আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৬- মুসাফিরের নামায - কসর নামায

হাদীস নং: ১৭০৮
আন্তর্জাতিক নং: ৭৮৬
২৫. নামাযে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে কিংবা কুরআন তিলাওয়াত ও যিক্‌রে জিহ্বা জড়িয়ে যেতে লাগলে ঘুমিয়ে পড়া কিংবা বিশ্রাম নেয়ার আদেশ, যাতে তার তন্দ্রাভাব কেটে যায়
১৭০৮। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা, ইবনে নূমায়ার, আবু কুরায়ব এবং কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের কেউ নামাযে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে সে যেন শুয়ে পড়ে যাতে তার ঘুম চলে যায়। কেননা, তোমাদের কেউ যখন তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে নামায আদায় করবে তখন এমন হতে পারে যে, সে ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাইবে, অথচ সে নিজেকে গালি দিয়ে বসবে। (দুআ করতে গিয়ে বদ দুআ করে ফেলবে।)
باب أَمْرِ مَنْ نَعَسَ فِي صَلاَتِهِ أَوِ اسْتَعْجَمَ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ أَوِ الذِّكْرُ بِأَنْ يَرْقُدَ أَوْ يَقْعُدَ حَتَّى يَذْهَبَ عَنْهُ ذَلِكَ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، جَمِيعًا عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، بْنُ سَعِيدٍ - وَاللَّفْظُ لَهُ - عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا نَعَسَ أَحَدُكُمْ فِي الصَّلاَةِ فَلْيَرْقُدْ حَتَّى يَذْهَبَ عَنْهُ النَّوْمُ فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى وَهُوَ نَاعِسٌ لَعَلَّهُ يَذْهَبُ يَسْتَغْفِرُ فَيَسُبُّ نَفْسَهُ " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে নামায পড়া অবস্থায় ঘুমের চাপ দেখা দিলে শুয়ে পড়তে বলা হয়েছে। এর কারণ- যদি ঘুমের চাপ খুব বেশি দেখা দেয় এবং এমন তন্দ্রাগ্রস্ত হয়ে পড়ে যে, নিজের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, তখন নামায পড়তে থাকলে অনেক বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এক তো শারীরিক দুর্ঘটনা যে, তন্দ্রার প্রকোপে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে এবং পড়ে গিয়ে কঠিন ব্যাথা পাবে। আরেক হচ্ছে ঈমান-আমল সম্পর্কিত দুর্ঘটনা। তন্দ্রাগ্রস্ত হয়ে পড়ার কারণে অনেক সময়ই বোধ-অনুভব এমন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে যে, তখন কী বলা হয় নিজেই বুঝতে পারে না। বলতে চায় একটা, বলে ফেলে আরেকটা। নামাযে এমন হলে হয়তো সূরা পড়তে গিয়ে বলে ফেলবে অন্যকিছু, ইস্তিগফার করতে গিয়ে করে বসবে গালাগালি, আল্লাহর কাছে চাবে জান্নাত কিন্তু চেয়ে বসবে জাহান্নাম এবং চাওয়ার ইচ্ছা হিদায়াত কিন্তু চেয়ে ফেলবে গোমরাহী। এটা তো শারীরিক দুর্ঘটনা অপেক্ষাও বেশি বিপজ্জনক। এ কারণেই তন্দ্রা অবস্থায় সংক্ষেপে নামায শেষ করে শুয়ে পড়তে বলা হয়েছে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় নামায পড়া ঠিক নয়।

খ. নফল ইবাদতে এত বেশি বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়, যাতে শরীরের হক নষ্ট হয়। ঘুমও শরীরের একটা হক।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)