আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৪- নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৮৪৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৬ -
২৫. ইমামের পূর্বে রুকু সিজদা করা নিষেধ
৮৪৫। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা (রাহঃ) ও আলী ইবনে হুজর (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদিন নামায আদায়ের পর আমাদের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের ইমাম। সুতরাং রুকু, সিজদা, কিয়াম ও সালামে আমার আগে চলে যেও না। কারণ আমি সম্মুখ ও পাশ্চাৎ হতে তোমাদেরকে দেখতে পাই। অতঃপর বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার শপথ, আমি যা দেখছি, তোমরা তা দেখতে পেলে হাসতে কম, কাঁদতে বেশী। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কী দেখেছেন? তিনি বললেন, আমি জান্নাত ও জাহান্নাম দেখেছি।
باب النَّهْىِ عَنْ سَبْقِ الإِمَامِ، بِرُكُوعٍ أَوْ سُجُودٍ وَنَحْوِهِمَا
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، وَاللَّفْظُ، لأَبِي بَكْرٍ قَالَ ابْنُ حُجْرٍ أَخْبَرَنَا وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ " أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي إِمَامُكُمْ فَلاَ تَسْبِقُونِي بِالرُّكُوعِ وَلاَ بِالسُّجُودِ وَلاَ بِالْقِيَامِ وَلاَ بِالاِنْصِرَافِ فَإِنِّي أَرَاكُمْ أَمَامِي وَمِنْ خَلْفِي - ثُمَّ قَالَ - وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ رَأَيْتُمْ مَا رَأَيْتُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا " . قَالُوا وَمَا رَأَيْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " رَأَيْتُ الْجَنَّةَ وَالنَّارَ " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি হাসাহাসি পসন্দ করতেন না। বেশি হাসিতে অন্তরে উদাসীনতা জন্ম নেয়। এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন لا تكثر الضحك، فإن كثرة الضحك تميت القلب "বেশি হাসবে না। কেননা হাসির আধিক্য অন্তরের মৃত্যু ঘটায়।”

একবার তিনি সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে এই বলে তাদের উপদেশ দিয়েছিলেন যে (তোমরা যদি দেখতে যা আমি দেখি, তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে)। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা পাপীদের জন্য কী কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন, কী কঠিন কিয়ামতের বিভীষিকা এবং কত কঠিন হাশরের ময়দানের পরিস্থিতি, তা আমি যেমনটা জানি তেমনি তোমরাও যদি জানতে, তবে অবশ্যই কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। এক বর্ণনায় এরপর আছে
ولما ساغ لكم الطعام ولا الشراب، ولما نمتم على الفرش ولهجرتم النساء، ولخرجتم إلى الصعدات تجأرون
"তোমাদের কাছে পানাহার ভালো লাগত না। তোমরা বিছানায় ঘুমাতে পারতে না। তোমরা নারীদের থেকে দূরে থাকতে। তোমরা চিৎকার করতে করতে রাস্তাঘাটে বের হয়ে পড়তে।

হাদীছটি দ্বারা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে পার্থিব জীবনযাপন সম্পর্কে এ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন যে, দুনিয়া আনন্দে মেতে থাকার জায়গা নয়। তা থাকা উচিতও নয়। তার সামনে আখিরাত আছে। সেখানকার পরিস্থিতি বড় কঠিন। সে কঠিন পরিস্থিতির ব্যাপারে চিন্তিত থাকা উচিত। মনে ভয় রাখা উচিত। উচিত আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি কাঁদা, যাতে তিনি সেখানে নাজাত দান করেন। যেন তিনি নিজ রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. ওয়াজ-নসীহতে হাসানো নয়; বরং কাঁদানোই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকা।

খ. অল্প হাসি দোষের নয়, যদি অন্তরে আখিরাতের ভয় থাকে এবং সে ভয়ে ক্রন্দনও করা হয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৮৪৫ | মুসলিম বাংলা