রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৬১
ভূমিকা অধ্যায়
অধ্যায় : ৬০ উদারতা ও দানশীলতা প্রসঙ্গ এবং আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কল্যাণকর খাতসমূহে অর্থব্যয় করার ফযীলত
আল্লাহর পথে খরচকারীর জন্য অলৌকিক সাহায্য
হাদীছ নং: ৫৬১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এক ব্যক্তি মরুভূমির উপর দিয়ে চলছিল। এ অবস্থায় সে একখণ্ড মেঘের মধ্যে আওয়াজ শুনতে পেল- অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো। মেঘখণ্ডটি সেখান থেকে সরে গেল। তারপর তার পানি একখণ্ড পাথুরে ভূমিতে ঢেলে দিল। সেই পানির সবটা (ওই বাগানের) নালাসমূহের মধ্য থেকে একটি নালা ধারণ করল। লোকটি ওই পানির অনুসরণ করল। হঠাৎ দেখতে পেল এক ব্যক্তি তার বাগানে দাঁড়িয়ে আছে, যে নিজ বেলচা দিয়ে সেই পানি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিচ্ছে। লোকটি তাকে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! আপনার নাম কী? সে বলল, অমুক, লোকটি মেঘের মধ্যে যে নাম শুনেছিল। সে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! আপনি আমার কাছে আমার নাম জানতে চাচ্ছেন কেন? লোকটি বলল, যেই মেঘ থেকে এই পানি বর্ষিত হয়েছে তাতে আমি আওয়াজ শুনেছি যে, কেউ আপনার নাম নিয়ে বলছে, অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো। তা আপনি এ বাগানে কী করেন? সে বলল, আপনি যখন জানতে চাইলেন তখন বলছি, আমি লক্ষ করি এ বাগানে কী উৎপন্ন হয়। তারপর তার তিনভাগের একভাগ দান করি। তিনভাগের একভাগ আমি ও আমার পরিবারবর্গ খাই। আর তিনভাগের একভাগ এ বাগানে ফিরিয়ে দিই (অর্থাৎ বপন করি)। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম : ২৯৮৪; মুসনাদে আহমাদ: ৭৯৪১; সহীহ ইবন হিব্বান : ৩৩৫৫; বায়হাকী, আস সনানল কবরা : ৭৫১২; শু'আবুল ঈমান : ৩১৩৪)
হাদীছ নং: ৫৬১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এক ব্যক্তি মরুভূমির উপর দিয়ে চলছিল। এ অবস্থায় সে একখণ্ড মেঘের মধ্যে আওয়াজ শুনতে পেল- অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো। মেঘখণ্ডটি সেখান থেকে সরে গেল। তারপর তার পানি একখণ্ড পাথুরে ভূমিতে ঢেলে দিল। সেই পানির সবটা (ওই বাগানের) নালাসমূহের মধ্য থেকে একটি নালা ধারণ করল। লোকটি ওই পানির অনুসরণ করল। হঠাৎ দেখতে পেল এক ব্যক্তি তার বাগানে দাঁড়িয়ে আছে, যে নিজ বেলচা দিয়ে সেই পানি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিচ্ছে। লোকটি তাকে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! আপনার নাম কী? সে বলল, অমুক, লোকটি মেঘের মধ্যে যে নাম শুনেছিল। সে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! আপনি আমার কাছে আমার নাম জানতে চাচ্ছেন কেন? লোকটি বলল, যেই মেঘ থেকে এই পানি বর্ষিত হয়েছে তাতে আমি আওয়াজ শুনেছি যে, কেউ আপনার নাম নিয়ে বলছে, অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো। তা আপনি এ বাগানে কী করেন? সে বলল, আপনি যখন জানতে চাইলেন তখন বলছি, আমি লক্ষ করি এ বাগানে কী উৎপন্ন হয়। তারপর তার তিনভাগের একভাগ দান করি। তিনভাগের একভাগ আমি ও আমার পরিবারবর্গ খাই। আর তিনভাগের একভাগ এ বাগানে ফিরিয়ে দিই (অর্থাৎ বপন করি)। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম : ২৯৮৪; মুসনাদে আহমাদ: ৭৯৪১; সহীহ ইবন হিব্বান : ৩৩৫৫; বায়হাকী, আস সনানল কবরা : ৭৫১২; শু'আবুল ঈমান : ৩১৩৪)
مقدمة الامام النووي
60 - باب الكرم والجود والإنفاق في وجوه الخير ثقةً بالله تعالى
561 - وعنه، عن النبيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي بِفَلاَةٍ مِنَ الأَرْضِ، فَسَمِعَ صَوْتًا في سَحَابَةٍ، اسقِ حَدِيقَةَ فُلانٍ، فَتَنَحَّى ذَلِكَ السَّحَابُ فَأَفْرَغَ مَاءَهُ فِي حَرَّةٍ، فإِذَا شَرْجَةٌ مِنْ تِلْكَ الشِّرَاجِ قَدِ اسْتَوْعَبَت ذَلِكَ الماءَ كُلَّهُ، فَتَتَبَّعَ المَاءَ، فإذَا رَجُلٌ قَائمٌ في حَدِيقَتِهِ يُحَوِّلُ الماءَ بِمسَحَاتِهِ، فَقَالَ لَهُ: يَا عَبْدَ اللهِ، ما اسمُكَ؟ قال: فُلانٌ للاسم الذي سَمِعَ في السَّحابةِ، فقال له: يا عبدَ الله، لِمَ تَسْألُنِي عَنِ اسْمِي؟ فَقَالَ: إنِّي سَمِعْتُ صَوْتًا في السَّحابِ الَّذِي هَذَا مَاؤُهُ، يقولُ: اسْقِ حَدِيقَةَ فُلاَنٍ لاسمِكَ، فَمَا تَصْنَعُ فِيهَا، فَقَالَ: أمَا إذ قلتَ هَذَا، فَإنِّي أَنْظُرُ إِلَى مَا يَخْرُجُ مِنْهَا، فَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثِهِ، وَآكُلُ أنَا وَعِيَالِي ثُلُثًا، وَأَردُّ فِيهَا ثُلُثَهُ». رواه مسلم. (1) [ص:190]
«الحَرَّةُ» الأَرْضُ المُلَبَّسَةُ حِجَارَةً سَوْدَاءَ. وَ «الشَّرْجَةُ» بفتح الشين المعجمة وإسكان الراءِ وبالجيم: هي مَسِيلُ الماءِ.
«الحَرَّةُ» الأَرْضُ المُلَبَّسَةُ حِجَارَةً سَوْدَاءَ. وَ «الشَّرْجَةُ» بفتح الشين المعجمة وإسكان الراءِ وبالجيم: هي مَسِيلُ الماءِ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
যে ব্যক্তি নিজ উপার্জনের একটা অংশ আল্লাহর পথে খরচ করে, তার প্রতি আল্লাহর কেমন রহমতের দৃষ্টি থাকে এবং তিনি কীভাবে গায়েব থেকে তার আয়-রোজগারে সাহায্য করেন ও বরকত দেন, তার একটা দৃষ্টান্ত এ হাদীছে বর্ণিত ঘটনার মধ্যে পাওয়া যায়। এ ঘটনাটি কাল্পনিক নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাল্পনিক কথা বলতেন না। তিনি যা বলতেন, ওহীর ভিত্তিতে বলতেন। সুতরাং তিনি এ হাদীছে একটি বাস্তব ঘটনাই বর্ণনা করেছেন। তিনি কোনও এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছেন যে, সে মরুভূমির উপর দিয়ে চলছিল। সেই ব্যক্তির নাম এ হাদীছে উল্লেখ করা হয়নি। ঘটনা থেকে শিক্ষাগ্রহণের জন্য নাম জানা জরুরিও নয়। তো চলা অবস্থায় সে ব্যক্তি একখণ্ড মেঘের ভেতর থেকে একটা আওয়াজ শুনল। তাতে বলা হচ্ছিল-
اِسْقِ حَدِيقَةَ فُلَانٍ (অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো)। অর্থাৎ সেই মেঘখণ্ডটিকে হুকুম দেওয়া হচ্ছে যে, তুমি অমুকের বাগানে গিয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করো। তোমার ভেতর যে পানি আছে, সেই পানি বাগানটিতে ঢেলে দাও। সম্ভবত এটা সেই ফিরিশতার আওয়াজ ছিল, যাকে মেঘের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছে। এটা আল্লাহ তা'আলার জগৎ পরিচালনার একটা ব্যবস্থা। ফিরিশতাগণ তাঁর কর্মীবাহিনী। একেক ফিরিশতার উপর তিনি একেক কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। মেঘ পরিচালনার দায়িত্বেও তিনি একদল ফিরিশতা নিয়োজিত করে রেখেছেন। তাদের প্রধান ফিরিশতা হচ্ছেন হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম।
এই যে বলা হয়েছে অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো, এ আদেশটি কোনও ফিরিশতাকে লক্ষ্য করেও হতে পারে, আবার মেঘখণ্ডটিকেও লক্ষ্য করে হতে পারে। হয়তো কোনও ফিরিশতাকে হুকুম করা হয়েছে যে, এই মেঘখণ্ডকে তুমি অমুকের বাগান বরাবর নিয়ে যাও এবং এর পানি সেই বাগানে সিঞ্চন করো। অথবা ফিরিশতা মেঘখণ্ডকে বলছে, তুমি অমুকের বাগানে গিয়ে তোমার পানি সিঞ্চন করো। কোন ব্যক্তির বাগানে পানি সিঞ্চনের হুকুম দেওয়া হয়েছে, তার নাম এ হাদীছে নেই। তবে নাম একটি অবশ্যই বলা হয়েছিল, যা পথিক লোকটি শুনতেও পেয়েছিল। সে লক্ষ করে দেখল-
فَتَنَحَّى ذلكَ السَّحابُ، فأفْرَغَ ماءَهُ في حَرَّةٍ (মেঘখণ্ডটি সেখান থেকে সরে গেল। তারপর তার পানি একখণ্ড পাথুরে ভূমিতে ঢেলে দিল)। অর্থাৎ আদেশ অনুযায়ী মেঘের খণ্ডটি আপন স্থান থেকে সরে লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটতে থাকল। অথবা এর অর্থ- আদেশ নিয়ে চলল, যেখানে পানি সিঞ্চন করতে বলা হয়েছে। সে স্থানটি ছিল একটি পাথুরে ভূমি। সেই ভূমিতে মেঘের বৃষ্টি বর্ষিত হল। এতে লোকটির খুব কৌতূহল হল। এভাবে এক গায়েবী আদেশে মেঘ সরে যায় এবং কারও জমিতে গিয়ে তা বর্ষিত হয়, এ তো এক মহাবিস্ময়কর ব্যাপার! কাজেই মনের কৌতূহল মেটানোর জন্য সে ওই জমির দিকে এগিয়ে গেল। গিয়ে কী দেখল?
فإذا شَرْجَةٌ مِن تِلكَ الشِّراجِ قَدِ اسْتَوْعَبَتْ ذلكَ الماءَ كُلَّهُ ‘সেই পানির সবটা (ওই বাগানের) নালাসমূহের মধ্য থেকে একটি নালা ধারণ করল'। অর্থাৎ সেই জমিতে পানি সরবরাহের অনেকগুলো নালা ছিল। তার মধ্য থেকে একটা নালায় বৃষ্টির সবটা পানি জমা হল। তারপর সেই নালার পানি একদিকে বয়ে চলতে লাগল। লোকটি সে পানির অনুসরণ করল। যেতে যেতে এক জায়গায় গিয়ে দেখল এক ব্যক্তি তার জমিতে কোঁদাল চালাচ্ছে আর নালার পানি সেই জমিতে গিয়ে পড়ছে। লোকটি তো বুঝে ফেলল যে, এই ব্যক্তির জন্যই গায়েবের এ ব্যবস্থা। আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যাকে এমন অকল্পনীয়ভাবে সাহায্য করা হয়, নিশ্চয়ই তিনি কোনও কামেল পরহেযগার ব্যক্তি হবেন। কী যেন তার আমল, যাতে খুশি হয়ে আল্লাহ তা'আলা তার জন্য এমন এন্তেজাম করেন। কাজেই তিনি তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন। বললেন-
يَا عَبْدَ اللَّهِ مَا اسْمُكَ؟ (হে আল্লাহর বান্দা! আপনার নাম কী)? আব্দুল্লাহ মানে আল্লাহর বান্দা। নাম না জানা থাকায় আব্দুল্লাহ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। কারও নাম জানা না থাকলে এভাবে সম্বোধন করাই শ্রেয়। কেননা এতে তো কোনও সন্দেহ নেই যে, প্রত্যেকেই আব্দুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর বান্দা। বরং মানুষের জন্য আব্দুল্লাহ উপাধিই সর্বাপেক্ষা সম্মানজনক। নবী-রাসূলগণ নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে প্রথমে যা বলতেন তা ছিল এটাই যে, আমি আব্দুল্লাহ তথা আল্লাহর বান্দা। নাম হিসেবেও এটা সর্বশ্রেষ্ঠ। হাদীছে আব্দুল্লাহ নামকে শ্রেষ্ঠতম নাম বলা হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আব্দুর রহমান নাম।
জিজ্ঞাসার উত্তরে জমির মালিক তার নাম বলল। দেখা গেল এ তো সেই নামই, যা মেঘের আওয়াজের ভেতর শোনা গিয়েছিল। লোকটি বুঝতে পারল মেঘখণ্ডটিকে এই ব্যক্তির জমিতেই পানি সিঞ্চনের হুকুম দেওয়া হয়েছিল।
এভাবে অপরিচিত এক ব্যক্তি খোঁজখবর নিতে চাওয়ায় জমির মালিকেরও মনে কৌতূহল লাগল। কাজেই সেও জানতে চাইল কেন এভাবে তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তখন লোকটি মেঘের ভেতর যে ডাক শুনতে পেয়েছিল এবং তারপর এ পর্যন্ত যা ঘটেছে তা তার কাছে খুলে বলল। তারপর জিজ্ঞেস করল-
فَما تَصْنَعُ فيها؟ (তা আপনি এ বাগানে কী করেন)? অর্থাৎ এ বাগানে যে ফল ও ফসল উৎপন্ন হয়, তা দিয়ে কী করেন? আপনি তা কীভাবে খরচ করেন? এমন কী নেককাজ আপনি তাতে করেন, যে কারণে আপনার প্রতি আল্লাহ তা'আলার এমন করুণাদৃষ্টি এবং এভাবে আপনি গায়েব থেকে তাঁর সাহায্য পাচ্ছেন? এর উত্তরে বাগানের মালিক বলল-
أمَّا إذْ قُلْتَ هذا، فإنِّي أنْظُرُ إلى ما يَخْرُجُ مِنْها، فأتَصَدَّقُ بثُلُثِهِ، وآكُلُ أنا وعِيالِي ثُلُثًا، وأَرُدُّ فيها ثُلُثَهُ ‘আপনি যখন জানতে চাইলেন তখন বলছি, আমি লক্ষ করি এ বাগানে কী উৎপন্ন হয়। তারপর তার তিনভাগের একভাগ দান করি। তিনভাগের একভাগ আমি ও আমার পরিবারবর্গ খাই। আর তিনভাগের একভাগ এ বাগানে ফিরিয়ে দিই (অর্থাৎ বপন করি)'। অর্থাৎ আমি তাতে যা করি তা তো এমনিতে বলার কোনও বিষয় নয় এবং বলা উচিতও নয়, যেহেতু তা কেবলই আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য করা হয়। তারপরও আপনি জিজ্ঞেস করছেন বলে বলছি। এ বাগানে যে ফল ও ফসল উৎপন্ন হয়, আমি তা তিনভাগে ভাগ করি। তার একভাগ আল্লাহর তা'আলার পথে দান-খয়রাত করি।
তিন ভাগের একভাগ দান-খয়রাত করা জরুরি নয়। জমির ফসল থেকে কখনও 'উশর (দশ ভাগের এক ভাগ) এবং কখনও তার অর্ধেক (অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ) পরিমাণ গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা ফরয হয়। আবার কখনও সরকারকর্তৃক যে কর নির্ধারণ করা হয় তা দিলেই যথেষ্ট হয়। এ বিষয়ে ফিকহী কিতাবসমূহে বিস্তারিত আলোচনা আছে। তিন ভাগের এক ভাগ সাধারণভাবে ফরয হয় না। তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তি যে তিন ভাগের এক ভাগ আল্লাহর পথে খরচ করত, তা ছিল মূলত নফল দান- খয়রাত। নিজ প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে আল্লাহ তা'আলার পথে যতবেশি খরচ করা যায়, ততোই লাভ। কারণ তা আখিরাতের জন্য জমা হয়ে থাকে। এ ব্যক্তি ছিল প্রকৃত দীনদার ও সমঝদার। তাই আখিরাতের লাভটাই বেশি বিবেচনা করেছে।
আরেক ভাগ নিজ পরিবারের প্রয়োজনে খরচ করত। নফল দান-খয়রাত অপেক্ষা পরিবারের প্রয়োজনে খরচ করা বেশি জরুরি। কারণ এটা ফরয ও অবশ্যকর্তব্য। সম্ভবত তিন ভাগের একভাগ দ্বারাই ওই ব্যক্তির পারিবারিক প্রয়োজন মিটে যেত।
অবশিষ্ট এক ভাগ রাখত পরবর্তী চাষাবাদের জন্য। এটা ছিল তার সুষ্ঠু বণ্টন। পরবর্তী চাষাবাদের জন্য উৎপন্ন ফসলের আংশিক রেখে দেওয়া চাই। বুদ্ধিমান চাষী তাই করে থাকে। কুরআন মাজীদেও এর উৎসাহ পাওয়া যায়। হযরত ইয়ূসুফ আলাইহিস সালাম মিশরের চাষীদেরকে এরূপ পরামর্শ দিয়েছিলেন। ইরশাদ হয়েছে-
قَالَ تَزْرَعُونَ سَبْعَ سِنِينَ دَأَبًا فَمَا حَصَدتُّمْ فَذَرُوهُ فِي سُنبُلِهِ إِلَّا قَلِيلًا مِّمَّا تَأْكُلُونَ (47)
‘ইয়ূসুফ বলল, তোমরা একাধারে সাত বছর শস্য উৎপন্ন করবে। এ সময়ের ভেতর তোমরা যে শস্য সংগ্রহ করবে তা তার শীষসহ রেখে দিয়ো, অবশ্য যে সামান্য পরিমাণ তোমাদের খাওয়ার কাজে লাগবে (তার কথা আলাদা)।(সূরা ইয়ূসুফ (১২), আয়াত ৪৭)
উল্লেখ্য, হাদীছে বর্ণিত নেককার লোকটির জন্য অলৌকিকভাবে বৃষ্টির পানি দ্বারা যে সেচের ব্যবস্থা করা হল, এটা ছিল তার কারামাত। আল্লাহ তা'আলা তাঁর নেককার বান্দাদের ক্ষেত্রে এরকম অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। পরিভাষায় একে কারামাত বলা হয়। কারামাত সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা জরুরি। কুরআন ও হাদীছ দ্বারা এর সত্যতা প্রমাণিত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার পথে দান-খয়রাত করার উপকার সম্পর্কে ধারণা লাভ হয়।
খ. আরও জানা যায় মেঘ আল্লাহ তা'আলার হুকুমের অধীন। এর জন্য বিশেষ ফিরিশতা নিযুক্ত আছেন। আল্লাহ তা'আলার হুকুম অনুযায়ী সেই ফিরিশতা মেঘ পরিচালনা করে থাকেন।
গ. আল্লাহ তা'আলা যার জন্য ইচ্ছা করেন তার পক্ষে ফিরিশতাদের আওয়াজ শুনতে পাওয়া সম্ভব।
ঘ. যার নাম জানা থাকে না, তাকে আব্দুল্লাহ বা আল্লাহর বান্দা বলে ডাকা উত্তম।
ঙ. কারও বিষয়ে অস্বাভাবিক কিছু নজরে আসলে তার সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া দোষের নয়, বিশেষত তা যদি কারামাত জাতীয় কিছু হয়। কেননা এতে প্রকৃত আল্লাহওয়ালার সন্ধান পাওয়া যায়, যার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারা অনেক বড় সৌভাগ্য।
চ. চাষাবাদসহ যে-কোনও পেশায় উত্তম বন্দোবস্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দীনেরও শিক্ষা।
ছ. নিজ আয়ের একটা অংশ দীনের পথে খরচ করা চাই।
জ. দীনের কাজে খরচ করার জোশে পারিবারিক প্রয়োজন উপেক্ষা করতে নেই। কেননা এটাও শরী'আতের হুকুম, যা অবশ্যপালনীয়।
ঝ. অন্যের উপকার বিবেচনায় নিজের কোনও সৎকর্মের কথা প্রকাশ করা যেতে পারে।
ঞ. আল্লাহওয়ালাদের কারামাত সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা চাই।
اِسْقِ حَدِيقَةَ فُلَانٍ (অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো)। অর্থাৎ সেই মেঘখণ্ডটিকে হুকুম দেওয়া হচ্ছে যে, তুমি অমুকের বাগানে গিয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করো। তোমার ভেতর যে পানি আছে, সেই পানি বাগানটিতে ঢেলে দাও। সম্ভবত এটা সেই ফিরিশতার আওয়াজ ছিল, যাকে মেঘের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছে। এটা আল্লাহ তা'আলার জগৎ পরিচালনার একটা ব্যবস্থা। ফিরিশতাগণ তাঁর কর্মীবাহিনী। একেক ফিরিশতার উপর তিনি একেক কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। মেঘ পরিচালনার দায়িত্বেও তিনি একদল ফিরিশতা নিয়োজিত করে রেখেছেন। তাদের প্রধান ফিরিশতা হচ্ছেন হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম।
এই যে বলা হয়েছে অমুকের বাগানে পানি সিঞ্চন করো, এ আদেশটি কোনও ফিরিশতাকে লক্ষ্য করেও হতে পারে, আবার মেঘখণ্ডটিকেও লক্ষ্য করে হতে পারে। হয়তো কোনও ফিরিশতাকে হুকুম করা হয়েছে যে, এই মেঘখণ্ডকে তুমি অমুকের বাগান বরাবর নিয়ে যাও এবং এর পানি সেই বাগানে সিঞ্চন করো। অথবা ফিরিশতা মেঘখণ্ডকে বলছে, তুমি অমুকের বাগানে গিয়ে তোমার পানি সিঞ্চন করো। কোন ব্যক্তির বাগানে পানি সিঞ্চনের হুকুম দেওয়া হয়েছে, তার নাম এ হাদীছে নেই। তবে নাম একটি অবশ্যই বলা হয়েছিল, যা পথিক লোকটি শুনতেও পেয়েছিল। সে লক্ষ করে দেখল-
