আল বাকারা

সূরা নং: ২, আয়াত নং: ১০৬

তাফসীর
مَا نَنۡسَخۡ مِنۡ اٰیَۃٍ اَوۡ نُنۡسِہَا نَاۡتِ بِخَیۡرٍ مِّنۡہَاۤ اَوۡ مِثۡلِہَا ؕ اَلَمۡ تَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ

উচ্চারণ

মা-নানছাখ মিন আ-য়াতিন আও নুনছিহা- না’তি বিখাইরিম মিনহাআও মিছলিহা- আলাম তা‘লাম আন্নাল্লা-হা ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন কাদীর।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি যখনই কোনও আয়াত মানসূখ (রহিত) করি বা তা ভুলিয়ে দেই, তখন তার চেয়ে উত্তম বা সে রকম (আয়াত) আনয়ন ৭৭ করি। তোমরা কি জান না, আল্লাহ সকল বিষয়ে ক্ষমতা রাখেন?

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

৭৭. এটা আল্লাহ তাআলার শাশ্বত রীতি যে, তিনি প্রত্যেক যুগে সেই যুগের পরিস্থিতি অনুসারে শাখাগত বিধানাবলীতে রদ-বদল করে থাকেন। যদিও তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত ইত্যাদি দীনের মৌলিক আকীদাসমূহ সকল যুগে একই রকম থেকেছে, কিন্তু বাস্তব আমল ও কর্মগত যে সকল বিধান হযরত মূসা আলাইহিস সালামকে দেওয়া হয়েছিল, হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের সময়ে তার কতককে পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমলে তার মধ্যে আরও বেশি রদ-বদল করা হয়েছে। এমনিভাবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রথমে যখন নবুওয়াত দান করা হয়, তখন তাঁর দাওয়াতী কার্যক্রমের সামনে অনেকগুলো ধাপ ছিল, যা অতিক্রম করা ছাড়া সামনে অগ্রসর হওয়া সম্ভব ছিল না। সেই সঙ্গে মুসলিমদের সম্মুখেও নানা রকমের সঙ্কট বিদ্যমান ছিল। তাই আল্লাহ তাআলা বিধি-বিধান দানের ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমিক পন্থা অবলম্বন করেন। কখনও কোনও ক্ষেত্রে একটি বিধান দিয়েছেন। পরে আবার সেখানে অন্য বিধান এসে গেছে, যেমন কিবলার বিধানের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সামনে ১১৫নং আয়াতে এর কিছুটা বিবরণ আসবে। শাখাগত বিধানাবলীতে এ জাতীয় তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনকে পরিভাষায় ‘নাসখ’ বলা হয় (যে বিধানকে পরিবর্তন করা হয় তাকে ‘মানসূখ’ এবং পরিবর্তে যা দেওয়া হয় তাকে ‘নাসিখ’ বলা হয়)। কাফিরগণ, বিশেষত ইয়াহুদীরা প্রশ্ন তুলেছিল যে, সকল বিধানই যখন আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তখন তার মধ্যে এসব রদ-বদল কেন? এ আয়াত তাদের সে প্রশ্নের উত্তরে নাযিল হয়েছে। উত্তরের সারমর্ম এই যে, আল্লাহ তাআলা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বীয় হিকমত ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী এসব রদ-বদল করে থাকেন। আর যে বিধানই মানসূখ বা রহিত করা হয় তদস্থলে এমন বিধান দেওয়া হয়, যা পরিবর্তিত পরিস্থিতির পক্ষে বেশি উপযোগী ও অধিকতর ভালো। অন্ততপক্ষে তা পূর্ববর্তী বিধানের সমান ভালো তো অবশ্যই হয়।
﴾﴿