আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
১২- জানাযা-কাফন-দাফন সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ২১০৯
আন্তর্জাতিক নং: ৯৬৪-৩
২১. জানাযার নামাযে ইমাম মায়্যিতের কোন বরাবর দাঁড়াবে
২১০৯। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও উকবা ইবনে মুকরাম আম্মি (রাহঃ) ......... সামুরা ইবনে জুনদুব (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর যুগে যুবক ছিলাম। আমি তাঁর নিকট থেকে অনেক কিছু মুখস্ত করে নিতাম। এখানে আমার চেয়ে অধিক বয়সী সাহাবী থাকার কারণে আমি কথা বলা থেকে বিরত থাকি। নিফাস অবস্থায় ইন্তিকাল করেছে এমন এক মহিলার জানাযার নামায আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পেছনে দাঁড়িয়ে আদায় করেছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নামাযে সিনা বরাবর না দাঁড়িয়ে তার মাঝামাঝি স্থানে দাঁড়িয়েছিলেন। ইবনুল মুসান্নার রিওয়ায়াতে আছে যে, রাবী বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে বুরায়দা (রাযিঃ) আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, ″তার জানাযার নামাযে তিনি তার মাঝামাঝি স্থানে দাড়িয়েছিলেন।″
باب أَيْنَ يَقُومُ الإِمَامُ مِنَ الْمَيِّتِ لِلصَّلاَةِ عَلَيْهِ
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَعُقْبَةُ بْنُ مُكْرَمٍ الْعَمِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ حُسَيْنٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، قَالَ قَالَ سَمُرَةُ بْنُ جُنْدُبٍ لَقَدْ كُنْتُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غُلاَمًا فَكُنْتُ أَحْفَظُ عَنْهُ فَمَا يَمْنَعُنِي مِنَ الْقَوْلِ إِلاَّ أَنَّ هَا هُنَا رِجَالاً هُمْ أَسَنُّ مِنِّي وَقَدْ صَلَّيْتُ وَرَاءَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى امْرَأَةٍ مَاتَتْ فِي نِفَاسِهَا فَقَامَ عَلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلاَةِ وَسَطَهَا . وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ قَالَ فَقَامَ عَلَيْهَا لِلصَّلاَةِ وَسَطَهَا .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হযরত সামুরা ইবন জুনদুব রাযি. একজন বিশিষ্ট আলেম সাহাবী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বহু কথা তাঁর মুখস্থ ছিল। তিনি তাঁর সাহচর্যে থেকে অনেক কিছুই শিখেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর বর্ণিত হাদীছের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কেন বেশি নয়, এ হাদীছে বর্ণিত তাঁর বক্তব্য দ্বারা সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তিনি এ বর্ণনায় স্বীকার করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্যে থেকে যা শুনতেন ও দেখতেন তা তাঁর মুখস্থ থাকত। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, তাহলে আপনি বর্ণনা কম করেন কেন? তিনি এর উত্তর দেন فما يمنعني من القول إلا أن هاهنا رجالا هم أسن مني (কাজেই আমার কথা বলায় এছাড়া আর কোনও প্রতিবন্ধক নেই যে, এখানে এমন অনেক লোক আছেন যারা আমার চেয়ে বেশি বয়স্ক)। অর্থাৎ তিনি যেহেতু অল্পবয়স্ক সাহাবী ছিলেন আর তিনি যেখানে অবস্থান করতেন সেখানে তাঁরচে' বয়োজ্যেষ্ঠ বহু সাহাবী বর্তমান ছিলেন, তাই তাঁদের সামনে হাদীছ বর্ণনা বা জ্ঞান প্রকাশ করাকে তিনি শিষ্টাচারের পরিপন্থী মনে করতেন।
এর দ্বারা বড়দের আদব ও সম্মান রক্ষার প্রতি তাঁর গভীর সতর্কতার পরিচয় পাওয়া যায়। বস্তুত বড়দের প্রতি আদব–ইহতিরাম হকপন্থী উলামায়ে কেরামের বৈশিষ্ট্য। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে বড়দের আদব–ইহতিরাম রক্ষার শিক্ষাদান করেছিলেন। তাঁর ওফাতের পরও তাঁরা সে শিক্ষা অনুসরণে যত্নবান থেকেছেন। তাঁদের পারস্পরিক আদব–ইহতিরামের বহু ঘটনা হাদীছ ও ইতিহাস গ্রন্থসমূহে বর্ণিত আছে। তাঁদের পক্ষ থেকে ব্যাপক চর্চার কারণে আদব–ইহতিরাম দীনী শিক্ষার পরিমণ্ডলে এক সাধারণ রেওয়াজে পরিণত হয়। এ পরিমণ্ডলের শত শত বছরের ইতিহাসে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত এ রেওয়াজটি বিশেষ দ্রষ্টব্যরূপে আপন অস্তিত্ব রক্ষা করে এসেছে। শিক্ষার্থীদের ছাপিয়ে লব্ধপ্রতিষ্ঠ উলামা পর্যন্ত প্রত্যেকেই তাঁরচে' বয়োজ্যেষ্ঠের আদব রক্ষাকে অবশ্যকর্তব্য জ্ঞান করেছে। বরং সমবয়স্ক ও সমপর্যায়ের উলামা মাশায়েখও পারস্পরিক ভক্তি–শ্রদ্ধার অনন্য দৃষ্টান্ত বজায় রাখতে সচেতন থেকেছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের উলামায়ে দেওবন্দের রয়েছে এক গৌরবজনক অবস্থান।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বড়দের সামনে জানাকথা প্রকাশেও সংযম অবলম্বন করা চাই। এটাও একপ্রকার আদব।
খ. জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে আদব–ইহতিরাম রক্ষা দীনী শিক্ষাধারার এক ঐতিহ্য।
এর দ্বারা বড়দের আদব ও সম্মান রক্ষার প্রতি তাঁর গভীর সতর্কতার পরিচয় পাওয়া যায়। বস্তুত বড়দের প্রতি আদব–ইহতিরাম হকপন্থী উলামায়ে কেরামের বৈশিষ্ট্য। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে বড়দের আদব–ইহতিরাম রক্ষার শিক্ষাদান করেছিলেন। তাঁর ওফাতের পরও তাঁরা সে শিক্ষা অনুসরণে যত্নবান থেকেছেন। তাঁদের পারস্পরিক আদব–ইহতিরামের বহু ঘটনা হাদীছ ও ইতিহাস গ্রন্থসমূহে বর্ণিত আছে। তাঁদের পক্ষ থেকে ব্যাপক চর্চার কারণে আদব–ইহতিরাম দীনী শিক্ষার পরিমণ্ডলে এক সাধারণ রেওয়াজে পরিণত হয়। এ পরিমণ্ডলের শত শত বছরের ইতিহাসে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত এ রেওয়াজটি বিশেষ দ্রষ্টব্যরূপে আপন অস্তিত্ব রক্ষা করে এসেছে। শিক্ষার্থীদের ছাপিয়ে লব্ধপ্রতিষ্ঠ উলামা পর্যন্ত প্রত্যেকেই তাঁরচে' বয়োজ্যেষ্ঠের আদব রক্ষাকে অবশ্যকর্তব্য জ্ঞান করেছে। বরং সমবয়স্ক ও সমপর্যায়ের উলামা মাশায়েখও পারস্পরিক ভক্তি–শ্রদ্ধার অনন্য দৃষ্টান্ত বজায় রাখতে সচেতন থেকেছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের উলামায়ে দেওবন্দের রয়েছে এক গৌরবজনক অবস্থান।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বড়দের সামনে জানাকথা প্রকাশেও সংযম অবলম্বন করা চাই। এটাও একপ্রকার আদব।
খ. জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে আদব–ইহতিরাম রক্ষা দীনী শিক্ষাধারার এক ঐতিহ্য।
রিয়াযুস সালিহীন,মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম
