আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

যোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত মুয়াক্কাদা পড়ার সময় দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক করে তাশাহুদ পড়া

প্রশ্নঃ ২৪১৫১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, যোহরের আগের চার রাকাত সুন্নত নামাজ এক তাশাহুেদ পড়া যাবে কি? আমি বর্তমানে কুয়েতে আছি। কুয়েতের একজন ইমাম বলেছেন ২ তাশাহুদ পরাটা ঠিক নয়,এক তাশাহুদে পড়তে হবে। অথবা ২+২ করে পড়তে বলেছেন। কোনটি সঠিক একটু বিস্তারিত জানালে খুব উপকৃত হবো। বিশেষ করে এক তাশাহুদ না তুই তাশাহুদ।

১ নভেম্বর, ২০২২
F২X৩+WVR

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


যোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামাজ দুই বৈঠকে তথা দুই তাশাহহুদে পড়া জরুরী।
অবশ্য ইমাম শাফিয়ী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, দু'রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে আবার দু'রাকাত পড়বে। অর্থাৎ দুই সালামে চার রাকাত পড়বে।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ حَبِيبَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . قَالَ أَبُو بَكْرٍ الْعَطَّارُ قَالَ عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ سُفْيَانَ قَالَ كُنَّا نَعْرِفُ فَضْلَ حَدِيثِ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ عَلَى حَدِيثِ الْحَارِثِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمْ يَخْتَارُونَ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَإِسْحَاقَ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ صَلاَةُ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ مَثْنَى مَثْنَى يَرَوْنَ الْفَصْلَ بَيْنَ كُلِّ رَكْعَتَيْنِ . وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ .

৪২৪. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ..... আলী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ রাসূল (ﷺ) যোহরের পূর্বে চার রাকআত এবং এরপর দু’রাকআত সুন্নাত নামায আদায় করতেন।
—জামে' তিরমিযী, ইফা নং ৪২৪

ইমাম তিরমিজী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটি উল্লেখের পর আহলে ইলম ওলামা ও সাহাবাদের মতামত উল্লেখ করেছেন।
এখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ইমাম সুফিয়ান সাউরী এবং কুফাবাসি ওলামায়ে কেরাম জোহরের পূর্বে চার রাকাত পড়ার মতামতটি নিয়েছেন।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ও ইমাম শাফি রহিমাহুমাল্লাহ চার রাকাত পড়ার মাঝে সালাম ফেরানোর কথা বলেছেন। অর্থাৎ দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়ার কথা বলেছেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের প্রতি দুরাকাত পড়ে বসে তাশাহহুদ পড়তেন। এই বিষয়ে নিম্নোক্ত হাদিসটি দেখুন।
এই হাদিস দ্বারা প্রমাণ হয়, যোহরের পূর্বে চার রাকাত নামাজ পড়লে মাঝখানে বৈঠক করে তাশাহহুদ পড়তে হবে।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ، - يَعْنِي الأَحْمَرَ - عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - قَالَ أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْمُعَلِّمُ، عَنْ بُدَيْلِ بْنِ مَيْسَرَةَ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَفْتِحُ الصَّلاَةَ بِالتَّكْبِيرِ وَالْقِرَاءَةَ بِـ ( الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) وَكَانَ إِذَا رَكَعَ لَمْ يُشْخِصْ رَأْسَهُ وَلَمْ يُصَوِّبْهُ وَلِكَنْ بَيْنَ ذَلِكَ وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ قَائِمًا وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ جَالِسًا وَكَانَ يَقُولُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ وَيَنْهَى أَنْ يَفْتَرِشَ الرَّجُلُ ذِرَاعَيْهِ افْتِرَاشَ السَّبُعِ وَكَانَ يَخْتِمُ الصَّلاَةَ بِالتَّسْلِيمِ . وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ نُمَيْرٍ عَنْ أَبِي خَالِدٍ وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عَقِبِ الشَّيْطَانِ .

৯৯৩। মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে নুমাইর এবং ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) শব্দ ইসহাকের ... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকবীর দ্বারা নামায শুরু করতেন এবং الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ দ্বারা কিরা’আত আরম্ভ করতেন। যখন রুকু করতেন তখন তাঁর মাথা উঠিয়েও রাখতেন না, ঝুঁকিয়েও রাখতেন না; বরং মাঝামাঝি রাখতেন। আর যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সিজদায় যেতেন না। আর যখন সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা হয়ে না বসে (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতেন না। এবং প্রতি দু-রাক’আতে আত-তাহিয়্যাতু পড়তেন বাম পা বিছিয়ে রাখতেন আর ডান পা খাড়া করে রাখতেন। শয়তানের মত পাছার উপর বসা থেকে নিষেধ করতেন। পুরুষকে তার দু’বাহু হিংস্র জন্তুর মত বিছিয়ে রাখতে নিষেধ করেছেন। তিনি সালামের দ্বারা নামায সমাপ্ত করতেন।

আর খালিদের সূত্রে ইবনে নুমাইর (রাহঃ) থেকে عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ এর স্থলে عَنْ عَقِبِ الشَّيْطَانِ উল্লেখ রয়েছে।
—সহীহ মুসলিম, ইফা নং ৯৯৩

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন