আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
১২- জানাযা-কাফন-দাফন সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ২০৫০
আন্তর্জাতিক নং: ৯৪১-১
১১. মৃত ব্যক্তির কাফন প্রসঙ্গ
২০৫০। ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া, আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা ও আবু কুরায়ব (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে তিনটি সাদা সাহুলী সূতি কাপড় দিয়ে কাফন দেয়া হয়েছিল। কাপড়গুলোর মধ্যে কামিস ও পাগড়ী ছিল না। আর হুল্লা (দুটি চাঁদর) যা তাঁর কাফনের জন্য ক্রয় করা হয়েছিল এবং পরে তা বাদ দেয়া হয় এ সম্পর্কে লোকেরা বিভ্রান্তিতে পড়ে। আর তাকে কাফন দেয়া হয়েছিল সাদা সাহুলী তিন কাপড়ে।
আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর (রাযিঃ) সেটি নিয়ে গেলেন এবং বললেন, আমি এ পোশাককে সংরক্ষণ করে রাখব আমার কাফন দেয়ার জন্য। তারপর বললেন, যদি আল্লাহ তাআলা তার নবীর জন্য এ কাপড় পছন্দ করতেন তবে অবশ্যই এ দ্বারা তাঁর কাফন দেয়া হত। তাই তিনি তা বিক্রি করে এর মূল্য সাদ্কা করে দিলেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর (রাযিঃ) সেটি নিয়ে গেলেন এবং বললেন, আমি এ পোশাককে সংরক্ষণ করে রাখব আমার কাফন দেয়ার জন্য। তারপর বললেন, যদি আল্লাহ তাআলা তার নবীর জন্য এ কাপড় পছন্দ করতেন তবে অবশ্যই এ দ্বারা তাঁর কাফন দেয়া হত। তাই তিনি তা বিক্রি করে এর মূল্য সাদ্কা করে দিলেন।
باب فِي كَفَنِ الْمَيِّتِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَأَبُو كُرَيْبٍ - وَاللَّفْظُ لِيَحْيَى - قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، - عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُفِّنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ سَحُولِيَّةٍ مِنْ كُرْسُفٍ لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ أَمَّا الْحُلَّةُ فَإِنَّمَا شُبِّهَ عَلَى النَّاسِ فِيهَا أَنَّهَا اشْتُرِيَتْ لَهُ لِيُكَفَّنَ فِيهَا فَتُرِكَتِ الْحُلَّةُ وَكُفِّنَ فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ سَحُولِيَّةٍ فَأَخَذَهَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ لأَحْبِسَنَّهَا حَتَّى أُكَفِّنَ فِيهَا نَفْسِي ثُمَّ قَالَ لَوْ رَضِيَهَا اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لِنَبِيِّهِ لَكَفَّنَهُ فِيهَا . فَبَاعَهَا وَتَصَدَّقَ بِثَمَنِهَا .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাফনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তাঁকে সাদা সাহূলী কাপড় দ্বারা কাফন দেওয়া হয়েছে। সাহূল ইয়ামানের একটি জায়গার নাম। সেকালে কাপড় তৈরির জন্য জায়গাটি বিখ্যাত ছিল। সেখানকার তৈরি কাপড়কে সাহূলী কাপড় বলা হত। হাদীছটিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাফনে তিনটি কাপড় ব্যবহৃত হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এ কথাও বলা হয়েছে যে, তাতে কামীস (জামা) ও পাগড়ি ছিল না। মায়্যিতের কাফনে তিনটি কাপড় ব্যবহার সম্পর্কে সকলেই একমত। তবে তাতে কামীস থাকবে কি না, এ বিষয়ে মতভিন্নতা আছে। হানাফী মাযহাব অনুযায়ী তিনটি কাপড়ের একটি হল কামীস। অন্যদু'টি হল ইযার ও লিফাফা। আলোচ্য হাদীছটি বাহ্যত হানাফী মতের পরিপন্থি মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে পরিপন্থি নয়। কারণ এতে যে কামীস ছিল না বলা হয়েছে, তার মানে জীবিতরা যেরকম কামীস বা জামা পরে, মায়্যিতের কামীস সেরকম নয়। মায়্যিতের কামীসে কলি, হাতা ও সেলাই থাকে না। কেবল মাথা ঢোকানোর জন্য একটা ফোকর থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যে কামীস পরানো হয়েছিল, খুবসম্ভব তা এরকমই ছিল। জীবিতদের কামীসের মতো ছিল না। সে হিসেবেই হাদীছটিতে কামীস না থাকার কথা বলা হয়েছে। এরকম ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন এজন্য যে, অন্যান্য বর্ণনায় তাঁর কাফনের মধ্যে কামীস থাকার কথা বলা হয়েছে। এক বর্ণনায় আছে কামীস নেই, অপর বর্ণনায় আছে কামীস ছিল। বাহ্যত এটা সাংঘর্ষিক। এর সমাধান এভাবে হতে পারে যে, কামীস ছিল না মানে জীবিতদের জামার মতো জামা ছিল না। আর কামীস থাকার মানে সেলাই ও হাতাবিহীন জামা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
মায়্যিতকে তিনটি কাপড় দিয়ে কাফন পরাতে হয়। তা সাদা হওয়া উত্তম।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
মায়্যিতকে তিনটি কাপড় দিয়ে কাফন পরাতে হয়। তা সাদা হওয়া উত্তম।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
