমল করতে যত্নবান থাকে। সে হিসেবেই এখন ইসলামের বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস ও বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা শুরু হচ্ছে। আলোচনার সূচনা করা হয়েছে সবরের প্রতি গুরুত্বারোপ দ্বারা। কেননা এটা সেই সময়ের কথা, যখন মুসলিমগণকে নিজেদের দীনের অনুসরণ ও তার প্রচারকার্যে শত্রুদের পক্ষ হতে নানা রকম বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছিল। তাতে বহুবিধ কষ্ট-ক্লেশ ভোগ করতে হচ্ছিল। অনেক সময় আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে শাহাদতও বরণ করতে হয়েছে কিংবা আগামীতে তা বরণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মুসলিমগণকে উপদেশ দেওয়া হচ্ছে যে, সত্য দীনের পথে এ জাতীয় পরীক্ষা তো আসবেই। একজন মুমিনের কাজ হল আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার প্রতি সন্তুষ্ট থেকে সবর ও ধৈর্য প্রদর্শন করে যাওয়া।
প্রকাশ থাকে যে, দুঃখ-কষ্টে কাঁদা সবরের পরিপন্থী নয়। কেননা ব্যথা পেলে চোখের পানি ফেলা মানব প্রকৃতির অন্তর্ভুক্ত। তাই শরীয়ত এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। যে কান্না অনিচ্ছাকৃত আসে তাও সবরহীনতা নয়। সবরের অর্থ হল, দুঃখ-বেদনা সত্ত্বেও আল্লাহর প্রতি কোনও অভিযোগ না তোলা; বরং আল্লাহ তাআলার ফায়সালার প্রতি বুদ্ধিগতভাবে সন্তুষ্ট থাকা। এর দৃষ্টান্ত দেওয়া যায় অপারেশন দ্বারা। ডাক্তার অপারেশন করলে মানুষের কষ্ট হয়। অনেক সময় সে কষ্টে অনিচ্ছাকৃতভাবে চিৎকারও করে ওঠে, কিন্তু ডাক্তার কেন অপারেশন করছে এজন্য তার প্রতি তার কোনও অভিযোগ থাকে না। কেননা তার বিশ্বাস আছে, সে যা কিছু করছে তার প্রতি সহানুভূতি ও তার কল্যাণার্থে করছে।