ইউসুফ

সূরা নং: ১২, আয়াত নং: ৭০

তাফসীর
فَلَمَّا جَہَّزَہُمۡ بِجَہَازِہِمۡ جَعَلَ السِّقَایَۃَ فِیۡ رَحۡلِ اَخِیۡہِ ثُمَّ اَذَّنَ مُؤَذِّنٌ اَیَّتُہَا الۡعِیۡرُ اِنَّکُمۡ لَسٰرِقُوۡنَ

উচ্চারণ

ফালাম্মা- জাহহাঝাহুম বিজাহা-ঝিহিম জা‘আলাছছিকা-য়াতা ফী রাহলি আখীহি ছু ম্মা আযযানা মুআযযিনুন আইয়াতুহাল ‘ঈরু ইন্নাকুম লাছা-রিকূ ন।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর ইউসুফ যখন তাদের রসদের ব্যবস্থা করে দিল, তখন পানি পান করার পেয়ালা নিজ (সহোদর) ভাইয়ের মালপত্রের মধ্যে রেখে দিল। তারপর এক ঘোষক চীৎকার করে বলল, ওহে যাত্রীদল! তোমরা নিশ্চয়ই চোর। ৪৮

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

৪৮. এখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, তাদের মালপত্রের ভেতর নিজের পক্ষ থেকেই পেয়ালা রেখে দেওয়ার পর এতটা নিশ্চয়তার সাথে তাদেরকে চোর সাব্যস্ত করাটা কিভাবে জায়েয হতে পারে? এ প্রশ্নের বিভিন্ন উত্তর দেওয়া হয়েছে। যেমন কেউ কেউ বলেন, হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম পেয়ালা রেখেছিলেন অতি গোপনে। তারপর কর্মচারীরা যখন সেটি খুঁজে পেল না, তখন তারা নিজেদের তরফ থেকেই তাদেরকে চোর সাব্যস্ত করল। তারা এটা হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের হুকুমে করেনি। কিন্তু কুরআন মাজীদ ঘটনাটি এখানে যেভাবে বর্ণনা করেছে, তার পূর্বাপর অবস্থা দৃষ্টে এ সম্ভাবনাটি অত্যন্ত দূরের মনে হয়। কতিপয় মুফাসসিরের অভিমত হল, তাদেরকে চোর সাব্যস্ত করা হয়েছিল অপর একটি ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে। তারা হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামকে তাঁর শৈশবে পিতার নিকট থেকে চুরি করেছিল। সে হিসেবেই তাদেরকে চোর বলা হয়েছে। আবার অপর একদল মুফাসসিরের মতে যেহেতু স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই ইউসুফ আলাইহিস সালামকে এ কৌশল শিক্ষা দিয়েছিলেন, যেমন সামনে ৭৬ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেছেন, ‘এভাবে আমি ইউসুফের জন্য এ কৌশলটি করেছিলাম; তাই যা-কিছু হয়েছিল তা আল্লাহ তাআলার হুকুমেই হয়েছিল। সুতরাং এ নিয়ে প্রশ্নের সুযোগ নেই। এটা সূরা কাহাফে বর্ণিত হযরত খাযির আলাইহিস সালামের ঘটনার মত। তাতে তিনি কয়েকটি কাজ এমন করেছিলেন, যা বাহ্যত শরীয়ত বিরোধী ছিল, কিন্তু তা যেহেতু আল্লাহ তাআলার তাকবীনী (অদৃশ্য রহস্য-জগতীয়) হুকুমে হয়েছিল, তাই জায়েয ছিল। এস্থলেও হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের কাজটিও সে রকমেরই।
﴾﴿