আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
১- ঈমানের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৬
আন্তর্জাতিক নং: ১৮ - ১
৬/ আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (ﷺ) এর প্রতি এবং (দ্বীনের অনুশাসনের) প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ এবং তাঁর প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ, আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি, তাঁর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা প্রসঙ্গ।
২৬। ইয়াহয়া ইবনে আইয়্যুব (রাযিঃ) ......... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আব্দুল কায়স গোত্রের কয়েকজন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে উপস্থিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আমরা রাবী’আ গোত্রের লোক। আপনার ও আমাদের মধ্যবতী যাতায়াত পথে মুযার গোত্রের কাফিররা অবস্থান করছে। শাহরুল হারাম ছাড়া আমরা আপনার কাছে আসতে পারি না। অতএব আপনি আমাদের এমন কাজের আদেশ দিন, আমাদের যারা আসেনি তাদের জানাতে পারি এবং যা পালন করে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমাদের চারটি বিষয় পালনের এবং চারটি বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। (পালনীয় চারটি বিষয় হলোঃ) তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না, নামায কায়েম করবে, যাকাত দিবে, রমযানের রোযা পালন করবে এবং গনিমতের এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে। আমি তোমাদের চারটি বিষয়ে নিষেধ করছিঃ দুববা, হানতাম, মুয়াফফাত ও নাকীর-এর ব্যবহার।
তারা আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আপনি নাকীর সম্পর্কে কতটুকু জানেন? তিনি বললেন, এ হলো খেজুর বৃক্ষের মূল খোদাই করে তৈরী পাত্র। এতে কুতাইয়া* নামক খেজুর দিয়ে তাতে পানি ঢেলে, রেখে দাও। অবশেষে যখন তার উথলানো থেমে যায় তখন তোমরা তা পান করে থাক। ফলে তোমাদের কেউ বা তাদের কেউ (নেশাগ্রস্ত হয়ে) আপন চাচাত ভাইকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে বস। আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) বলেন, উপস্থিত লোকদের মধ্যে এভাবে আঘাতপ্রাপ্ত এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বলেন, লজ্জায় আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে আঘাতটি গোপন করছিলাম! আমি বললাম, হে আল্লাহর -রাসুল! আমরা কিসে পান করব?
রাসুল (ﷺ) বললেন, রশি দ্বারা মুখবন্ধ চামড়ার পাত্রে। তারা আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আমাদের দেশে ইঁদুরের উপদ্রব বেশী। সেখানে চামড়ার পাত্র অক্ষত রাখা যায় না। নবী (ﷺ) বললেন, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে। রাবী বলেন, নবী (ﷺ) আব্দুল কায়স গোত্রের আশাজ্জ সম্পর্কে বললেন, তোমার মধ্যে দুটি বিশেষ গুণ রয়েছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন (তা হলো) সহিষ্ণুতা ও ধীর স্থিরতা।
* বর্ণনাকারী কাতাদা (রাহঃ) কুতাইয়া এর স্থলে তামার বলেছেন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমাদের চারটি বিষয় পালনের এবং চারটি বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। (পালনীয় চারটি বিষয় হলোঃ) তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না, নামায কায়েম করবে, যাকাত দিবে, রমযানের রোযা পালন করবে এবং গনিমতের এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে। আমি তোমাদের চারটি বিষয়ে নিষেধ করছিঃ দুববা, হানতাম, মুয়াফফাত ও নাকীর-এর ব্যবহার।
তারা আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আপনি নাকীর সম্পর্কে কতটুকু জানেন? তিনি বললেন, এ হলো খেজুর বৃক্ষের মূল খোদাই করে তৈরী পাত্র। এতে কুতাইয়া* নামক খেজুর দিয়ে তাতে পানি ঢেলে, রেখে দাও। অবশেষে যখন তার উথলানো থেমে যায় তখন তোমরা তা পান করে থাক। ফলে তোমাদের কেউ বা তাদের কেউ (নেশাগ্রস্ত হয়ে) আপন চাচাত ভাইকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে বস। আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) বলেন, উপস্থিত লোকদের মধ্যে এভাবে আঘাতপ্রাপ্ত এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বলেন, লজ্জায় আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে আঘাতটি গোপন করছিলাম! আমি বললাম, হে আল্লাহর -রাসুল! আমরা কিসে পান করব?
রাসুল (ﷺ) বললেন, রশি দ্বারা মুখবন্ধ চামড়ার পাত্রে। তারা আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আমাদের দেশে ইঁদুরের উপদ্রব বেশী। সেখানে চামড়ার পাত্র অক্ষত রাখা যায় না। নবী (ﷺ) বললেন, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে। রাবী বলেন, নবী (ﷺ) আব্দুল কায়স গোত্রের আশাজ্জ সম্পর্কে বললেন, তোমার মধ্যে দুটি বিশেষ গুণ রয়েছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন (তা হলো) সহিষ্ণুতা ও ধীর স্থিরতা।
* বর্ণনাকারী কাতাদা (রাহঃ) কুতাইয়া এর স্থলে তামার বলেছেন।
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا مَنْ، لَقِيَ الْوَفْدَ الَّذِينَ قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ . قَالَ سَعِيدٌ وَذَكَرَ قَتَادَةُ أَبَا نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ فِي حَدِيثِهِ هَذَا . أَنَّ أُنَاسًا مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنَّا حَىٌّ مِنْ رَبِيعَةَ وَبَيْنَنَا وَبَيْنَكَ كُفَّارُ مُضَرَ وَلاَ نَقْدِرُ عَلَيْكَ إِلاَّ فِي أَشْهُرِ الْحُرُمِ فَمُرْنَا بِأَمْرٍ نَأْمُرُ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا وَنَدْخُلُ بِهِ الْجَنَّةَ إِذَا نَحْنُ أَخَذْنَا بِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ اعْبُدُوا اللَّهَ وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَأَقِيمُوا الصَّلاَةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَصُومُوا رَمَضَانَ وَأَعْطُوا الْخُمُسَ مِنَ الْغَنَائِمِ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ عَنِ الدُّبَّاءِ وَالْحَنْتَمِ وَالْمُزَفَّتِ وَالنَّقِيرِ " . قَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ مَا عِلْمُكَ بِالنَّقِيرِ قَالَ " بَلَى جِذْعٌ تَنْقُرُونَهُ فَتَقْذِفُونَ فِيهِ مِنَ الْقُطَيْعَاءِ - قَالَ سَعِيدٌ أَوْ قَالَ مِنَ التَّمْرِ - ثُمَّ تَصُبُّونَ فِيهِ مِنَ الْمَاءِ حَتَّى إِذَا سَكَنَ غَلَيَانُهُ شَرِبْتُمُوهُ حَتَّى إِنَّ أَحَدَكُمْ - أَوْ إِنَّ أَحَدَهُمْ - لَيَضْرِبُ ابْنَ عَمِّهِ بِالسَّيْفِ " . قَالَ وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ أَصَابَتْهُ جِرَاحَةٌ كَذَلِكَ . قَالَ وَكُنْتُ أَخْبَأُهَا حَيَاءً مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ فَفِيمَ نَشْرَبُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " فِي أَسْقِيَةِ الأَدَمِ الَّتِي يُلاَثُ عَلَى أَفْوَاهِهَا " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَرْضَنَا كَثِيرَةُ الْجِرْذَانِ وَلاَ تَبْقَى بِهَا أَسْقِيَةُ الأَدَمِ . فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَإِنْ أَكَلَتْهَا الْجِرْذَانُ وَإِنْ أَكَلَتْهَا الْجِرْذَانُ وَإِنْ أَكَلَتْهَا الْجِرْذَانُ " . قَالَ وَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأَشَجِّ عَبْدِ الْقَيْسِ " إِنَّ فِيكَ لَخَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللَّهُ الْحِلْمُ وَالأَنَاةُ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর দু'টি সদগুণের প্রশংসা করে বলেন যে, এ দু'টি আল্লাহ তা'আলা পসন্দ করেন। গুণদু'টি হল- الحِلْمُ وَالْأَنَاةُ (সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতা)। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশংসা করলে হযরত আশাজ্জ রাযি. জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ দু'টি গুণ কি আমার মধ্যে নতুন জন্ম নিয়েছে, নাকি আগে থেকেই ছিল? তিনি বললেন, আগে থেকেই ছিল। তখন তিনি এই বলে আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করলেন যে, সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এমন দু'টি স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা তিনি পসন্দ করেন।
হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর চরিত্রে সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতার গুণ বিদ্যমান ছিল। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রশংসা করেছেন। বোঝা গেল এ দু'টি প্রশংসনীয় গুণ, যা প্রত্যেক মুমিনের অর্জন করা উচিত।
এক বর্ণনায় আছে-
الْأَنَاةُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى، وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ
‘ধীরস্থিরতা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (জামে' তিরমিযী: ২০১২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ৫৭০২; তাবারানী, মাকারিমুল আখলাক: ২৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৫৯৮)
বলা হয়ে থাকে, তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের প্ররোচনায় হয়ে থাকে পাঁচটি ক্ষেত্র ছাড়া- অতিথি উপস্থিত হলে খাবার পরিবেশন করা, কেউ মারা গেলে তার দাফন-কাফন করা, কন্যাসন্তান বালেগা হলে তার বিবাহ সম্পন্ন করা, দেনা পরিশোধ করা এবং কোনও গুনাহ হয়ে গেলে তা থেকে তাওবা করা।
প্রকাশ থাকে যে, তাড়াহুড়া নিন্দনীয় দুনিয়াবী কাজে। দীনের কাজে বিলম্ব করতে নেই। সুযোগ হওয়া মাত্রই করে ফেলা উচিত। হযরত উমর রাযি. বলেন, ধীরস্থিরতা সব কাজেই ভালো, তবে আখিরাতের কাজে নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও কাজে তাড়াহুড়া করতে নেই। ধীরস্থিরভাবে করলেই কাজ সুন্দর ও সঠিক হয়।
খ. অন্যের প্রতি সহনশীল থাকা একান্ত কর্তব্য। এটা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে সহায়ক।
হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর চরিত্রে সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতার গুণ বিদ্যমান ছিল। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রশংসা করেছেন। বোঝা গেল এ দু'টি প্রশংসনীয় গুণ, যা প্রত্যেক মুমিনের অর্জন করা উচিত।
এক বর্ণনায় আছে-
الْأَنَاةُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى، وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ
‘ধীরস্থিরতা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (জামে' তিরমিযী: ২০১২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ৫৭০২; তাবারানী, মাকারিমুল আখলাক: ২৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৫৯৮)
বলা হয়ে থাকে, তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের প্ররোচনায় হয়ে থাকে পাঁচটি ক্ষেত্র ছাড়া- অতিথি উপস্থিত হলে খাবার পরিবেশন করা, কেউ মারা গেলে তার দাফন-কাফন করা, কন্যাসন্তান বালেগা হলে তার বিবাহ সম্পন্ন করা, দেনা পরিশোধ করা এবং কোনও গুনাহ হয়ে গেলে তা থেকে তাওবা করা।
প্রকাশ থাকে যে, তাড়াহুড়া নিন্দনীয় দুনিয়াবী কাজে। দীনের কাজে বিলম্ব করতে নেই। সুযোগ হওয়া মাত্রই করে ফেলা উচিত। হযরত উমর রাযি. বলেন, ধীরস্থিরতা সব কাজেই ভালো, তবে আখিরাতের কাজে নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও কাজে তাড়াহুড়া করতে নেই। ধীরস্থিরভাবে করলেই কাজ সুন্দর ও সঠিক হয়।
খ. অন্যের প্রতি সহনশীল থাকা একান্ত কর্তব্য। এটা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে সহায়ক।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: