আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

১৩- যাকাতের অধ্যায়

হাদীস নং: ২১৬৪
আন্তর্জাতিক নং: ৯৮৭-৩
২. যাকাত অনাদায়কারীর অপরাধ
২১৬৪। মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল মালিক উমাবী (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, সোনা-রূপা সঞ্চয়কারী ব্যক্তি যদি এর যাকাত আদায় না করে তবে জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে। অতঃপর এগুলোকে পাতের ন্যায় বানিয়ে এর দ্বারা তার পার্শ্ব এবং ললাটে দাগ দেয়া হবে। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করা পর্যন্ত, এমন দিনে যে দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। এরপর দেখানো হবে তাকে তার পথ জান্নাতের দিকে অথবা জাহান্নামের দিকে।

কোন উটের মালিক যদি এর যাকাত আদায় না করে তবে তাকে এক প্রশস্ত সমতল প্রান্তরে অধোমুখী করে শায়িত করা হবে। এরপর সে উট পূর্বের চাইতেও অধিক মোটাতাজা অবস্থায় মালিকের নিকট উপস্থিত হবে এবং তাকে পদদলিত করতে থাকবে। এদের শেষটি চলে গেলে আবার প্রথমটি ফিরে আসবে। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করা পর্যন্ত এমন এক দিনে, যে দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এরপর দেখান হবে তাকে তার পথ জান্নাতের দিকে অথবা জাহান্নামের দিকে।

বকরীর কোন মালিক যদি এর যাকাত আদায় না করে তবে তাকে প্রশস্ত সমতল প্রান্তরে শায়িত করা হবে। এরপর সে বকরী পূর্বের চেয়েও অধিক মোটাতাজা অবস্থায় মালিকের নিকট উপস্থিত হবে এবং স্বীয় খুর দ্বারা তাকে দলিত ও শিং দ্বারা আঘাত করতে থাকবে। এদের মধ্যে সেদিন কোনটাই শিংবিহীন এবং উল্টো শিং বিশিষ্ট থাকবে না। যখন এদের শেষটি চলে যাবে তখন আবার প্রথমটি ফিরে আসবে। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করা পর্যন্ত এমন দিনে, যে দিনের পরিমাণ হবে তোমাদের হিসাব অনুসারে পঞ্চাশ হাজার বছর। এরপর তাকে দেখান হবে তার রাস্তা জান্নাতের দিকে অথবা জাহান্নামের দিকে।

রাবী সুহাঈল (রাযিঃ) বলেন, তিনি গরুর কথা উল্লেখ করছেন কি না, আমি জানি না। এরপর সাহাবাগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ঘোড়ার হুকুম কি? তিনি বললেন, ঘোড়ার কপালে আছে কল্যাণ অথবা বললেন ঘোড়া তার কপালের সাথে আব্দ্ধ করা হয়েছে কিয়ামত পর্যন্ত। [বর্ণনাকারী সুহাঈল (রাযিঃ) বলেন, এ সন্দেহ আমার]

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ঘোড়া তিন প্রকার। এক ব্যক্তির জন্য তা পুণ্য, এক ব্যক্তির জন্য আবরণ স্বরূপ এক ব্যক্তির জন্য হবে বোঝা স্বরূপ। যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য পূণ্য স্বরূপ হবে, তা সে ব্যক্তি, যে তার ঘোড়াকে আল্লাহর রাস্তায় নিয়োজিত রাখে এবং সদা তৈরী রাখে তাকে তাঁরই জন্য। এ ঘোড়া যা কিছু গলধ করণ করে এর প্রতিটির বিনিময়ে তাকে দেওয়া হবে পুণ্য। যদি সে তাকে কোন সবুজ চারণ ভুমিতে চরায় তবে তার যা কিছু আহার করে তার প্রতিটি তৃণের বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য সাওয়াব লিখবেন।। যদি সে ঘোড়াকে কোন নদী হতে পানি পান করায়, তবে যতটা পান করল তার প্রতিটি ফোটার বিনিময়ে সে সাওয়াব পাবে। এমনকি অবশেষে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (সাওয়াবের উল্লেখ করলেন এর পেশাব এবং গোবরের ব্যাপারে)। যদি তা এক বা দুটি টিলা অতিক্রম করে, তবে এর প্রতিটি কদমের বিনিময়ে রয়েছে মালিকের জন্য পূণ্য।

যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য আবরণ স্বরূপ তা সেই ব্যক্তি, যে তার ঘোড়াকে আদর-যত্ন সহকারে সুন্দরভাবে প্রতিপালন করে ’এবং তার ভাল অবস্থায় ও মন্দ অবস্থায় তার পেট ও পিঠের হকের কথা কখনো ভুলেনা।

