سَیَقُوۡلُ السُّفَہَآءُ مِنَ النَّاسِ مَا وَلّٰىہُمۡ عَنۡ قِبۡلَتِہِمُ الَّتِیۡ کَانُوۡا عَلَیۡہَا ؕ قُلۡ لِّلّٰہِ الۡمَشۡرِقُ وَالۡمَغۡرِبُ ؕ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৯৮. এখান থেকে কিবলা পরিবর্তন ও তা থেকে সৃষ্ট মাসাইল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু হচ্ছে। ঘটনার প্রেক্ষাপট এই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা মুকাররমায় থাকাকালে বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করতেন। মদীনা মুনাওয়ারায় আসার পর তাঁকে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করতে আদেশ দেওয়া হয়। তিনি প্রায় সতের মাস সে আদেশ পালন করতে থাকেন। অতঃপর পুনরায় বাইতুল্লাহকেই কিবলা বানিয়ে দেওয়া হয়। সামনে ১৪৪ নং আয়াতে কিবলা পরিবর্তনের এ আদেশ বর্ণিত হয়েছে। আলোচ্য আয়াত ভবিষ্যদ্বাণী করছে যে, ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানগণ এ পরিবর্তনের কারণে হইচই শুরু করে দেবে। অথচ যারা আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান রাখে এ সত্যের জন্য তাদের কোনও দলীল-প্রমাণের দরকার পড়ে না যে, বিশেষ কোনও দিককে কিবলা স্থির করার অর্থ আল্লাহ সেই দিকে অবস্থান করছেন- এমন নয়। তিনি তো সকল দিকে ও সর্বত্রই আছেন। পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ সকল দিক তাঁরই সৃষ্টি। তবে সামগ্রিক কল্যাণ বিবেচনায় বিশেষ একটা দিক স্থির করে দেওয়া সমীচীন ছিল, যে দিকে ফিরে সমস্ত মুমিন আল্লাহ তাআলার ইবাদত করবে। তাই আল্লাহ তাআলা স্বয়ং নিজ হিকমত অনুযায়ী একটা দিক ঠিক করে দেন। আর তার অর্থ এ নয় যে, সেই বিশেষ দিকটি সত্তাগতভাবে পবিত্র ও কাঙ্খিত। কোনও কিবলা বা দিকের যদি কোনও মর্যাদা লাভ হয়ে থাকে, তবে কেবল আল্লাহ তাআলার হুকুমের কারণেই তা লাভ হয়েছে। সুতরাং তিনি স্বীয় প্রজ্ঞা অনুযায়ী যখন চান ও যে দিককে চান কিবলা স্থির করতে পারেন। একজন মুমিনের জন্য সরল পথ এটাই যে, সে এই সত্য উপলব্ধি করত আল্লাহর প্রতিটি আদেশ শিরোধার্য করে নেবে। আয়াতের শেষে যে সরল পথের হিদায়াত দানের কথা বলা হয়েছে তা দ্বারা এই সত্যের উপলব্ধিকেই বোঝানো হয়েছে।