আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৮৩- তাওহীদ অধ্যায় ও জাহমিয়্যাসহ ভ্রান্ত দলগুলোর অপনোদন

হাদীস নং: ৭০১২
আন্তর্জাতিক নং: ৭৫২০
৩১৪১. নির্দেশের মাধ্যমে আল্লাহ্ কর্তৃক বান্দাকে স্মরণ করা এবং দু'আ-মিনতি, বার্তা ও বাণী প্রচারের মাধ্যমে বান্দা কর্তৃক আল্লাহকে স্মরণ করা।
আল্লাহ তাআলার বাণীঃ তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব। .........তাদেরকে নূহ্ এর বৃত্তান্ত শোনাও, সে তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায়! আমার অবস্থান ও আল্লাহর নিদর্শন দ্বারা আমার উপদেশ দান তোমাদের কাছে যদি দুঃসহ হয়, তবে আমি তো আল্লাহর উপর নির্ভর করি, তোমরা যাদেরকে শরীক সাব্যস্ত করেছ, তা-সহ তোমাদের কর্তব্য স্থির করে লও, পরে যেন কর্তব্য বিষয়ে তোমাদের কোন সংশয় না থাকে। আমি তো আত্মসমর্পণ কারীদের অন্তর্ভুক্ত......... (১০ঃ ৭১-৭২)। غُمَّةٌ এর অর্থ পেরেশানী, সংকট। মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, اقْضُوا إِلَيَّ এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমাদের মনে যা কিছু আছে। আরবীতে বলা হয়, افْرُقِ اقْضِ তুমি স্পষ্ট করে বল, তবে আমি ফায়সালা দেব।
মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, وَإِنْ أَحَدٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ اسْتَجَارَكَ এর ভাবার্থ হচ্ছে, কোন ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর কাছে এসে তাঁর অথবা কুরআনের বাণী শুনতে চাইলে সে নিরাপদ স্থানে গিয়ে পৌঁছা পর্যন্ত ও আশ্রয়প্রাপ্ত বলে স্বীকৃত। النَّبَأُ الْعَظِيمُ এর অর্থ আল-কুরআন, صَوَابًا এর অর্থ দুনিয়ায় হক (কথ) বলেছে এবং এতে (নেক) আমল করেছে।
অনুচ্ছেদঃ ৩১৪২. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ সুতরাং জেনেশুনে কাউকেও আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করাবে না (২ঃ ২২)। এবং তোমরা তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাতে চাও? তিনি তো জগতসমূহের প্রতিপালক (২ঃ ৯)। এবং তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহ্কে ডাকে না (২৫ঃ ৬৮)। তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবশ্যই ওহী অবতীর্ণ হয়েছে। তুমি কাউকে আল্লাহর শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত। অতএব, তুমি আল্লাহরই ইবাদত কর এবং কৃতজ্ঞ হও। (৩৯ঃ ৬৫, ৬৬) এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইকরিমা (রাহঃ) বলেন, তাদের অধিকাংশ আল্লাহতে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাঁর শরীক স্থির করে (১২ঃ ১০৬)। যদি তাদেরকে তুমি জিজ্ঞাসা কর, আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে কে? তারা বলবে, আল্লাহ! এটিই তাদের বিশ্বাস। অথচ তারা আল্লাহ ছাড়া অন্যের ইবাদত করছে। বান্দার কর্ম ও অর্জন সবই সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। কারণ আল্লাহ ইরশাদ করছেনঃ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا তিনি সমস্ত কিছু পরিমিত সৃষ্টি করেছেন যথাযথ অনুপাতে (২৫ঃ ২)।
মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, আমি ফিরিশতাগণকে প্রেরণ করিনা হক ব্যতীত ....... (১৫ঃ ৮)। এখানে ’হক’ শব্দের অর্থ রিসালাত ও আযাব। সত্যবাদীদের তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করার জন্য (৩৩ঃ ৮)। এখানে صادِقِينَ শব্দের অর্থ মানুষের কাছে যেসব রাসূল আল্লাহর বাণী পৌঁছান। ……এবং আমিই এর সংরক্ষক (১৫ঃ ৯)। আমাদের কাছে রয়েছে এর সংরক্ষণকারিগণ। وَالَّذِي جَاءَ بِالصِّدْقِ যারা সত্য এনেছে (৩৯ঃ ৩৩)। এখানে صدق এর অর্থ কুরআন, صَدَّقَ بِهِ এর অর্থ ঈমানদার। কিয়ামতের দিন ঈমানদার বলবে, আপনি আমাকে যা দিয়েছিলেন, আমি সে অনুযায়ী আমল করেছি।
৭০১২। কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর কাছে গুনাহ কোনটি সবচেয়ে বড়? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম এটি অবশ্যই বড় গুনাহ। এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সন্তান তোমার সঙ্গে খাবে এই আশঙ্কায় তাকে হত্যা করা। আমি বললাম এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ এরপর তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা।
بَاب ذِكْرِ اللَّهِ بِالْأَمْرِ وَذِكْرِ الْعِبَادِ بِالدُّعَاءِ وَالتَّضَرُّعِ وَالرِّسَالَةِ وَالْإِبْلَاغِ لِقَوْلِهِ تَعَالَى فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ نُوحٍ إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ إِنْ كَانَ كَبُرَ عَلَيْكُمْ مَقَامِي وَتَذْكِيرِي بِآيَاتِ اللَّهِ فَعَلَى اللَّهِ تَوَكَّلْتُ فَأَجْمِعُوا أَمْرَكُمْ وَشُرَكَاءَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُنْ أَمْرُكُمْ عَلَيْكُمْ غُمَّةً ثُمَّ اقْضُوا إِلَيَّ وَلَا تُنْظِرُونِ فَإِنْ تَوَلَّيْتُمْ فَمَا سَأَلْتُكُمْ مِنْ أَجْرٍ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنْ الْمُسْلِمِينَ غُمَّةٌ هَمٌّ وَضِيقٌ قَالَ مُجَاهِدٌ اقْضُوا إِلَيَّ مَا فِي أَنْفُسِكُمْ يُقَالُ افْرُقْ اقْضِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ وَإِنْ أَحَدٌ مِنْ الْمُشْرِكِينَ اسْتَجَارَكَ فَأَجِرْهُ حَتَّى يَسْمَعَ كَلَامَ اللَّهِ إِنْسَانٌ يَأْتِيهِ فَيَسْتَمِعُ مَا يَقُولُ وَمَا أُنْزِلَ عَلَيْهِ فَهُوَ آمِنٌ حَتَّى يَأْتِيَهُ فَيَسْمَعَ كَلَامَ اللَّهِ وَحَتَّى يَبْلُغَ مَأْمَنَهُ حَيْثُ جَاءَهُ النَّبَأُ الْعَظِيمُ الْقُرْآنُ صَوَابًا حَقًّا فِي الدُّنْيَا وَعَمَلٌ بِهِ
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {فَلاَ تَجْعَلُوا لِلَّهِ أَنْدَادًا} [البقرة: 22]وَقَوْلِهِ جَلَّ ذِكْرُهُ: {وَتَجْعَلُونَ لَهُ أَنْدَادًا ذَلِكَ رَبُّ العَالَمِينَ} [فصلت: 9] ، وَقَوْلِهِ: {وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ} [الفرقان: 68] ، {وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الخَاسِرِينَ، بَلِ اللَّهَ فَاعْبُدْ وَكُنْ مِنَ الشَّاكِرِينَ} [الزمر: 66] وَقَالَ عِكْرِمَةُ: {وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ} [يوسف: 106] ، {وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَهُمْ} [الزخرف: 87] ، وَ {مَنْ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ} «فَذَلِكَ إِيمَانُهُمْ، وَهُمْ يَعْبُدُونَ غَيْرَهُ» وَمَا ذُكِرَ فِي خَلْقِ أَفْعَالِ العِبَادِ وَأَكْسَابِهِمْ " لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا} [الفرقان: 2] وَقَالَ مُجَاهِدٌ: (مَا تَنَزَّلُ المَلاَئِكَةُ إِلَّا بِالحَقِّ) : «بِالرِّسَالَةِ وَالعَذَابِ» {لِيَسْأَلَ الصَّادِقِينَ عَنْ صِدْقِهِمْ} [الأحزاب: 8] : «المُبَلِّغِينَ المُؤَدِّينَ مِنَ الرُّسُلِ» ، {وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ} [يوسف: 12] : «عِنْدَنَا» ، {وَالَّذِي جَاءَ بِالصِّدْقِ} [الزمر: 33] : «القُرْآنُ» {وَصَدَّقَ بِهِ} [الزمر: 33] : " المُؤْمِنُ يَقُولُ يَوْمَ القِيَامَةِ: هَذَا الَّذِي أَعْطَيْتَنِي عَمِلْتُ بِمَا فِيهِ "
7520 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُرَحْبِيلَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَيُّ الذَّنْبِ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ؟ قَالَ: «أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا، وَهُوَ خَلَقَكَ» ، قُلْتُ: إِنَّ ذَلِكَ لَعَظِيمٌ، قُلْتُ: ثُمَّ أَيُّ؟ قَالَ: «ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ تَخَافُ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ» ، قُلْتُ: ثُمَّ أَيُّ؟ قَالَ: «ثُمَّ أَنْ تُزَانِيَ بِحَلِيلَةِ جَارِكَ»
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৭০১২ | মুসলিম বাংলা