আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

১৬- হজ্ব - উমরার অধ্যায়

হাদীস নং: ২৭১৩
আন্তর্জাতিক নং: ১১৯২-১
৬. ইহরামের পূর্বে দেহে সুগন্ধি ব্যবহার করা মুস্তাহাব এবং তাতে মিশক ব্যবহার করা মুস্তাহাব হওয়া। আর সুগন্ধির ঝিলিক অবশিষ্ট থাকা দূষণীয় বা হাওয়া
২৭১৩। সাঈদ ইবনে মনসুর ও আবু কামিল (রাহঃ) ......... ইবরাহীম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মুনতাশির (রাহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি (মুহাম্মাদ) বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) কে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম যে সুগন্ধি মেখেছে, অতঃপর তার ভোর হয়েছে মুহরিম অবস্থায়। তিনি বললেন, আমি এটা পছন্দ করিনা যে, আমি ইহরাম অবস্থায় থাকব আর আমার শরীর থেকে সুবাস ছড়াবে। এই কাজ (সুগন্ধি লাগানো) অপেক্ষা আমি আমার দেহে আলকাতরা মাখা অধিক পছন্দনীয় মনে করি।

অতঃপর আমি (মুহাম্মাদ) আয়িশা (রাযিঃ) এর নিকট উপস্থিত হলাম এবং তাঁকে অবহিত করলাম যে, ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, ″আমি এটা পছন্দ করিনা যে, আমি ইহরাম অবস্থায় থাকব আর আমার শরীর থেকে সুবাস ছড়াবে। এই কাজ (সুগন্ধি লাগানো) অপেক্ষা আমি আমার দেহে আলকাতরা লাগানো অধিক শ্রেয় মনে করি।″ তখন আয়িশা (রাযিঃ) বললেন, আমি নিজে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে তার ইহরাম বাধার সময় সুগন্ধি মেখে দিয়েছি। এরপর তিনি তার স্ত্রীদের নিকট চক্কর দিলেন এরপর ভোরবেলা ইহরাম বাঁধলেন।*



* ইহরাম বাঁধার পূর্বে সুগন্ধি মাখা মুস্তাহাব এবং ইহরাম বাঁধার পর তা অবশিষ্ট থাকায় কোন দোষ নেই। কিন্তু ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অধিকাংশ সাহাবী, তাবিঈ, মুহাদ্দিস ও ফিকহবিদের এই মত। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাযিঃ), ইবনে আব্বাস (রাযিঃ), ইবনে যুবায়র (রাযিঃ), মু'আবিয়া (রাযিঃ), আয়েশা (রাযিঃ), উম্মে হাবীবা (রাযিঃ) ইমাম আৰু হানীফা ঈমাম শাফিঈ, আহমদ, সুফিয়ান সাওরী, আবু ইউসুফ, আবু দাউদ (রাহঃ) প্রমুখ। ইমাম যুহরী, মালিক, মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আশ্-শায়বাণী এবং একদল সাহাবী ও তাবিঈর মতে ইহরাম বাঁধার পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার জায়েয নয়। অনুরূপভাবে জামরাতুল আকাবায় পাথর নিক্ষেপ ও মাথা কামানোর পরে তাওয়াফে ইফাযার পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার জায়েয, কিন্তু ইমাম মালিকের মতে তা জায়েয নয়। যেসব হাদীসে ইহরাম বাঁধার পূর্বেই সুগন্ধির চিহ্ন দূর করার নির্দেশ রয়েছে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ বলেন, তা সুগন্ধি ছিল না; বরং তা ছিল জাফরানের রং- তাই তা মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত নির্দেশটি ৮ম হিজরীতে দেওয়া হয় এবং অনুমতি সম্পর্কিত নির্দেশটি ১০ম হিজরীতে বিদায় হজ্জের সময়কার। অতঃপর পূর্বোক্ত নির্দেশ শেষোক্ত নির্দেশ দ্বারা রহিত হয়ে গেছে। (আন-নববী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৭৩, ৩৭৮; ফাতহুল মুলহিম, ৩য় খণ্ড, পৃ ২০৮)
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَأَبُو كَامِلٍ جَمِيعًا عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، - قَالَ سَعِيدٌ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، - عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ - رضى الله عنهما - عَنِ الرَّجُلِ، يَتَطَيَّبُ ثُمَّ يُصْبِحُ مُحْرِمًا فَقَالَ مَا أُحِبُّ أَنْ أُصْبِحَ مُحْرِمًا أَنْضَخُ طِيبًا لأَنْ أَطَّلِيَ بِقَطِرَانٍ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أَفْعَلَ ذَلِكَ . فَدَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ - رضى الله عنها - فَأَخْبَرْتُهَا أَنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ مَا أُحِبُّ أَنْ أُصْبِحَ مُحْرِمًا أَنْضَخُ طِيبًا لأَنْ أَطَّلِيَ بِقَطِرَانٍ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أَفْعَلَ ذَلِكَ . فَقَالَتْ عَائِشَةُ أَنَا طَيَّبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ إِحْرَامِهِ ثُمَّ طَافَ فِي نِسَائِهِ ثُمَّ أَصْبَحَ مُحْرِمًا .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ২৭১৩ | মুসলিম বাংলা