আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৫- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা

হাদীস নং: ১০৮৪
আন্তর্জাতিক নং: ৫৩৮-১
৭. নামাযে কথা বলা নিষেধ এবং এর পূর্ব অনুমতির বিধান রহিতকরন
১০৮৪। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা, যুহাইর ইবনে হারব, ইবনে নুমাইর ও আবু সাঈদ আল-আশাজ্জ (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে তাঁর নামাযরত অবস্থায় সালাম করতাম এবং তিনি ঐ অবস্থায়ই আমাদের সালামের জওয়াব দিতেন। কিন্তু আমরা আবিসিনিয়া হতে ফিরে এসে যখন ঐ অবস্থায় তাকে সালাম দিলাম, তিনি তার কোনও জবাব দিলেন না। নামায শেষে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার নামাযত অবস্থায় আপনাকে সালাম দিতাম, (আপনি তার জবাব দিতেন, কিন্তু এখন আপনি জবাব দিলেন না, এর কারণ কি?) তিনি বললেন, নামাযে নির্ধারিত আমল রয়েছে (সুতরাং এসময় অন্য কাজে মশগুল হওয়া যায় না)।
باب تَحْرِيمِ الْكَلاَمِ فِي الصَّلاَةِ وَنَسْخِ مَا كَانَ مِنْ إِبَاحَتِهِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ - وَأَلْفَاظُهُمْ مُتَقَارِبَةٌ - قَالُوا حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ فَيَرُدُّ عَلَيْنَا فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِي سَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْنَا فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَيْكَ فِي الصَّلاَةِ فَتَرُدُّ عَلَيْنَا . فَقَالَ " إِنَّ فِي الصَّلاَةِ شُغُلاً " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. কর্তৃক রসূল স.কে সালাম দেয়ার ঘটনায় তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা নামাযে কথা বলবে না”। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, নামাযে সালাম দেয়া বা সালামের জবাব দেয়া, কথা বলার শামিল যা নামায ভঙ্গের কারণ। (শামী: ১/৬১৩, ৬১৫)
মুসলিম শরীফের এক বর্ণনায় উল্লেখ আছে যে, নতুন ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবা হযরত মুআবিয়া বিন হাকাম আস্ সুলামী রা. নামাযরত অবস্থায় এক লোকের হাঁচির জবাবে يَرْحَمُكَ الله বললে নামাযানেত্ম রসূল স. তাঁকে ইরশাদ করলেন: নামাযে কথাবার্তা বলা উচিত নয়। নামায তো তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠের জন্য। (মুসলিম: ১০৮২) শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি আবু দাউদ এবং নাসাঈ শরীফে বর্ণিত হয়েছে। (জামেউল উসূল-৩৬৯০)
এ হাদীসে রসূলুল্লাহ স. মূলত একটি নীতিমালার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যে, নামায হলো তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন পাঠের জায়গা। সুতরাং রসূলুল্লাহ স. নামাযের যে পদ্ধতি উম্মাতকে শিক্ষা দিয়েছেন, তার সবটাই হয়তো তাসবীহ, না হয় তাকবীর, (আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ) অথবা কুরআন পাঠ। তাসবীহ ও কুরআন পাঠ কিসের দ্বারা হয় তা অনেকটা পরিস্কার। তবে তাকবীর কতভাবে কিসের দ্বারা প্রকাশ পায় তা সাধারণ মানুষের জানার বাইরে। এ কথার দ্বারা আমি আল্লাহু আকবার শব্দের দ্বারা বড়ত্ব প্রকাশের কথা বলছি না। কেননা এটা তো সকলেরই জানা। বরং রম্নকুর দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ, সিজদার দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ, কিয়ামের দ্বারা আল্লার বড়ত্ব প্রকাশ ইত্যাদির কথা বলছি। এটা এমন একটি বিষয় যা নববী ইল্ম ছাড়া অনুধাবন করা যায় না। অতএব, নামাযের মধ্যে যে সব কাজ করণীয় বলে প্রমাণিত, তার বাইরে কিছু করা যাবে না। এর বাইরে যত ধরণের কাজ আছে তার ধরণ হিসেবে কোন্‌টা নামায ভঙ্গের কারণ হবে, কোন্‌টা মাকরূহ হবে, আবার কোন্‌টা বৈধ হবে ইত্যাদি বিষয় ইজতিহাদ বা গবেষণার সাথে সম্পর্কিত। এ ব্যাপারে গবেষক ইমামগণের শরণাপন্ন হতে হবে।
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)