আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

১৩- যাকাতের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৩৩৮
আন্তর্জাতিক নং: ১০৬৬-৬
৩৬. খারিজীদের হত্যা করতে উৎসাহ দান
২৩৩৮। আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ......... যায়দ ইবনে ওয়াহব জুহানী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ঐ সৈন্যদলের মধ্যে ছিলেন, যারা আলী (রাযিঃ) এর সাথে খারেজী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সফর করেছিলেন। আলী (রাযিঃ) বললেন, হে লোক সকল! আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমার উম্মত থেকে এমন একদল লোক বের হবে যারা কুরআন পাঠ করবে। কিন্তু তোমাদের কিরা’আত তাদের কিরা’আতের সামনে কিছুই নয়। তোমাদের নামায তাদের নামাযের তুলনায় কিছুই নয় এবং তোমাদের রোযা তাদের রোযার তুলনায় কিছুই নয়। তারা কুরআন পাঠ করবে আর ভাববে তা তাদের পক্ষে। প্রকৃতপক্ষে তা তাদের বিপক্ষে। তাদের নামায তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে যেমন তীর তার লক্ষ্যস্থল ভেদ করে বের হয়ে যায়, যে সেনাদল কর্তৃক তারা আক্রান্ত হবে তাদের সম্পর্কে নবী (ﷺ) এর মুখে যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে তা যদি সৈন্যগণ জানত তবে অবশ্যই তারা আমল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকত।

তাদের নিদর্শন এই যে, তাদের মাঝে এমন এক ব্যক্তি হবে যার বাহুর সঙ্গে হাত থাকবে না। স্তনের বোটার ন্যায় এর উপরে থাকবে সাদা কতগুলো পশম। [আলী (রাযিঃ)] বলেন, তোমরা মুআবিয়া (রাযিঃ) ও সিরিয়াবাসীদের দিকে আগ্রসর হচ্ছে এবং তাদেরকে এড়িয়ে যাচ্ছ অথচ তারা তোমাদের পেছনে তোমাদের সন্তান-সন্ততিদেরকে কষ্ট দিবে এবং তোমাদের ধন সম্পদ নষ্ট করবে। আল্লাহর শপথ! আমি আশঙ্কা করি তারাই ঐ কওম যারা অন্যায়ভাবে রক্তপাত ঘটাবে এবং মানুষের পশুগুলো লুণ্ঠন করবে। অতএব তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য চল।

সালামা ইবনে কুহায়ল (রাযিঃ) বলেন, এরপর যায়দ ইবনে ওয়াহব (রাহঃ) আমার নিকট সৈন্যদের বিভিন্ন মনযিলে অবতরণের কথা বর্ণনা করলেন। তারপর বললেন, যেতে যেতে আমরা একটি পুল অতিক্রম করলাম। এরপর আমরা তাদের সাক্ষাত পেলাম। সে দিন খারেজীদের সেনাপতি ছিল, আব্দুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব রাসিবী। সে তাদেরকে নির্দেশ দিল, তোমরা বর্শা রেখে দাও এবং তরবারী খাপ মুক্ত কর। আমি আশঙ্কা করছি, তারা তোমাদের প্রতি হামলা করবে যেমন হারুরার দিন হামলা করেছিল। এরপর তারা ফিরে গিয়ে নিজ বর্শা খুলে রেখে দিল এবং তরবারী কোষমুক্ত করল। মুসলমানগণ বর্শা দ্বারা তাদের প্রতি আক্রমণ করলে তারা নিতে হয়ে একের পর এক ধরাশায়ী হতে লাগল। সে দিন মুসলমানদের দুই ব্যক্তি কেবল শহীদ হয়েছিলেন।

তখন আলী (রাযিঃ) বললেন, তোমরা এদের মধ্যে খাটো হাত বিশিষ্ট লোকটিকে তালাশ কর। তারা সকলেই তাকে তালাশ করলেন কিন্তু কোথাও পেলেন না। এরপর আলী (রাযিঃ) স্বয়ং দাঁড়ালেন এবং একের পর এক পতিত লাশগুলোর কাছে গেলেন। এরপর তিনি লাশগুলো সরাবার নির্দেশ দিলেন। এ সময় তারা মাটির সাথে লেগে থাকা অবস্থায় খাটো হাত বিশিষ্ট লোকটিকে পেয়ে গেলেন।

তখন আলী (রাযিঃ) “আল্লাহু আকবার” ধ্বনি দিলেন এবং বললেন, আল্লাহ সত্য বলেছেন এবং তাঁর রাসুল (ﷺ) যথাযথভাবে পৌছিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আবীদা সালমানী (রাযিঃ) তার নিকট দাঁড়িয়ে বললেন, হে আমীযুল মু'মিনীন! তিনিই আল্লাহ , যিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে আপনি এ হাদীস শুনেছো কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, ঐ আল্লাহর শপথ! যিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই। এভাবে আবীদা তাকে তিনবার কসম করতে বললেন এবং তিনি তার কথায় কসম করলেন।
باب التحريض على قتل الخوارج
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ هَمَّامٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ، حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ الْجُهَنِيُّ، أَنَّهُ كَانَ فِي الْجَيْشِ الَّذِينَ كَانُوا مَعَ عَلِيٍّ - رضى الله عنه - الَّذِينَ سَارُوا إِلَى الْخَوَارِجِ فَقَالَ عَلِيٌّ رضى الله عنه أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " يَخْرُجُ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِي يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَيْسَ قِرَاءَتُكُمْ إِلَى قِرَاءَتِهِمْ بِشَىْءٍ وَلاَ صَلاَتُكُمْ إِلَى صَلاَتِهِمْ بِشَىْءٍ وَلاَ صِيَامُكُمْ إِلَى صِيَامِهِمْ بِشَىْءٍ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ يَحْسِبُونَ أَنَّهُ لَهُمْ وَهُوَ عَلَيْهِمْ لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ " . لَوْ يَعْلَمُ الْجَيْشُ الَّذِينَ يُصِيبُونَهُمْ مَا قُضِيَ لَهُمْ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِمْ صلى الله عليه وسلم لاَتَّكَلُوا عَنِ الْعَمَلِ وَآيَةُ ذَلِكَ أَنَّ فِيهِمْ رَجُلاً لَهُ عَضُدٌ وَلَيْسَ لَهُ ذِرَاعٌ عَلَى رَأْسِ عَضُدِهِ مِثْلُ حَلَمَةِ الثَّدْىِ عَلَيْهِ شَعَرَاتٌ بِيضٌ فَتَذْهَبُونَ إِلَى مُعَاوِيَةَ وَأَهْلِ الشَّامِ وَتَتْرُكُونَ هَؤُلاَءِ يَخْلُفُونَكُمْ فِي ذَرَارِيِّكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَاللَّهِ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَكُونُوا هَؤُلاَءِ الْقَوْمَ فَإِنَّهُمْ قَدْ سَفَكُوا الدَّمَ الْحَرَامَ وَأَغَارُوا فِي سَرْحِ النَّاسِ فَسِيرُوا عَلَى اسْمِ اللَّهِ . قَالَ سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ فَنَزَّلَنِي زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ مَنْزِلاً حَتَّى قَالَ مَرَرْنَا عَلَى قَنْطَرَةٍ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا وَعَلَى الْخَوَارِجِ يَوْمَئِذٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ الرَّاسِبِيُّ فَقَالَ لَهُمْ أَلْقُوا الرِّمَاحَ وَسُلُّوا سُيُوفَكُمْ مِنْ جُفُونِهَا فَإِنِّي أَخَافُ أَنْ يُنَاشِدُوكُمْ كَمَا نَاشَدُوكُمْ يَوْمَ حَرُورَاءَ . فَرَجَعُوا فَوَحَّشُوا بِرِمَاحِهِمْ وَسَلُّوا السُّيُوفَ وَشَجَرَهُمُ النَّاسُ بِرِمَاحِهِمْ - قَالَ - وَقُتِلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَمَا أُصِيبَ مِنَ النَّاسِ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ رَجُلاَنِ فَقَالَ عَلِيٌّ رضى الله عنه الْتَمِسُوا فِيهِمُ الْمُخْدَجَ . فَالْتَمَسُوهُ فَلَمْ يَجِدُوهُ فَقَامَ عَلِيٌّ - رضى الله عنه - بِنَفْسِهِ حَتَّى أَتَى نَاسًا قَدْ قُتِلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ قَالَ أَخِّرُوهُمْ . فَوَجَدُوهُ مِمَّا يَلِي الأَرْضَ فَكَبَّرَ ثُمَّ قَالَ صَدَقَ اللَّهُ وَبَلَّغَ رَسُولُهُ - قَالَ - فَقَامَ إِلَيْهِ عَبِيدَةُ السَّلْمَانِيُّ فَقَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ لَسَمِعْتَ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِي وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ . حَتَّى اسْتَحْلَفَهُ ثَلاَثًا وَهُوَ يَحْلِفُ لَهُ .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ২৩৩৮ | মুসলিম বাংলা