আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

রোজার কাফফারা কি? কত টাকা?

প্রশ্নঃ ৩০৯৮৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মুহতারাম আমার মা ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ শ্বাস কষ্ট জনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে গতকাল রিলিজ পান। আমার মা ২০২১ সালে করনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তারপর থেকে কিডনি জনিত রোগে ভুগছেন। গতকাল রাতে মা কে কিডনি বিশেষজ্ঞ একজন ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার বলেছেন যে আমার মা রোজা রাখতে পারবেন না যদি রাখেন তাহলে কিডনির সমস্যাটা বেড়ে যাবে। এমত অবস্থায় আমি সন্তান হিসেবে কি করণীয় আছে এবং কোনো কাফফারা আদায় করতে হবে কি না? কাফফারা আদায়ের নিয়মটা জানিয়ে দিলে অনেক মেহেরবানী হতো। জাযাকাল্লাহ মুহতারাম

৪ এপ্রিল, ২০২৩
FPVP+GCX

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সম্মানিত প্রশ্নকারী!
ডাক্তারের পরামর্শে যদি তিনি রোজা রাখতে অক্ষম হন তাহলে তার ক্ষেত্রে বিধান হলো, দেখতে হবে পরবর্তীতে তিনি সুস্থ হয়ে সেই রোজাগুলো কাজা করতে সক্ষম কি না। যদি মনে হয় যে, সুস্থ হয়ে তিনি ছুটে যাওয়া রোজাগুলো রাখতে পারবেন তাহলে পরবর্তীতে কাজা করবেন। কিন্তু (উত্তরোত্তর রোগবৃদ্ধি বা বার্ধক্যের কারণে) যদি মনে হয় পরবর্তীতে কাজা করাও তাঁর দ্বারা সম্ভব হবে না তাহলে ফিদিয়া দিতে পারবেন। তবে ফিদিয়া দেওয়ার পর আল্লাহর মেহেরবাণীতে যদি তিনি সুস্থ হয়ে যান এবং রোজা রাখার সক্ষমতা ফিরে পান তাহলে ফিদিয়া দেওয়া রোজাগুলোও কাজা করে নিতে হবে।

ফিদিয়ার পরিমাণ হলো, প্রতি রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতির। অর্থাৎ প্রতি রোজা বিপরিত হয়তো একজন মিসকিন (যাকাত গ্রহনে উপযুক্ত ব্যক্তি) -কে দুইবেলা স্বাভাবিক খাবার দিয়ে পেট ভরে খাওয়ানো । অথাবা তার সমমূল্য সদকা করা। এবছরের হিসেব মতে যার পরিমাণ ১১৫ টাকা।

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ * أَيَّاماً مَعْدُودَاتٍ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضاً أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْراً فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ وَأَنْ تَصُومُوا خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ

হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া তথা একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর সিয়াম পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে। (সূরা বাক্বারাহ ১৮৩-১৮৪)

ইমাম বুখারী (৪৫০৫) ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন,

لَيْسَتْ بِمَنْسُوخَةٍ هُوَ الشَّيْخُ الْكَبِيرُ وَالْمَرْأَةُ الْكَبِيرَةُ لا يَسْتَطِيعَانِ أَنْ يَصُومَا فَيُطْعِمَانِ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا

এ আয়াতটি মানসুখ (রহিত) নয়,বরং আয়াতটি অতি বৃদ্ধ নর ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য- যারা রোযা পালনে অক্ষম। তারা প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন