আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
২- পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৪৫
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৩-৩
৫. পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুমআ থেকে আরেক জুমআ এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান তাদের মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারা হয়ে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত কবীরা গুনাহ পরিহার করা হয়
৪৪৫। আবু তাহির ও হারুন ইবনে সাঈদ আল আইলী (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলতেনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুম'আ থেকে আরেক জুম'আ পর্যন্ত এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান পর্যন্ত এইসব তাদের মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারা হয়ে যাবে, যদি সে কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।
باب الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ مُكَفِّرَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ مَا اجْتُنِبَتِ الْكَبَائِرُ.
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَهَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي صَخْرٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ إِسْحَاقَ، مَوْلَى زَائِدَةَ حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ " الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ مُكَفِّرَاتٌ مَا بَيْنَهُنَّ إِذَا اجْتَنَبَ الْكَبَائِرَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে এমন কয়েকটি সৎকর্মের উল্লেখ করা হয়েছে, যা দ্বারা পাপ মোচন হয়। প্রথমে উল্লেখ করা হয়েছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের কথা। এর দ্বারা প্রত্যেক দুই ওয়াক্তের মাঝখানে যে সকল পাপ হয়ে যায় তা মোচন হয়। এভাবে সারাদিনে মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মধ্যবর্তী সময়সমূহ, যেমন ফজর থেকে যোহর পর্যন্ত একটা সময়, যোহর থেকে আসর পর্যন্ত আরেকটা সময়, আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত আরেকটা সময়, মাগরিব থেকে ‘ইশা পর্যন্ত আরেকটা সময় এবং ‘ইশা থেকে ফজর পর্যন্ত আরেকটা সময়, তো যদি কেউ পাঁচ ওয়াক্ত নামায পূর্ণাঙ্গরূপে আদায় করে, তবে এর দ্বারা এ মধ্যবর্তী সময়সমূহের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। তার মানে পাঁচ ওয়াক্ত নামায দ্বারা দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টার সকল গুনাহ থেকে নিষ্কৃতি মেলে।
হয়তো কারও কোনও এক নামায ত্রুটিপূর্ণ হয়ে গেল বা ইচ্ছাকৃত কাযা করল, সে ক্ষেত্রে এ সুফল পাওয়া যাবে না। তখন গুনাহ মাফের উপায় কী? তার মাফ পাওয়া যায় জুমু'আর নামায দ্বারা। দ্বিতীয় পর্যায়ে সে কথাই বলা হয়েছে যে, এক জুমু'আ তার পরবর্তী জুমু'আ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের সকল গুনাহ মোচন করে দেয়।
এতেও যদি কারও অবহেলা হয়ে যায়, তবে তারও বিকল্প আছে। তা হচ্ছে রমযানের রোযা। বলা হয়েছে, এক রমযান অর্থাৎ রমযানের রোযা তার পরবর্তী রমযান পর্যন্ত সকল পাপ মোচন করে দেয়।
এই যে পাপ মোচনের কথা বলা হল, হাদীছের শেষবাক্য দ্বারা বোঝা যায় তা সগীরা গুনাহ বা ছোট পাপ। কেননা শেষবাক্যে বলা হয়েছে-
إِذَا اجْتُنِبَتِ الْكَبَائِرُ
‘যখন কবীরা গুনাহ পরিহার করা হয়।’
অর্থাৎ কবীরা গুনাহ পরিহার করা হলে এ সকল আমল দ্বারা বান্দার কৃত অন্যসব গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আর তা তো সগীরা গুনাহই।
প্রকাশ থাকে যে, যদি কারও কোনও কবীরা গুনাহ না থাকে আর এ সমস্ত আমলের কোনও একটি দ্বারা তার সগীরা গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়, তবে অবশিষ্ট আমল দ্বারা কী মাফ হবে? এর উত্তর হল, সে ক্ষেত্রে অবশিষ্ট আমলসমূহ দ্বারা জান্নাতে তার মর্যাদা উঁচু হতে থাকবে।
ইমাম নববী রহ. সহীহ মুসলিম-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলেন যে, প্রশ্ন হতে পারে, এক হাদীছের ভাষ্যমতে যখন ওযূ দ্বারা গুনাহ মাফ হয়ে গেল, তাহলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায দ্বারা মাফ হওয়ার জন্য আর কী গুনাহ অবশিষ্ট থাকল? আর পাঁচ ওয়াক্ত নামায দ্বারা যদি গুনাহ মাফ হয়ে যায়, তাহলে জুমু'আ ও রমযানের জন্য কী থাকল? এমনিভাবে বলা হয়েছে, 'আরাফার রোযার দ্বারা দুই বছরের গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যায়। আশুরা দিবসের রোযা দ্বারা এক বছরের গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যায়। আরও বলা হয়েছে, মুক্তাদির আমীন বলা যখন ফিরিশতাগণের আমীনের সঙ্গে মিলে যাবে, তখন তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। খোলাসা হল, এক নেক আমলের মাধ্যমে যদি গুনাহ মাফ হয়ে গেল, তাহলে অন্য নেক আমলের দ্বারা মাফ হওয়ার জন্য আর কী গুনাহ অবশিষ্ট থাকবে?
ইমাম নববী বলেন, এর উত্তরে সে কথাই বলা হবে, যা এ ক্ষেত্রে উলামায়ে কিরাম বলেছেন। ‘উলামায়ে কিরাম বলেছেন, উল্লেখিত নেক আমলগুলোর প্রত্যেকটিই গুনাহ মাফ করার যোগ্যতা রাখে। সুতরাং সে নেক আমল যখন মাফ করার মত সগীরা গুনাহ পাবে, তখন তা মাফ করে দেবে। আর যদি অন্য নেক আমল কর্তৃক সগীরা গুনাহগুলো মাফ হয়ে যাওয়াতে এই নেক আমল কোনো সগীরা ও কবীরা গুনাহ না পায়, তাহলে তার বিনিময়ে নেকী লিখে দেওয়া হবে এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে। আর যদি ওই নেক আমল এক বা একাধিক কবীরা গুনাহ পায়; কোনো সগীরা গুনাহ না পায়, তাহলে আমরা আশা করি আল্লাহ তা'আলা কবীরা গুনাহ থেকে বান্দার বোঝা হালকা করবেন। والله اعلم, (ইমাম নববী রহ.-এর বক্তব্য শেষ হল।)
উল্লেখ্য, যদি কবীরা গুনাহ হয়ে যায় তা কিভাবে মাফ হবে? তা মাফ হবে তাওবা ও ইস্তিগফার দ্বারা, যদি তা যথাযথ শর্তের সঙ্গে করা হয়। 'তাওবা' অধ্যায়ে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। [দেখুন- রিয়াযুস সালেহীন, ১ম খণ্ড, ৭৭-১৩৬ পৃষ্ঠা।
কবীরা গুনাহ কাকে বলে? কবীরা গুনাহ বলে এমনসব পাপকে, যে সম্পর্কে কুরআন-হাদীছে সুনির্দিষ্ট শাস্তির কথা বলা হয়েছে বা যার কর্তাকে লা'নত করা হয়েছে কিংবা আখিরাতে শাস্তির সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে। যেমন চুরি করা, ব্যভিচার করা, সুদ ও ঘুসের লেনদেন করা, মিথ্যা কথা বলা, গীবত করা, পিতামাতার অবাধ্যতা করা, আমানতের খেয়ানত করা ইত্যাদি।
আরও উল্লেখ্য, সগীরা গুনাহ গুনাহই বটে, যেমন ছোট আগুনও আগুনই বটে। গুনাহমাত্রই আল্লাহর গযব ও অসন্তুষ্টির কারণ। তাই সগীরা হোক বা কবীরা, সকল গুনাহ থেকেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করা উচিত। সৎকর্ম দ্বারা সগীরা গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায় বলে গাফেল হয়ে যাওয়া উচিত নয়। কেননা পাপ মুছে ফেলার জন্য যে শক্তি দরকার, সৎকর্মের মধ্যে তা থাকতে তো হবে। সৎকর্মের মধ্যে সে শক্তি আসে ইখলাস দ্বারা। সেইসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমলের যে পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন সেই পদ্ধতির যথাযথ অনুসরণও জরুরি। অর্থাৎ আমল করতে হবে সুন্নত পন্থায়। আমলে যদি ইখলাস থাকে এবং তা সুন্নত পন্থায় সম্পন্ন করা হয়, তখনই তার সুফল ও বরকতসমূহ পুরোপুরি পাওয়া যায়। সুতরাং জরুরি হচ্ছে ছোট-বড় সব গুনাহ থেকে বেঁচে থাকারও চেষ্টা করা এবং সেইসঙ্গে নামায, রোযা ইত্যাদি প্রতিটি সৎকর্ম পূর্ণ ইখলাস ও সুন্নত মোতাবেক আদায়েও যত্নবান থাকা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে সে তাওফীক দান করুন, আমীন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা পাঁচ ওয়াক্ত নামায, জুমু'আর নামায ও রমযানের রোযার ফযীলত জানা গেল।
খ. এসব আমলের পুরোপুরি সুফল ও বরকত পাওয়ার জন্য কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
গ. এর দ্বারা আল্লাহ তা'আলা কত বড় মেহেরবান তাও উপলব্ধি করা যায়। কেননা ফরয আমলসমূহ বান্দার অবশ্যপালনীয় হওয়া সত্ত্বেও এর মাধ্যমে তিনি বান্দার গুনাহও মাফ করে থাকেন। এটা তাঁর একান্ত দয়া ছাড়া আর কী? আল্লাহ তা'আলা তাঁর দয়ায় আমাদেরকে তাঁর যাবতীয় হুকুম যথাযথভাবে মেনে চলার তাওফীক দান করুন, আমীন।
হয়তো কারও কোনও এক নামায ত্রুটিপূর্ণ হয়ে গেল বা ইচ্ছাকৃত কাযা করল, সে ক্ষেত্রে এ সুফল পাওয়া যাবে না। তখন গুনাহ মাফের উপায় কী? তার মাফ পাওয়া যায় জুমু'আর নামায দ্বারা। দ্বিতীয় পর্যায়ে সে কথাই বলা হয়েছে যে, এক জুমু'আ তার পরবর্তী জুমু'আ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের সকল গুনাহ মোচন করে দেয়।
এতেও যদি কারও অবহেলা হয়ে যায়, তবে তারও বিকল্প আছে। তা হচ্ছে রমযানের রোযা। বলা হয়েছে, এক রমযান অর্থাৎ রমযানের রোযা তার পরবর্তী রমযান পর্যন্ত সকল পাপ মোচন করে দেয়।
এই যে পাপ মোচনের কথা বলা হল, হাদীছের শেষবাক্য দ্বারা বোঝা যায় তা সগীরা গুনাহ বা ছোট পাপ। কেননা শেষবাক্যে বলা হয়েছে-
إِذَا اجْتُنِبَتِ الْكَبَائِرُ
‘যখন কবীরা গুনাহ পরিহার করা হয়।’
অর্থাৎ কবীরা গুনাহ পরিহার করা হলে এ সকল আমল দ্বারা বান্দার কৃত অন্যসব গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আর তা তো সগীরা গুনাহই।
প্রকাশ থাকে যে, যদি কারও কোনও কবীরা গুনাহ না থাকে আর এ সমস্ত আমলের কোনও একটি দ্বারা তার সগীরা গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়, তবে অবশিষ্ট আমল দ্বারা কী মাফ হবে? এর উত্তর হল, সে ক্ষেত্রে অবশিষ্ট আমলসমূহ দ্বারা জান্নাতে তার মর্যাদা উঁচু হতে থাকবে।
ইমাম নববী রহ. সহীহ মুসলিম-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলেন যে, প্রশ্ন হতে পারে, এক হাদীছের ভাষ্যমতে যখন ওযূ দ্বারা গুনাহ মাফ হয়ে গেল, তাহলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায দ্বারা মাফ হওয়ার জন্য আর কী গুনাহ অবশিষ্ট থাকল? আর পাঁচ ওয়াক্ত নামায দ্বারা যদি গুনাহ মাফ হয়ে যায়, তাহলে জুমু'আ ও রমযানের জন্য কী থাকল? এমনিভাবে বলা হয়েছে, 'আরাফার রোযার দ্বারা দুই বছরের গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যায়। আশুরা দিবসের রোযা দ্বারা এক বছরের গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যায়। আরও বলা হয়েছে, মুক্তাদির আমীন বলা যখন ফিরিশতাগণের আমীনের সঙ্গে মিলে যাবে, তখন তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। খোলাসা হল, এক নেক আমলের মাধ্যমে যদি গুনাহ মাফ হয়ে গেল, তাহলে অন্য নেক আমলের দ্বারা মাফ হওয়ার জন্য আর কী গুনাহ অবশিষ্ট থাকবে?
