প্রশ্নঃ ৫২৫০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুআলাইকুম । ছেলের তরফ থেকে মেয়ের বাবাকে বা মেয়ের অন্য অভিভাবককে উক্ত মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব ছেলে দিতে পারবে কিনা;? ইসলামের এখানে বিধান কি? বিদেশে সরাসরি মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব ছেলে দিতে পারবে কিনা ? কেননা বিদেশে অনেক মেয়ে পরিবার থেকে আলাদা একাকী থাকে। এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান কি? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
ইসলামে এ ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা নেই। ভদ্রভাবে, সুন্দরভাবে এই প্রস্তাব মেয়ের অভিভাবককে করা যাবে এবং আকারে ইঙ্গিতে মেয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠানো যেতে পারে। তবে সেটি যেন প্রেম নিবেদন না হয় এবং পর্দাহীনতা সংঘটিত না হয়।
উল্লেখ্য, সামাজিক শিষ্টাচার বজায় রেখে শরীয়তের বিধানগুলো পালন করতে হবে। যেন কেউ অজ্ঞতাবশত শরীয়তের বিধান নিয়ে বিদ্রুপ না করে।
কুরআনুল কারীমের বর্ননা দেখুন -
وَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ فِیۡمَا عَرَّضۡتُمۡ بِہٖ مِنۡ خِطۡبَۃِ النِّسَآءِ اَوۡ اَکۡنَنۡتُمۡ فِیۡۤ اَنۡفُسِکُمۡ ؕ عَلِمَ اللّٰہُ اَنَّکُمۡ سَتَذۡکُرُوۡنَہُنَّ وَلٰکِنۡ لَّا تُوَاعِدُوۡہُنَّ سِرًّا اِلَّاۤ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا ۬ؕ وَلَا تَعۡزِمُوۡا عُقۡدَۃَ النِّکَاحِ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡکِتٰبُ اَجَلَہٗ ؕ وَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا فِیۡۤ اَنۡفُسِکُمۡ فَاحۡذَرُوۡہُ ۚ وَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ حَلِیۡمٌ ٪
স্ত্রীলোকদের নিকট তোমরা ইংগিতে বিবাহ প্রস্তাব করলে বা তোমাদের অন্তরে গোপন রাখলে তোমাদের কোন পাপ নেই। আল্লাহ্ জানেন যে, তোমরা তাদের সম্বন্ধে অবশ্যই আলোচনা করবে; কিন্তু বিধিমত কথাবার্তা ব্যতীত গোপনে তাদের নিকট কোন অঙ্গীকার কর না; নির্দিষ্ট কাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহকার্য সম্পন্ন করার সংকল্প কর না। আর জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের মনোভাব জানেন। সুতরাং তাঁকে ভয় কর ও জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, পরম সহনশীল।—আল বাকারা - ২৩৫
সাহাবায়ে কেরামের সমাজে ইঙ্গিতে ও সরাসরি বিবাহের প্রস্তাব দেয়ার একটি নিদর্শন দেখুন।
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَا حَدَّثَنَا وَكِيعٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي الْجَهْمِ بْنِ صُخَيْرٍ الْعَدَوِيِّ قَالَ سَمِعْتُ فَاطِمَةَ بِنْتَ قَيْسٍ تَقُولُ قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا حَلَلْتِ فَآذِنِينِي فَآذَنَتْهُ فَخَطَبَهَا مُعَاوِيَةُ وَأَبُو الْجَهْمِ بْنُ صُخَيْرٍ وَأُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَّا مُعَاوِيَةُ فَرَجُلٌ تَرِبٌ لَا مَالَ لَهُ وَأَمَّا أَبُو الْجَهْمِ فَرَجُلٌ ضَرَّابٌ لِلنِّسَاءِ وَلَكِنْ أُسَامَةُ فَقَالَتْ بِيَدِهَا هَكَذَا أُسَامَةُ أُسَامَةُ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم طَاعَةُ اللهِ وَطَاعَةُ رَسُولِهِ خَيْرٌ لَكِ قَالَتْ فَتَزَوَّجْتُهُ فَاغْتَبَطْتُ بِهِ
ফাতিমাহ বিনতু কায়স রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেন, "তোমার ইদ্দত পূর্ণ হলে আমাকে জানাবে। " ইদ্দত শেষ হলে আমি তাঁকে অবহিত করলাম। এরপর মুআবিয়া, আবুল জাহম বিন সুখায়র ও উসামাহ বিন যায়দ (রাঃ) তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তাকে) বলেনঃ " মুআবিয়া গরীব লোক, তার কোন সম্পদ নেই। আর আবুল জাহম স্ত্রীদের অধিক মারধর করে। তবে উসামাহ। ফাতিমাহ (রাঃ) দু'বার হাত দিয়ে এভাবে ইশারা করে বলেন, উসামাহ, উসামাহ। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেনঃ "আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যই তোমার জন্যে কল্যাণকর। "ফাতিমাহ (রাঃ) বলেন, আমি তাকে বিবাহ করলাম এবং তার নেক আমল আমার জন্যে ঈর্ষণীয় ছিলে। "
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৮৬৯
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন