আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৫- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
হাদীস নং: ১০৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ৫২৪-১
১. মসজিদে নববীর প্রতিষ্ঠা
১০৫৬। ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া ও শায়বান ইবনে ফাররূখ (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মদীনায় আগমন করলেন এবং মদীনার উচ্চ এলাকার এক মহল্লায় অবতরণ করলেন। যাকে আমর ইবনে আওফ গোত্রের মহল্লা বলা হয়। সেখানে তিনি চৌদ্দ রাত্রি অবস্থান করলেন। তারপর তিনি নাজ্জার গোত্রের নেতৃবৃন্দকে খবর পাঠালেন। তারা তরবারি ঝুলিয়ে এলেন। আনাস (রাযিঃ) বলেন, আমি যেন এখনও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে দেখতে পাচ্ছি। তিনি তাঁর সওয়ারীর ওপর এবং আবু বকর (রাযিঃ) তাঁর পিছনে আর নাজ্জার গোত্রের নেতৃবৃন্দ তাঁর চতুর্দিকে ছিলেন।
অবশেষে তিনি আবু আইয়ুবের গৃহ প্রাঙ্গণে অবতরণ করলেন। আনাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেখানেই নামাযের ওয়াক্ত হতো, সেখানেই নামায আদায় করে নিতেন। বকরীর বাথানেও তিনি নামায আদায় করতেন। তারপর তাঁকে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়। আনাস (রাযিঃ) বলেন, তখন নাজ্জার গোত্রের প্রধানদের খবর দিলেন। তারা এলো। তিনি তাদের বললেন, হে বনু নাজ্জার! তোমাদের এই বাগান খানি আমার নিকট বিক্রি কর। তারা বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা তার মূল্য একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাই।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, ঐ বাগণটিতে কি ছিল তা আমি বলছি খেজুরগাছ, মুশরিকদের কবর ও পূরাতন ঘর দু'আরের ভগ্নাবশেষ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আদেশে খেজুর গাছ কেটে দেয়া হলো, কবরগুলো খুঁড়ে ফেলা হলো এবং ধ্বংসাবশেষ সমান করে দেয়া হল।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, তারপর কিবলার দিকে খেজুর গাছের সারিবদ্ধ থাম দেওয়া হল এবং দুই পাশে পাথর স্থাপন করা হল। নির্মাণ কাজের সময় সাহাবা-ই- কিরাম রাজায’ (উৎসাহোদ্দীপক শ্লোক) আবৃতি করছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)ও তাদের সাথে আবৃতি করছিলেন। তারা বলছিলেনاللَّهُمَّ إِنَّهُ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُ الآخِرَهْ فَانْصُرِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ হে আল্লাহ! আখিরাতের কল্যাণই প্রকৃত কল্যাণ। সুতরাং আনসার ও মুহাজিরদেরকে আপনি সাহায্য করুন।
অবশেষে তিনি আবু আইয়ুবের গৃহ প্রাঙ্গণে অবতরণ করলেন। আনাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেখানেই নামাযের ওয়াক্ত হতো, সেখানেই নামায আদায় করে নিতেন। বকরীর বাথানেও তিনি নামায আদায় করতেন। তারপর তাঁকে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়। আনাস (রাযিঃ) বলেন, তখন নাজ্জার গোত্রের প্রধানদের খবর দিলেন। তারা এলো। তিনি তাদের বললেন, হে বনু নাজ্জার! তোমাদের এই বাগান খানি আমার নিকট বিক্রি কর। তারা বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা তার মূল্য একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাই।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, ঐ বাগণটিতে কি ছিল তা আমি বলছি খেজুরগাছ, মুশরিকদের কবর ও পূরাতন ঘর দু'আরের ভগ্নাবশেষ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আদেশে খেজুর গাছ কেটে দেয়া হলো, কবরগুলো খুঁড়ে ফেলা হলো এবং ধ্বংসাবশেষ সমান করে দেয়া হল।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, তারপর কিবলার দিকে খেজুর গাছের সারিবদ্ধ থাম দেওয়া হল এবং দুই পাশে পাথর স্থাপন করা হল। নির্মাণ কাজের সময় সাহাবা-ই- কিরাম রাজায’ (উৎসাহোদ্দীপক শ্লোক) আবৃতি করছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)ও তাদের সাথে আবৃতি করছিলেন। তারা বলছিলেনاللَّهُمَّ إِنَّهُ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُ الآخِرَهْ فَانْصُرِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ হে আল্লাহ! আখিরাতের কল্যাণই প্রকৃত কল্যাণ। সুতরাং আনসার ও মুহাজিরদেরকে আপনি সাহায্য করুন।
باب ابْتِنَاءِ مَسْجِدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَشَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الْوَارِثِ، - قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ الضُّبَعِيِّ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدِمَ الْمَدِينَةَ فَنَزَلَ فِي عُلْوِ الْمَدِينَةِ فِي حَىٍّ يُقَالُ لَهُمْ بَنُو عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ . فَأَقَامَ فِيهِمْ أَرْبَعَ عَشْرَةَ لَيْلَةً ثُمَّ إِنَّهُ أَرْسَلَ إِلَى مَلإِ بَنِي النَّجَّارِ فَجَاءُوا مُتَقَلِّدِينَ بِسُيُوفِهِمْ - قَالَ - فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى رَاحِلَتِهِ وَأَبُو بَكْرٍ رِدْفُهُ وَمَلأُ بَنِي النَّجَّارِ حَوْلَهُ حَتَّى أَلْقَى بِفِنَاءِ أَبِي أَيُّوبَ - قَالَ - فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي حَيْثُ أَدْرَكَتْهُ الصَّلاَةُ وَيُصَلِّي فِي مَرَابِضِ الْغَنَمِ ثُمَّ إِنَّهُ أَمَرَ بِالْمَسْجِدِ قَالَ فَأَرْسَلَ إِلَى مَلإِ بَنِي النَّجَّارِ فَجَاءُوا فَقَالَ " يَا بَنِي النَّجَّارِ ثَامِنُونِي بِحَائِطِكُمْ هَذَا " . قَالُوا لاَ وَاللَّهِ لاَ نَطْلُبُ ثَمَنَهُ إِلاَّ إِلَى اللَّهِ . قَالَ أَنَسٌ فَكَانَ فِيهِ مَا أَقُولُ كَانَ فِيهِ نَخْلٌ وَقُبُورُ الْمُشْرِكِينَ وَخِرَبٌ . فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالنَّخْلِ فَقُطِعَ وَبِقُبُورِ الْمُشْرِكِينَ فَنُبِشَتْ وَبِالْخِرَبِ فُسُوِّيَتْ - قَالَ - فَصَفُّوا النَّخْلَ قِبْلَةً وَجَعَلُوا عِضَادَتَيْهِ حِجَارَةً - قَالَ - فَكَانُوا يَرْتَجِزُونَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَعَهُمْ وَهُمْ يَقُولُونَ اللَّهُمَّ إِنَّهُ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُ الآخِرَهْ فَانْصُرِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ কথাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিকবার বলেছেন। এর দ্বারা তিনি সাহাবীদের বুঝাচ্ছিলেন যে, দেখ দুনিয়ার কষ্ট স্থায়ী কিছু নয়। দুনিয়া যেমন ক্ষণস্থায়ী, তেমনি এর কষ্ট-ক্লেশও ক্ষণস্থায়ী। তোমরা কষ্ট করছ আল্লাহর জন্য। একদিন কষ্ট থাকবে না। কিন্তু এর পুরস্কারস্বরূপ অনন্ত অসীম আখিরাতে তোমরা অফুরন্ত সুখ-শান্তি ভোগ করতে পারবে।
আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাক্যটির মাধ্যমে যেন উম্মতকে সতর্ক করছেন, দুনিয়ার কোনও সফলতা, সমৃদ্ধি কিংবা অন্য কোনও আনন্দদায়ক বস্তু অর্জিত হয়ে যাওয়ায় তোমরা খুশিতে মেতে যেয়ো না। কারণ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার সবই ক্ষণস্থায়ী। স্থায়ী সুখ ও আনন্দ কেবল আখিরাতেই আছে। তাই আসল লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত আখিরাতের সফলতা। সর্বাবস্থায় সে চিন্তা-চেতনা অন্তরে জাগ্রত রেখো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
দুনিয়ার সুখ-দুঃখ, আরাম-কষ্ট কোনও অবস্থায়ই আখিরাতের কথা ভুলে যেতে নেই। সর্বাবস্থায় মন-মস্তিষ্কে এ চেতনা জাগ্রত রাখা চাই যে, আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। তাই সে জীবনে মুক্তিলাভ করাই হবে জীবনের আসল লক্ষ্যবস্তু।
আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাক্যটির মাধ্যমে যেন উম্মতকে সতর্ক করছেন, দুনিয়ার কোনও সফলতা, সমৃদ্ধি কিংবা অন্য কোনও আনন্দদায়ক বস্তু অর্জিত হয়ে যাওয়ায় তোমরা খুশিতে মেতে যেয়ো না। কারণ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার সবই ক্ষণস্থায়ী। স্থায়ী সুখ ও আনন্দ কেবল আখিরাতেই আছে। তাই আসল লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত আখিরাতের সফলতা। সর্বাবস্থায় সে চিন্তা-চেতনা অন্তরে জাগ্রত রেখো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
দুনিয়ার সুখ-দুঃখ, আরাম-কষ্ট কোনও অবস্থায়ই আখিরাতের কথা ভুলে যেতে নেই। সর্বাবস্থায় মন-মস্তিষ্কে এ চেতনা জাগ্রত রাখা চাই যে, আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। তাই সে জীবনে মুক্তিলাভ করাই হবে জীবনের আসল লক্ষ্যবস্তু।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