আর ঘোড়া বোঝা স্বরূপ সে ব্যক্তির জন্য, যে ঘোড়া প্রতিপালন করে মানুষের সাথে অহংকার ও গরিমা প্রকাশ এবং লোক দেখানোর জন্য, এ ঘোড়াই তার উপর বোঝা স্বরূপ হবে।

তারা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! গাধা সম্পর্কে হুকুম কি? তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলার ব্যাপক অর্থবোধক আয়াতটি ব্যতীত এ সম্পর্কে আমার প্রতি কিছু নাযিল করেননিঃ فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ * وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ ″কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখবে″ (সূরা যিলযালঃ ৭-৮)
باب إِثْمِ مَانِعِ الزَّكَاةِ
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ الْمُخْتَارِ، حَدَّثَنَا سُهَيْلُ، بْنُ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنْ صَاحِبِ كَنْزٍ لاَ يُؤَدِّي زَكَاتَهُ إِلاَّ أُحْمِيَ عَلَيْهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَيُجْعَلُ صَفَائِحَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ وَجَبِينُهُ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ ثُمَّ يُرَى سَبِيلَهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ وَمَا مِنْ صَاحِبِ إِبِلٍ لاَ يُؤَدِّي زَكَاتَهَا إِلاَّ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ كَأَوْفَرِ مَا كَانَتْ تَسْتَنُّ عَلَيْهِ كُلَّمَا مَضَى عَلَيْهِ أُخْرَاهَا رُدَّتْ عَلَيْهِ أُولاَهَا حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ ثُمَّ يُرَى سَبِيلَهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ وَمَا مِنْ صَاحِبِ غَنَمٍ لاَ يُؤَدِّي زَكَاتَهَا إِلاَّ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ كَأَوْفَرِ مَا كَانَتْ فَتَطَؤُهُ بِأَظْلاَفِهَا وَتَنْطِحُهُ بِقُرُونِهَا لَيْسَ فِيهَا عَقْصَاءُ وَلاَ جَلْحَاءُ كُلَّمَا مَضَى عَلَيْهِ أُخْرَاهَا رُدَّتْ عَلَيْهِ أُولاَهَا حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ ثُمَّ يُرَى سَبِيلَهُ إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ " . قَالَ سُهَيْلٌ فَلاَ أَدْرِي أَذَكَرَ الْبَقَرَ أَمْ لاَ . قَالُوا فَالْخَيْلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " الْخَيْلُ فِي نَوَاصِيهَا - أَوْ قَالَ - الْخَيْلُ مَعْقُودٌ فِي نَوَاصِيهَا - قَالَ سُهَيْلٌ أَنَا أَشُكُّ - الْخَيْرُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ الْخَيْلُ ثَلاَثَةٌ فَهْىَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ وَلِرَجُلٍ وِزْرٌ فَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ فَالرَّجُلُ يَتَّخِذُهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَيُعِدُّهَا لَهُ فَلاَ تُغَيِّبُ شَيْئًا فِي بُطُونِهَا إِلاَّ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ أَجْرًا وَلَوْ رَعَاهَا فِي مَرْجٍ مَا أَكَلَتْ مِنْ شَىْءٍ إِلاَّ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِهَا أَجْرًا وَلَوْ سَقَاهَا مِنْ نَهْرٍ كَانَ لَهُ بِكُلِّ قَطْرَةٍ تُغَيِّبُهَا فِي بُطُونِهَا أَجْرٌ - حَتَّى ذَكَرَ الأَجْرَ فِي أَبْوَالِهَا وَأَرْوَاثِهَا - وَلَوِ اسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ كُتِبَ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ تَخْطُوهَا أَجْرٌ وَأَمَّا الَّذِي هِيَ لَهُ سِتْرٌ فَالرَّجُلُ يَتَّخِذُهَا تَكَرُّمًا وَتَجَمُّلاً وَلاَ يَنْسَى حَقَّ ظُهُورِهَا وَبُطُونِهَا فِي عُسْرِهَا وَيُسْرِهَا وَأَمَّا الَّذِي عَلَيْهِ وِزْرٌ فَالَّذِي يَتَّخِذُهَا أَشَرًا وَبَطَرًا وَبَذَخًا وَرِيَاءَ النَّاسِ فَذَاكَ الَّذِي هِيَ عَلَيْهِ وِزْرٌ " . قَالُوا فَالْحُمُرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " مَا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَىَّ فِيهَا شَيْئًا إِلاَّ هَذِهِ الآيَةَ الْجَامِعَةَ الْفَاذَّةَ ( فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ * وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ) " .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)