প্রশ্নঃ ৪০১৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, তিরমিজীর (ইফাঃ) ৩১০৯ নং হাদীসে বলা হয়েছেঃ আরশ সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহ তায়ালা ছিলেন তার নূরের মধ্যে তার উপরেও বায়ূ ছিল না এর নিচেও বায়ূ ছিল না।
ইবনে মাজাহর ১৮২ নং হাদীসে বলা হয়েছেঃ আরশ সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহ তায়ালা মেঘমালার মধ্যে, যার নিচেও বায়ু ছিল না এবং উপরেও বায়ু পানি ছিল না। অতঃপর পানির উপর তিনি তাঁর আরশ ।
এই দুইটা হাদিসের ব্যাখ্যা জানতে চাই
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তাআলার যাত তথা সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন। এছাড়া আল্লাহ তাআলার সত্তা নিয়ে খুব গভীরে আলোচনা করা আমাদের বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই। এতে কোন সওয়াব নেই। কুরআন ও হাদীসে এমন নির্দেশ আছে বলে আমাদের জানা নেই।
তাই আমাদের জন্য আবশ্যক হলো সহীহ আকীদা পোষণ করা এবং আল্লাহ তাআলার হুকুম মান্য করা।
আল্লাহ তাআলার সত্তা প্রসঙ্গে বর্ণিত হাদীসগুলো বুঝে আসলে আলহামদুলিল্লাহ। বুঝে না আসলে এ কথা বলা যে, আমরা এগুলোর উপর ঈমান এনেছি।
কুরআনের ২১টি আয়াতে আরশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে সহীহ হাদীসেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরশের বিভিন্ন বর্ণনা দিয়েছেন। সে সমস্ত হাদীস মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌছে গেছে।
মূলতঃ আরশ হলো আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি। সেটা প্রকাণ্ড ও সর্ববৃহৎ সৃষ্টি। আরশের সামনে কুরসী একটি রিং এর মতো, যেমনিভাবে আসমান ও যমীন কুরসীর সামনে রিং এর মতো। আরশের গঠন গম্বুজের মত। যা সমস্ত সৃষ্টি জগতের উপরে রয়েছে। এমনকি জান্নাতুল ফেরদাউসও আরশের নীচে অবস্থিত। আরশের কয়েকটি পা রয়েছে। মূসা আলাইহিস সালাম হাশরের মাঠে তার একটি ধরে থাকবেন।
এ আরশের বহনকারী কিছু ফিরিশতা রয়েছেন। তাদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআন ঘোষণা দিচ্ছেন যে, কিয়ামতের দিন তারা হবেন আট।
[সূরা আল-হাক্কাহঃ ১৭]
তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন মত রয়েছে যে, আরশের বহনকারী ফিরিশতাগণ কি আট জন, নাকি আট শ্রেণী, নাকি আট কাতার।
বিভিন্ন আয়াত ও হাদীসে বর্ণিত পানির উপর আরশ থাকার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা'আলার আরশ কোন কিছু সৃষ্টি করার আগে পানির উপর ছিল। এর দ্বারা পানি আগে সৃষ্টি করা বুঝায় না। তবে এখানে পানি দ্বারা দুনিয়ার কোন সমুদ্রের পানি বুঝানো হয়নি। কেননা, তা আরো অনেক পরে সৃষ্ট। বরং এখানে আল্লাহর সৃষ্ট সুনির্দিষ্ট কোন পানি উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. প্রণীত "আল- বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১ম খণ্ড"।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন