আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৭২- কাফের ও ধর্মত্যাগী বিদ্রোহীদের বিবরণ

হাদীস নং: ৬৩৭০
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮৩০
২৮৫০. যিনার কারণে বিবাহিতা গর্ভবতী মহিলাকে রজম করা।
৬৩৭০। আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাজিরদের কতক লোককে পড়াতাম। তাঁদের মধ্যে আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ) অন্যতম ছিলেন। একদা আমি তার মিনাস্থ বাড়িতে ছিলাম। তখন তিনি উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) এর সাথে তার সর্বশেষ হজ্জে রয়েছেন। ইত্যবসরে আব্দুর রহমান (রাযিঃ) আমার কাছে ফিরে এসে বললেন, যদি আপনি ঐ লোকটিকে দেখতেন, যে লোকটি আজ আমীরুল মু’মিনীনের কাছে এসেছিল এবং বলেছিল, হে আমীরুল মু’মিনীন! অমুক ব্যক্তির ব্যাপারে আপনার কিছু করার আছে কি? যে লোকটি বলে থাকে যে, যদি উমর মারা যান তাহলে অবশ্যই অমুকের হাতে বায়আত করব। আল্লাহর কসম! আবু বকরের বায়আত আকম্মিক ব্যাপার ছিল, ফলে তা সংঘটিত হয়ে যায়। এ কথা শুনে তিনি ভীষণভাবে রাগাম্বিত হলেন। তারপর বললেনঃ ইনশাআল্লাহ সন্ধায় আমি অবশ্যই লোকদের মধ্যে দাঁড়াব আর তাদেরকে ঐসব লোকের থেকে সতর্ক করে দিব, যারা তাদের বিষয়াদি আত্মসাৎ করতে চায়। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি এমনটা যেন না করেন। কেননা, হজ্জের মওসুম নিম্নস্তরের ও নির্বোধ লোকদেরকেও একত্রিত করে। আর এরাই আপনার নৈকট্যের সুযোগে প্রাধান্য বিস্তার করে ফেলবে, যখন আপনি লোকদের মধ্যে দাঁড়াবেন। আমার ভয় হচ্ছে, আপনি যখন কোন কথা বলবেন তখন তা সর্বত্র দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। আর তারা তা যথাযথভাবে আয়ত্ত করতে পারবে না। আর যথাযথ স্থানে রাখতেও পারবে না। সুতরাং মদীনা পৌছা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আর তা হল হিজরত ও সুন্নতের কেন্দ্রস্থল। ফলে তথায় জ্ঞানী ও সুধীবর্গের সঙ্গে মিলিত হবেন। আর যা বলার তা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারবেন। জ্ঞানী ব্যক্তিরা আপনার কথাকে যথাযথভাবে আয়ত্ত করে নেবে ও যথাস্থানে ব্যবহার করবে। তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, জেনে রেখো, আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ আমি মদীনা পৌছার পর সর্বপ্রথম এ কাজটি নিয়ে ভাষনের জন্য দাঁড়াব। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমরা যিলহজ্ব মাসের শেষ দিকে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করলাম। যখন জুমআর দিন এল, সূর্য অস্তগমনের সাথে সাথে আমি মসজিদে গমন করলাম। পৌছে দেখলাম, সাঈদ ইবনে যায়দ ইবনে আমর ইবনে নুফাইল (রাযিঃ) মিম্বরের গোড়ায় বসে আছেন, আমিও তার পার্শ্বে এমনভাবে বসলাম যেন আমার হাঁটু তার হাঁটুকে স্পর্শ করছে। অল্পক্ষণের মধ্যে উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) বেরিয়ে আসলেন। আমি যখন তাকে সামনের দিকে আসতে দেখলাম তখন সাঈদ ইবনে যায়দ ইবনে আমর ইবনে নুফাইলকে বললাম, আজ সন্ধায় অবশ্যই তিনি এমন কিছু কথা বলবেন, যা তিনি খলীফা হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত বলেননি। কিন্তু তিনি আমার কথাটি উড়িয়ে দিলেন এবং বললেন, আমার মনে হয় না যে, তিনি এমন কোন কথা বলবেন, যা এর পূর্বে বলেননি। এরপর উমর (রাযিঃ) মিম্বরের উপরে বসলেন। যখন মুয়াযযিনগণ আযান থেকে ফারিগ হয়ে গেলেন তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, আম্মাবা'দ! আজ আমি তোমাদেরকে এমন কথা বলতে চাই, যা আমারই বলা কর্তব্য। হয়তবা কথাটি আমার মৃত্যুর নিকটবর্তী হচ্ছে, তাই যে ব্যক্তি কথাগুলো যথাযথভাবে অনুধাবন করে সংরক্ষণ করবে, সে যেন কথাগুলো ঐসব স্থানে পৌছিয়ে দেয় যেথায় তার সওয়ারী পৌছবে। আর যে ব্যক্তি কথা শুনেছে, কিন্তু যথাযথভাবে অনুধাবন করতে আশঙ্কাবোধ করছে, আমি তার জন্য আমার ওপর মিথ্যা আরোপ করা ঠিক মনে করছি না।
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহাম্মাদ (ﷺ) কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আর তার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এবং আল্লাহর অবতীর্ণ বিষয়াদির একটি হচ্ছে রজমের আয়াত। আমরা সে আয়াত পড়েছি, অনুধাবন করেছি, আয়ত্ত করেছি। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) রজম করেছেন। আমরাও তার পরে রজম করেছি।
আমি আশঙ্কা করছি যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পর কোন ব্যক্তি এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহর কসম! আমরা আল্লাহর কিতাবে রজমের আয়াত পাচ্ছি না। ফলে তারা এমন একটি ফরয বর্জনের দরুন পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির উপর রজম অবধারিত, যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার পর যিনা করবে, চাই সে পুরুষ হোক বা নারী। যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি বিদ্যমান থাকবে।
অনুরূপভাবে আমরা আল্লাহর কিতাবে এও পড়তাম যে, তোমরা তোমাদের বাপ-দাদা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না। এটি তোমাদের জন্য কুফরী যে, তোমরা স্বীয় বাপ-দাদা থেকে বিমুখ হবে। অথবা বলেছেন, এটি তোমাদের জন্য কুফরী যে, স্বীয় বাবা-দাদা থেকে বিমুখ হবে। জেনে রেখো! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা আমার সীমাতিরিক্ত প্রশংসা করো না, যেভাবে ঈসা ইবনে মারয়ামের সীমাতিরিক্ত প্রশংসা করা হয়েছে। তোমরা বল, আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।
এরপর আমার কাছে এ কথা পৌঁছেছে যে, তোমাদের কেউ এ কথা বলছে যে, আল্লাহর কসম, যদি উমর মৃত্যুবরণ করেন তাহলে আমি অমুকের হাতে বায়আত করব। কেউ যেন এ কথা বলে ধোকায় পতিত না হয় যে, আবু বকর এর বায়আত আকম্মিক ঘটনা ছিল, ফলে তা সংঘটিত হয়ে গেছে। জেনে রেখো, তা অবশ্যই এরূপ ছিল। তবে আল্লাহ আকম্মিক বায়আতের ক্ষতি প্রতিহত করেছেন। সফর করে সওয়ারীসমূহের ঘাড় ভেঙ্গে পড়ে এমন স্থান পর্যন্তেরও অধিবাসীদের মধ্যে আবু বকরের ন্যায় কে আছে? যে কেউ মুসলমানদের পরামর্শ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তির হাতে বায়আত করবে, তার অনুসরণ করা যাবে না এবং ঐ ব্যক্তিরও না, যে তার অনুসরণ করবে। কেননা উভয়েরই হত্যার শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যখন আল্লাহ তাঁর নবী (ﷺ) কে ওফাত দান করেন, তখন আবু বকর (রাযিঃ) ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। অবশ্য আনসারগণ আমাদের বিরোধিতা করেছেন। তারা সবাই বনী সাঈদার চত্বরে সমবেত হয়েছেন। আমাদের থেকে বিমুখ হয়ে আলী, যুবাইর ও তাদের সাথীরাও বিরোধিতা করেছেন। অপরদিকে মুহাজিরগণ আবু বকরের কাছে সমবেত হলেন। তখন আমি আবু বকরকে বললাম, হে আবু বকর! আমাদেরকে নিয়ে আমাদের ঐ আনসার ভাইদের কাছে চলুন। আমরা তাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। যখন আমরা তাদের নিকটবর্তী হলাম তখন আমাদের সাথে তাদের দু’জন পূণ্যবান ব্যক্তির সাক্ষাত হল। তারা উভয়েই ঐ বিষয়ের আলোচনা করলেন যে বিষয়ে লোকেরা ঐকমত্য করছিল। এরপর তারা বললেন, হে মুহাজির দল! আপনারা কোথায় যাচ্ছেন? তখন আমরা বললাম, আমরা আমাদের ঐ আনসার ভাইদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি। তারা বললেন, না, আপনাদের তাদের নিকট না যাওয়াই উচিত। আপনারা আপনাদের বিষয় সমাপ্ত করে নিন। তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই তাদের কাছে যাব। আমরা চললাম, অবশেষে বনী সাঈদার চত্বরে তাদের কাছে এলাম। আমরা দেখতে পেলাম তাদের মাঝখানে এক ব্যক্তি বস্ত্রাবৃত অবস্থায় রয়েছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এই ব্যক্তি কে? তারা জবাব দিল, ইনি সা’দ ইবনে উবাদা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওনার কি হয়েছে? তারা বলল, তিনি জ্বরাক্রান্ত। আমরা কিছুক্ষণ বসার পরই তাদের খতীব উঠে দাঁড়িয়ে কালিমায়ে শাহাদাত পড়লেন এবং আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, আম্মাবা'দ। আমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী ও ইসলামের সেনাদল এবং তোমরা হে মুহাজির দল! একটি নগণ্য দল মাত্র; যে দলটি তোমাদের গোত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছেছে, অথচ এরা এখন আমাদেরকে মূল থেকে সরিয়ে দিতে এবং খিলাফত থেকে বঞ্চিত করে দিতে চাচ্ছে। যখন তিনি নীরব হয়ে গেলেন, তখন আমি কিছু বলার মনস্থির করলাম। আর আমি পূর্ব থেকেই কিছু কথা সাজিয়ে রেখেছিলাম, যা আমার কাছে ভাল লাগছিল। আমি ইচ্ছা করলাম যে, আবু বকর (রাযিঃ)-এর সামনে কথাটি পেশ করব। আমি তার ভাষণ থেকে সৃষ্ট রাগকে কিছুটা প্রশমিত করতে মনস্থ করলাম। আমি যখন কথা বলতে চাইলাম, তখন আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, তুমি থাম। আমি তাকে রাগাম্বিত করাটা পছন্দ করলাম না। তাই আবু বকর (রাযিঃ) কথা বললেন, আর তিনি ছিলেন আমার চেয়ে সহনশীল ও গম্ভীর। আল্লাহর কসম! তিনি এমন কোন কথা বাদ দেননি, যা আমি সাজিয়ে রেখেছিলাম। অথচ তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অনুরূপ বরং তার চেয়েও উত্তম কথা বললেন। অবশেষে তিনি কথা বন্ধ করে দিলেন, এরপর আবার বললেন, তোমরা তোমাদের ব্যাপারে যেসব উত্তম কাজের কথা উল্লেখ করেছ, বস্তুত তোমরা এর উপযুক্ত। তবে খিলাফতের ব্যাপারটি কেবল এই কুরাইশ বংশের জন্য নির্ধারিত। তারা হচ্ছেন বংশ ও আবাসভূমির দিক দিয়ে সর্বোত্তম আরব। আর আমি এ দু’জনের থেকে যেকোনো একজনকে তোমাদের জন্য মনোনয়ন করলাম। তাই তোমাদের ইচ্ছা যেকোন একজনের হাতে বায়আত করে নাও। এরপর আমার ও আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ (রাযিঃ) এর হাত ধরলেন। তিনি আমাদের মাঝখানেই বসা ছিলেন। আমি তার এ কথা ছাড়া যত কথা তিনি বলেছেন কোনোটাকে অপছন্দ করিনি। আল্লাহর কসম! আবু বকর যে জাতির মধ্যে বর্তমান রয়েছেন, সে জাতির উপর আমি শাসক নিযুক্ত হওয়ার চেয়ে এটাই শ্রেয় যে, আমাকে পেশ করে আমার ঘাড় ভেঙ্গে দেয়া হবে, ফলে তা আমাকে কোন গুনাহের নিকটবর্তী করতে পারবে না। হে আল্লাহ! হয়ত আমার আত্মা আমার মৃত্যুর সময় এমন কিছু আকাঙ্ক্ষা করতে পারে, যা এখন আমি পাচ্ছি না। তখন আনসারদের এক ব্যক্তি বলে উঠল, আমি এ জাতির অভিজ্ঞ ও ক্ষেত্রজ্ঞ এবং শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট খেজুর বৃক্ষের ন্যায় সম্ভ্রান্ত। হে কুরাইশগণ! আমাদের থেকে হবে এক আমীর আর তোমাদের থেকে হবে এক আমীর। এ পর্যায়ে অনেক কথা শুনে হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল। আমি এ মতবিরোধের দরুন শংকিত হয়ে পড়লাম। তাই আমি বললাম, হে আবু বকর! আপনি হাত বাড়ান। তিনি হাত বাড়ালেন। আমি তাঁর হাতে বায়আত করলাম। মুহাজিরগণও তাঁর হাতে বায়আত করলেন। তারপর আনসারগণও তার হাতে বায়আত করলেন। আর আমরা সা’দ ইবনে উবাদা (রাযিঃ) এর দিকে অগ্রসর হলাম। তখন তাদের এক ব্যক্তি বলে উঠল, তোমরা সা’দ ইবনে উবাদাকে জানে মেরে ফেলেছ। তখন আমি বললাম, আল্লাহ সা’দ ইবনে উবাদাকে হত্যা করেছেন। উমর (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা সে সময়কার জরুরী বিষয়াদির মধ্যে আবু বকরের বায়আতের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছুকে মনে করিনি। আমাদের ভয় ছিল যে, যদি বায়আতের কাজ অসম্পূর্ণ থাকে, আর আমরা এ জাতি থেকে পৃথক হয়ে যাই তাহলে তারা আমাদের পরে তাদের কারো হাতে বায়আত করে নিতে পারে। তারপর হয়ত আমাদেরকে নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের অনুসরণ করতে হত, না হয় তাদের বিরোধিতা করতে হত, ফলে তা মারাত্মক ফ্যাসাদের কারণ হয়ে দাঁড়াত। অতএব, যে ব্যক্তি মুসলমানদের পরামর্শ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তির হাতে বায়আত করবে, তার অনুসরণ করা যাবে না। আর ঐ ব্যক্তিরও না, যে তার অনুসরণ করবে। কেননা, উভয়েরই হত্যায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
باب رَجْمِ الْحُبْلَى مِنَ الزِّنَا إِذَا أَحْصَنَتْ
6830 - حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: كُنْتُ أُقْرِئُ رِجَالًا مِنَ المُهَاجِرِينَ، مِنْهُمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ، فَبَيْنَمَا أَنَا فِي مَنْزِلِهِ بِمِنًى، وَهُوَ عِنْدَ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ، فِي آخِرِ حَجَّةٍ حَجَّهَا، إِذْ رَجَعَ إِلَيَّ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَقَالَ: لَوْ رَأَيْتَ رَجُلًا أَتَى أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ اليَوْمَ، فَقَالَ: يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ، هَلْ لَكَ فِي فُلاَنٍ؟ يَقُولُ: لَوْ قَدْ مَاتَ عُمَرُ لَقَدْ بَايَعْتُ فُلاَنًا، فَوَاللَّهِ مَا كَانَتْ بَيْعَةُ أَبِي بَكْرٍ إِلَّا فَلْتَةً فَتَمَّتْ، فَغَضِبَ عُمَرُ، ثُمَّ قَالَ: إِنِّي إِنْ شَاءَ اللَّهُ لَقَائِمٌ العَشِيَّةَ فِي النَّاسِ، فَمُحَذِّرُهُمْ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ يُرِيدُونَ أَنْ يَغْصِبُوهُمْ أُمُورَهُمْ. قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ: فَقُلْتُ: يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ لاَ تَفْعَلْ، فَإِنَّ المَوْسِمَ يَجْمَعُ رَعَاعَ النَّاسِ وَغَوْغَاءَهُمْ، فَإِنَّهُمْ هُمُ الَّذِينَ يَغْلِبُونَ عَلَى قُرْبِكَ حِينَ تَقُومُ فِي النَّاسِ، وَأَنَا أَخْشَى أَنْ تَقُومَ فَتَقُولَ مَقَالَةً يُطَيِّرُهَا عَنْكَ كُلُّ مُطَيِّرٍ، وَأَنْ لاَ يَعُوهَا، وَأَنْ لاَ يَضَعُوهَا عَلَى مَوَاضِعِهَا، فَأَمْهِلْ حَتَّى تَقْدَمَ المَدِينَةَ، فَإِنَّهَا دَارُ الهِجْرَةِ وَالسُّنَّةِ، فَتَخْلُصَ بِأَهْلِ الفِقْهِ وَأَشْرَافِ النَّاسِ، فَتَقُولَ مَا قُلْتَ مُتَمَكِّنًا، فَيَعِي أَهْلُ العِلْمِ مَقَالَتَكَ، وَيَضَعُونَهَا عَلَى مَوَاضِعِهَا. فَقَالَ عُمَرُ: أَمَا وَاللَّهِ - إِنْ شَاءَ اللَّهُ - لَأَقُومَنَّ بِذَلِكَ أَوَّلَ مَقَامٍ أَقُومُهُ بِالْمَدِينَةِ. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: فَقَدِمْنَا المَدِينَةَ فِي عُقْبِ ذِي الحَجَّةِ، فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ الجُمُعَةِ عَجَّلْتُ [ص:169] الرَّوَاحَ حِينَ زَاغَتِ الشَّمْسُ، حَتَّى أَجِدَ سَعِيدَ بْنَ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ جَالِسًا إِلَى رُكْنِ المِنْبَرِ، فَجَلَسْتُ حَوْلَهُ تَمَسُّ رُكْبَتِي رُكْبَتَهُ، فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ خَرَجَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ، فَلَمَّا رَأَيْتُهُ مُقْبِلًا، قُلْتُ لِسَعِيدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ: لَيَقُولَنَّ العَشِيَّةَ مَقَالَةً لَمْ يَقُلْهَا مُنْذُ اسْتُخْلِفَ، فَأَنْكَرَ عَلَيَّ وَقَالَ: مَا عَسَيْتَ أَنْ يَقُولَ مَا لَمْ يَقُلْ قَبْلَهُ، فَجَلَسَ عُمَرُ عَلَى المِنْبَرِ، فَلَمَّا سَكَتَ المُؤَذِّنُونَ قَامَ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنِّي قَائِلٌ لَكُمْ مَقَالَةً قَدْ قُدِّرَ لِي أَنْ أَقُولَهَا، لاَ أَدْرِي لَعَلَّهَا بَيْنَ يَدَيْ أَجَلِي، فَمَنْ عَقَلَهَا وَوَعَاهَا فَلْيُحَدِّثْ بِهَا حَيْثُ انْتَهَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ، وَمَنْ خَشِيَ أَنْ لاَ يَعْقِلَهَا فَلاَ أُحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَكْذِبَ عَلَيَّ: إِنَّ اللَّهَ بَعَثَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالحَقِّ، وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الكِتَابَ، فَكَانَ مِمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ آيَةُ الرَّجْمِ، فَقَرَأْنَاهَا وَعَقَلْنَاهَا وَوَعَيْنَاهَا، رَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ، فَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ: وَاللَّهِ مَا نَجِدُ آيَةَ الرَّجْمِ فِي كِتَابِ اللَّهِ، فَيَضِلُّوا بِتَرْكِ فَرِيضَةٍ أَنْزَلَهَا اللَّهُ، وَالرَّجْمُ فِي كِتَابِ اللَّهِ حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى إِذَا أُحْصِنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ، إِذَا قَامَتِ البَيِّنَةُ، أَوْ كَانَ الحَبَلُ أَوِ الِاعْتِرَافُ، ثُمَّ إِنَّا كُنَّا نَقْرَأُ فِيمَا نَقْرَأُ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ: أَنْ لاَ تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ، فَإِنَّهُ كُفْرٌ بِكُمْ أَنْ تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ، أَوْ إِنَّ كُفْرًا بِكُمْ أَنْ تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ. أَلاَ ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " لاَ تُطْرُونِي كَمَا أُطْرِيَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ، وَقُولُوا: عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ " ثُمَّ إِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ قَائِلًا مِنْكُمْ يَقُولُ: وَاللَّهِ لَوْ قَدْ مَاتَ عُمَرُ بَايَعْتُ فُلاَنًا، فَلاَ يَغْتَرَّنَّ امْرُؤٌ أَنْ يَقُولَ: إِنَّمَا كَانَتْ بَيْعَةُ أَبِي بَكْرٍ فَلْتَةً وَتَمَّتْ، أَلاَ وَإِنَّهَا قَدْ كَانَتْ كَذَلِكَ، وَلَكِنَّ اللَّهَ وَقَى شَرَّهَا، وَلَيْسَ مِنْكُمْ مَنْ تُقْطَعُ الأَعْنَاقُ إِلَيْهِ مِثْلُ أَبِي بَكْرٍ، مَنْ بَايَعَ رَجُلًا عَنْ غَيْرِ مَشُورَةٍ مِنَ المُسْلِمِينَ فَلاَ يُبَايَعُ هُوَ وَلاَ الَّذِي بَايَعَهُ، تَغِرَّةً أَنْ يُقْتَلاَ، وَإِنَّهُ قَدْ كَانَ مِنْ خَبَرِنَا حِينَ تَوَفَّى اللَّهُ نَبِيَّهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ الأَنْصَارَ خَالَفُونَا، وَاجْتَمَعُوا بِأَسْرِهِمْ فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ، وَخَالَفَ عَنَّا عَلِيٌّ وَالزُّبَيْرُ وَمَنْ مَعَهُمَا، وَاجْتَمَعَ المُهَاجِرُونَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ، فَقُلْتُ لِأَبِي بَكْرٍ: يَا أَبَا بَكْرٍ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى إِخْوَانِنَا هَؤُلاَءِ مِنَ الأَنْصَارِ، فَانْطَلَقْنَا نُرِيدُهُمْ، فَلَمَّا دَنَوْنَا مِنْهُمْ، لَقِيَنَا مِنْهُمْ رَجُلاَنِ صَالِحَانِ، فَذَكَرَا مَا تَمَالَأَ عَلَيْهِ القَوْمُ، فَقَالاَ: أَيْنَ تُرِيدُونَ يَا مَعْشَرَ المُهَاجِرِينَ؟ فَقُلْنَا: نُرِيدُ إِخْوَانَنَا هَؤُلاَءِ مِنَ الأَنْصَارِ، فَقَالاَ: لاَ عَلَيْكُمْ أَنْ لاَ تَقْرَبُوهُمْ، اقْضُوا أَمْرَكُمْ، فَقُلْتُ: وَاللَّهِ لَنَأْتِيَنَّهُمْ، فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَاهُمْ فِي [ص:170] سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ، فَإِذَا رَجُلٌ مُزَمَّلٌ بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِمْ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالُوا: هَذَا سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ، فَقُلْتُ: مَا لَهُ؟ قَالُوا: يُوعَكُ، فَلَمَّا جَلَسْنَا قَلِيلًا تَشَهَّدَ خَطِيبُهُمْ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَنَحْنُ أَنْصَارُ اللَّهِ وَكَتِيبَةُ الإِسْلاَمِ، وَأَنْتُمْ مَعْشَرَ المُهَاجِرِينَ رَهْطٌ، وَقَدْ دَفَّتْ دَافَّةٌ مِنْ قَوْمِكُمْ، فَإِذَا هُمْ يُرِيدُونَ أَنْ يَخْتَزِلُونَا مِنْ أَصْلِنَا، وَأَنْ يَحْضُنُونَا مِنَ الأَمْرِ. فَلَمَّا سَكَتَ أَرَدْتُ أَنْ أَتَكَلَّمَ، وَكُنْتُ قَدْ زَوَّرْتُ مَقَالَةً أَعْجَبَتْنِي أُرِيدُ أَنْ أُقَدِّمَهَا بَيْنَ يَدَيْ أَبِي بَكْرٍ، وَكُنْتُ أُدَارِي مِنْهُ بَعْضَ الحَدِّ، فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَتَكَلَّمَ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ: عَلَى رِسْلِكَ، فَكَرِهْتُ أَنْ أُغْضِبَهُ، فَتَكَلَّمَ أَبُو بَكْرٍ فَكَانَ هُوَ أَحْلَمَ مِنِّي وَأَوْقَرَ، وَاللَّهِ مَا تَرَكَ مِنْ كَلِمَةٍ أَعْجَبَتْنِي فِي تَزْوِيرِي، إِلَّا قَالَ فِي بَدِيهَتِهِ مِثْلَهَا أَوْ أَفْضَلَ مِنْهَا حَتَّى سَكَتَ، فَقَالَ: مَا ذَكَرْتُمْ فِيكُمْ مِنْ خَيْرٍ فَأَنْتُمْ لَهُ أَهْلٌ، وَلَنْ يُعْرَفَ هَذَا الأَمْرُ إِلَّا لِهَذَا الحَيِّ مِنْ قُرَيْشٍ، هُمْ أَوْسَطُ العَرَبِ نَسَبًا وَدَارًا، وَقَدْ رَضِيتُ لَكُمْ أَحَدَ هَذَيْنِ الرَّجُلَيْنِ، فَبَايِعُوا أَيَّهُمَا شِئْتُمْ، فَأَخَذَ بِيَدِي وَبِيَدِ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الجَرَّاحِ، وَهُوَ جَالِسٌ بَيْنَنَا، فَلَمْ أَكْرَهْ مِمَّا قَالَ غَيْرَهَا، كَانَ وَاللَّهِ أَنْ أُقَدَّمَ فَتُضْرَبَ عُنُقِي، لاَ يُقَرِّبُنِي ذَلِكَ مِنْ إِثْمٍ، أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَتَأَمَّرَ عَلَى قَوْمٍ فِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ، اللَّهُمَّ إِلَّا أَنْ تُسَوِّلَ إِلَيَّ نَفْسِي عِنْدَ المَوْتِ شَيْئًا لاَ أَجِدُهُ الآنَ. فَقَالَ قَائِلٌ مِنَ الأَنْصَارِ: أَنَا جُذَيْلُهَا المُحَكَّكُ، وَعُذَيْقُهَا المُرَجَّبُ، مِنَّا أَمِيرٌ، وَمِنْكُمْ أَمِيرٌ، يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ. فَكَثُرَ اللَّغَطُ، وَارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ، حَتَّى فَرِقْتُ مِنَ الِاخْتِلاَفِ، فَقُلْتُ: ابْسُطْ يَدَكَ يَا أَبَا بَكْرٍ، فَبَسَطَ يَدَهُ فَبَايَعْتُهُ، وَبَايَعَهُ المُهَاجِرُونَ ثُمَّ بَايَعَتْهُ الأَنْصَارُ. وَنَزَوْنَا عَلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، فَقَالَ قَائِلٌ مِنْهُمْ: قَتَلْتُمْ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ، فَقُلْتُ: قَتَلَ اللَّهُ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ، قَالَ عُمَرُ: وَإِنَّا وَاللَّهِ مَا وَجَدْنَا فِيمَا حَضَرْنَا مِنْ أَمْرٍ أَقْوَى مِنْ مُبَايَعَةِ أَبِي بَكْرٍ، خَشِينَا إِنْ فَارَقْنَا القَوْمَ وَلَمْ تَكُنْ بَيْعَةٌ: أَنْ يُبَايِعُوا رَجُلًا مِنْهُمْ بَعْدَنَا، فَإِمَّا بَايَعْنَاهُمْ عَلَى مَا لاَ نَرْضَى، وَإِمَّا نُخَالِفُهُمْ فَيَكُونُ فَسَادٌ، فَمَنْ بَايَعَ رَجُلًا عَلَى غَيْرِ مَشُورَةٍ مِنَ المُسْلِمِينَ، فَلاَ يُتَابَعُ هُوَ وَلاَ الَّذِي بَايَعَهُ، تَغِرَّةً أَنْ يُقْتَلاَ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)