আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৬৪৬৪
৩৪৩০. আমলে মধ্যমপন্থা অবলম্বন এবং নিয়মিত করা।
৬০২০। আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) ......... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা ঠিকভাবে ও মধ্যমপন্থায় নেক আমল করতে থাক। আর জেনে রাখ যে, তোমাদের কাউকে তার আমল বেহেশতে নেবে না এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশী প্রিয় আমল হলো, যা নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্পই হোক না কেন।

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম 'ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে একটি মূলনীতি হিসেবে বলেন যে, আল্লাহ তা'আলার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমল তাই, যা আমলকারী নিয়মিতভাবে করে। কেননা যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে আমল করে সে ওই ব্যক্তির মত, যে বাদশার দরবারে নিয়মিতভাবে আসা-যাওয়া করে। যে ব্যক্তি কখনও হাজির হয় আবার কখনও গরহাজির থাকে, সে বাদশার অতটা প্রিয় হতে পারে না, যতটা নিয়মিত হাজিরাদাতা হয়ে থাকে। অনুরূপ যে ব্যক্তি নিয়মিত ইবাদত বন্দেগী চালিয়ে যায়, সে যেন মাওলার দরবারের একজন নিয়মিত হাজিরাদাতা। স্বাভাবিকভাবেই সে আল্লাহর বেশি প্রিয়ভাজন হবে। তাছাড়া কোনও ইবাদত কিছুদিন করার পর ছেড়ে দেওয়াটা গরহাজির হয়ে পড়ার মত। এতে কেমন যেন বিমুখতা ও অনীহা ভাব প্রকাশ পায়, যা একরকম বেআদবীও বটে। অনুপস্থিতির সে বেআদবী যাতে না হয়ে যায় এবং ছাওয়াব পাওয়ার সিলসিলা যাতে বন্ধ না হয়, সেজন্য উচিত যতটুকু পরিমাণ আমল নিয়মিত করা যাবে অতটুকুই গ্রহণ করা, তা অল্পই হোক না কেন। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছেঃ-

أحب الأعمال إلى الله أدومها وإن قل

“আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমল তা-ই, যা স্থায়ী হয়, যদিও সে আমল অল্প পরিমাণ হয়। " সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫৮৬১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৭৮২। সুনানে আবু দাউদ, হাদীছ নং ১৩৬৮; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৮৫৬; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৭৬২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪২৪০. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৬৩০৮

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

আল্লাহর কাছে যেহেতু স্থায়ী আমলই বেশি পসন্দনীয়, তাই নফল ইবাদত এতটুকু পরিমাণেই শুরু করা উচিত, যা নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন