হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের মধ্যে এমন একজন রাসূলও প্রেরণ করুন, যে তাদেরই মধ্য হতে হবে এবং যে তাদের সামনে আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে, তাদেরকে কিতাব ও হিকমতের শিক্ষা দেবে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবে। ৯১ নিশ্চয়ই আপনার এবং কেবল আপনারই সত্তা এমন, যাঁর ক্ষমতা পরিপূর্ণ, প্রজ্ঞাও পরিপূর্ণ।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৯১. হৃদয় থেকে উৎসারিত এ দু’আর যে কি তাছির হতে পারে তা তরজমা দ্বারা অন্য কোনও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তরজমা দ্বারা কেবল তার মর্মটুকুই আদায় করা যায়। এস্থলে তাঁর সে দু‘আ বর্ণনা করার বহুবিধ উদ্দেশ্য রয়েছে। এক উদ্দেশ্য এ বিষয়টা দেখানো যে, আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম তাঁদের মহত্তর কোনও কাজের কারণেও অহমিকা দেখান না; বরং আল্লাহ তাআলার সামনে আরও বেশি বিনয় ও নমনীয়তা প্রকাশ করেন। তাঁরা নিজেদের কৃতিত্ব প্রচারে লিপ্ত হন না; বরং কার্য সম্পাদনে যে ভুল-ত্রুটি ঘটার অবকাশ থাকে, তজ্জন্য তওবা ও ইস্তিগফারে লিপ্ত হন। দ্বিতীয়ত তাঁদের প্রতিটি কাজ হয় আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। তাই তাঁরা তাঁদের কাজের জন্য মানুষের প্রশংসা কুড়ানোর ফিকির না করে বরং আল্লাহ তাআলার কাছে কবুলিয়াতের দু‘আ করেন। তৃতীয়ত এটা প্রকাশ করাও উদ্দেশ্য যে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমনের বিষয়টা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের দু‘আর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এভাবে স্বয়ং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামই এ প্রস্তাবনা রেখেছিলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যেন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালামের বংশে পাঠানো হয়; হযরত ইসরাঈল আলাইহিস সালামের বংশে তথা বনী ইসরাঈলের মধ্যে নয়। এ দু‘আয় হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের যবানে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আবির্ভাবের মৌলিক উদ্দেশ্যসমূহও ব্যক্ত করা হয়েছে। কুরআন মাজীদের কয়েকটি স্থানে সে সকল উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়েছে। তার ব্যাখ্যা ইনশাআল্লাহ এ সূরারই ১৫১ নং আয়াতে আসবে।