ইমাম নববী বলেন, এর উত্তরে সে কথাই বলা হবে, যা এ ক্ষেত্রে উলামায়ে কিরাম বলেছেন। ‘উলামায়ে কিরাম বলেছেন, উল্লেখিত নেক আমলগুলোর প্রত্যেকটিই গুনাহ মাফ করার যোগ্যতা রাখে। সুতরাং সে নেক আমল যখন মাফ করার মত সগীরা গুনাহ পাবে, তখন তা মাফ করে দেবে। আর যদি অন্য নেক আমল কর্তৃক সগীরা গুনাহগুলো মাফ হয়ে যাওয়াতে এই নেক আমল কোনো সগীরা ও কবীরা গুনাহ না পায়, তাহলে তার বিনিময়ে নেকী লিখে দেওয়া হবে এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে। আর যদি ওই নেক আমল এক বা একাধিক কবীরা গুনাহ পায়; কোনো সগীরা গুনাহ না পায়, তাহলে আমরা আশা করি আল্লাহ তা'আলা কবীরা গুনাহ থেকে বান্দার বোঝা হালকা করবেন। والله اعلم, (ইমাম নববী রহ.-এর বক্তব্য শেষ হল।)
উল্লেখ্য, যদি কবীরা গুনাহ হয়ে যায় তা কিভাবে মাফ হবে? তা মাফ হবে তাওবা ও ইস্তিগফার দ্বারা, যদি তা যথাযথ শর্তের সঙ্গে করা হয়। 'তাওবা' অধ্যায়ে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। [দেখুন- রিয়াযুস সালেহীন, ১ম খণ্ড, ৭৭-১৩৬ পৃষ্ঠা।
কবীরা গুনাহ কাকে বলে? কবীরা গুনাহ বলে এমনসব পাপকে, যে সম্পর্কে কুরআন-হাদীছে সুনির্দিষ্ট শাস্তির কথা বলা হয়েছে বা যার কর্তাকে লা'নত করা হয়েছে কিংবা আখিরাতে শাস্তির সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে। যেমন চুরি করা, ব্যভিচার করা, সুদ ও ঘুসের লেনদেন করা, মিথ্যা কথা বলা, গীবত করা, পিতামাতার অবাধ্যতা করা, আমানতের খেয়ানত করা ইত্যাদি।
আরও উল্লেখ্য, সগীরা গুনাহ গুনাহই বটে, যেমন ছোট আগুনও আগুনই বটে। গুনাহমাত্রই আল্লাহর গযব ও অসন্তুষ্টির কারণ। তাই সগীরা হোক বা কবীরা, সকল গুনাহ থেকেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করা উচিত। সৎকর্ম দ্বারা সগীরা গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায় বলে গাফেল হয়ে যাওয়া উচিত নয়। কেননা পাপ মুছে ফেলার জন্য যে শক্তি দরকার, সৎকর্মের মধ্যে তা থাকতে তো হবে। সৎকর্মের মধ্যে সে শক্তি আসে ইখলাস দ্বারা। সেইসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমলের যে পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন সেই পদ্ধতির যথাযথ অনুসরণও জরুরি। অর্থাৎ আমল করতে হবে সুন্নত পন্থায়। আমলে যদি ইখলাস থাকে এবং তা সুন্নত পন্থায় সম্পন্ন করা হয়, তখনই তার সুফল ও বরকতসমূহ পুরোপুরি পাওয়া যায়। সুতরাং জরুরি হচ্ছে ছোট-বড় সব গুনাহ থেকে বেঁচে থাকারও চেষ্টা করা এবং সেইসঙ্গে নামায, রোযা ইত্যাদি প্রতিটি সৎকর্ম পূর্ণ ইখলাস ও সুন্নত মোতাবেক আদায়েও যত্নবান থাকা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে সে তাওফীক দান করুন, আমীন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা পাঁচ ওয়াক্ত নামায, জুমু'আর নামায ও রমযানের রোযার ফযীলত জানা গেল।
খ. এসব আমলের পুরোপুরি সুফল ও বরকত পাওয়ার জন্য কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
গ. এর দ্বারা আল্লাহ তা'আলা কত বড় মেহেরবান তাও উপলব্ধি করা যায়। কেননা ফরয আমলসমূহ বান্দার অবশ্যপালনীয় হওয়া সত্ত্বেও এর মাধ্যমে তিনি বান্দার গুনাহও মাফ করে থাকেন। এটা তাঁর একান্ত দয়া ছাড়া আর কী? আল্লাহ তা'আলা তাঁর দয়ায় আমাদেরকে তাঁর যাবতীয় হুকুম যথাযথভাবে মেনে চলার তাওফীক দান করুন, আমীন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
