আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়

হাদীস নং: ৬১১৯
আন্তর্জাতিক নং: ৬৫৬৫
৩৪৬২. জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা।
৬১১৯। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা সমস্ত মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন তারা বলবে, আমাদের জন্য আমাদের রবের কাছে যদি কেউ শাফাআত করত, যা এ স্থান থেকে আমাদের উদ্ধার করত। তখন তারা সকলেই আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, আপনি ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তাআলা স্বহস্তে সৃষ্টি করেছেন। আপনার মাঝে নিজে থেকে রূহ ফুঁকে দিয়েছেন এবং ফিরিশতাদের হুকুম করেছেন; তারা আপনাকে সিজদা করেছে। অতএব আপনি আমাদের জন্য আমাদের প্রভুর কাছে শাফাআত করুন। তখন তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই এবং স্বীয় ভূলের কথা উল্লেখ করবেন। এরপর বলবেন, তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও- যাকে আল্লাহ প্রথম রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেছেন।
তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় ভূলের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা বরং ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যাকে আল্লাহ তাআলা খলীলরূপে গ্রহণ করেছেন। অতঃপর তারা তার কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় ভূলের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা মুসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যার সঙ্গে আল্লাহ তাআলা কথা বলেছেন। তখন তারা তার কাছে আসবে। তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই এবং স্বীয় ভূলের কথা উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেনঃ তোমরা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও।
তারা তার কাছে আসবে। তখন তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা বরং মুহাম্মাদ (ﷺ) এর কাছে চলে যাও। তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।
তখন তারা সকলেই আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে অনুমতি চাইব। যখনই আমি আল্লাহ তাআলাকে দেখতে পাব, তখন সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ তাআলার যতক্ষণ ইচ্ছা আমাকে এ অবস্থায় রাখবেন। এরপর আমাকে বলা হবে, তোমার মাথা উঠাও। সওয়াল কর, তোমাকে দেওয়া হবে। বল; তোমার কথা শ্রবণ করা হবে। শাফাআত কর; তোমার শাফাআত কবুল করা হবে। তখন আমি মাথা উত্তোলন করব এবং আল্লাহ তাআলা আমাকে যে প্রশংসার বাণী শিক্ষা দিয়েছেন, তার মাধ্যমে তাঁর প্রশংসা করব। এরপর আমি সুপারিশ করব, তখন আমার জন্য সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে বেহেশতে প্রবেশ করিয়ে দেব। এরপর আমি পূর্বের ন্যায় পুনঃতৃতীয়বার অথবা চতুর্থবার সিজদায় পড়ে যাব। অবশেষে কুরআনের বাণী মুতাবিক যারা অবধারিত জাহান্নামী, তাদের ব্যতীত আর কেউই জাহান্নামে অবশিষ্ট থাকবে না। কাতাদা (রাহঃ) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তখন বলেছিলেন, চিরস্থায়ী জাহান্নাম যাদের জন্য অবধারিত হয়েছে।
باب صِفَةِ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ
6565 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " يَجْمَعُ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ القِيَامَةِ، فَيَقُولُونَ: لَوِ اسْتَشْفَعْنَا عَلَى رَبِّنَا حَتَّى يُرِيحَنَا مِنْ مَكَانِنَا، فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ: أَنْتَ الَّذِي خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ، وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ، وَأَمَرَ المَلاَئِكَةَ فَسَجَدُوا لَكَ، فَاشْفَعْ لَنَا عِنْدَ رَبِّنَا. فَيَقُولُ: لَسْتُ هُنَاكُمْ، وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ، وَيَقُولُ: ائْتُوا نُوحًا، أَوَّلَ رَسُولٍ بَعَثَهُ اللَّهُ، فَيَأْتُونَهُ فَيَقُولُ: لَسْتُ هُنَاكُمْ، وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ، ائْتُوا إِبْرَاهِيمَ الَّذِي اتَّخَذَهُ اللَّهُ خَلِيلًا، فَيَأْتُونَهُ فَيَقُولُ: لَسْتُ هُنَاكُمْ، وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ، ائْتُوا مُوسَى الَّذِي كَلَّمَهُ اللَّهُ، فَيَأْتُونَهُ فَيَقُولُ: لَسْتُ هُنَاكُمْ، فَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ، ائْتُوا عِيسَى فَيَأْتُونَهُ، فَيَقُولُ: لَسْتُ هُنَاكُمْ، ائْتُوا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ، فَيَأْتُونِي، فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي، فَإِذَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا، فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ يُقَالُ لِي: ارْفَعْ رَأْسَكَ: سَلْ تُعْطَهْ، وَقُلْ يُسْمَعْ، وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ، فَأَرْفَعُ رَأْسِي، فَأَحْمَدُ رَبِّي بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِي، ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا، ثُمَّ أُخْرِجُهُمْ مِنَ النَّارِ، وَأُدْخِلُهُمُ الجَنَّةَ، ثُمَّ أَعُودُ فَأَقَعُ سَاجِدًا مِثْلَهُ فِي الثَّالِثَةِ، أَوِ الرَّابِعَةِ، حَتَّى مَا بَقِيَ فِي النَّارِ إِلَّا مَنْ حَبَسَهُ القُرْآنُ " وَكَانَ قَتَادَةُ، يَقُولُ عِنْدَ هَذَا: «أَيْ وَجَبَ عَلَيْهِ الخُلُودُ»
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৬১১৯ | মুসলিম বাংলা