فَتَنَحَّى ذلكَ السَّحابُ، فأفْرَغَ ماءَهُ في حَرَّةٍ (মেঘখণ্ডটি সেখান থেকে সরে গেল। তারপর তার পানি একখণ্ড পাথুরে ভূমিতে ঢেলে দিল)। অর্থাৎ আদেশ অনুযায়ী মেঘের খণ্ডটি আপন স্থান থেকে সরে লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটতে থাকল। অথবা এর অর্থ- আদেশ নিয়ে চলল, যেখানে পানি সিঞ্চন করতে বলা হয়েছে। সে স্থানটি ছিল একটি পাথুরে ভূমি। সেই ভূমিতে মেঘের বৃষ্টি বর্ষিত হল। এতে লোকটির খুব কৌতূহল হল। এভাবে এক গায়েবী আদেশে মেঘ সরে যায় এবং কারও জমিতে গিয়ে তা বর্ষিত হয়, এ তো এক মহাবিস্ময়কর ব্যাপার! কাজেই মনের কৌতূহল মেটানোর জন্য সে ওই জমির দিকে এগিয়ে গেল। গিয়ে কী দেখল?
فإذا شَرْجَةٌ مِن تِلكَ الشِّراجِ قَدِ اسْتَوْعَبَتْ ذلكَ الماءَ كُلَّهُ ‘সেই পানির সবটা (ওই বাগানের) নালাসমূহের মধ্য থেকে একটি নালা ধারণ করল'। অর্থাৎ সেই জমিতে পানি সরবরাহের অনেকগুলো নালা ছিল। তার মধ্য থেকে একটা নালায় বৃষ্টির সবটা পানি জমা হল। তারপর সেই নালার পানি একদিকে বয়ে চলতে লাগল। লোকটি সে পানির অনুসরণ করল। যেতে যেতে এক জায়গায় গিয়ে দেখল এক ব্যক্তি তার জমিতে কোঁদাল চালাচ্ছে আর নালার পানি সেই জমিতে গিয়ে পড়ছে। লোকটি তো বুঝে ফেলল যে, এই ব্যক্তির জন্যই গায়েবের এ ব্যবস্থা। আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যাকে এমন অকল্পনীয়ভাবে সাহায্য করা হয়, নিশ্চয়ই তিনি কোনও কামেল পরহেযগার ব্যক্তি হবেন। কী যেন তার আমল, যাতে খুশি হয়ে আল্লাহ তা'আলা তার জন্য এমন এন্তেজাম করেন। কাজেই তিনি তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন। বললেন-
يَا عَبْدَ اللَّهِ مَا اسْمُكَ؟ (হে আল্লাহর বান্দা! আপনার নাম কী)? আব্দুল্লাহ মানে আল্লাহর বান্দা। নাম না জানা থাকায় আব্দুল্লাহ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। কারও নাম জানা না থাকলে এভাবে সম্বোধন করাই শ্রেয়। কেননা এতে তো কোনও সন্দেহ নেই যে, প্রত্যেকেই আব্দুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর বান্দা। বরং মানুষের জন্য আব্দুল্লাহ উপাধিই সর্বাপেক্ষা সম্মানজনক। নবী-রাসূলগণ নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে প্রথমে যা বলতেন তা ছিল এটাই যে, আমি আব্দুল্লাহ তথা আল্লাহর বান্দা। নাম হিসেবেও এটা সর্বশ্রেষ্ঠ। হাদীছে আব্দুল্লাহ নামকে শ্রেষ্ঠতম নাম বলা হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আব্দুর রহমান নাম।
জিজ্ঞাসার উত্তরে জমির মালিক তার নাম বলল। দেখা গেল এ তো সেই নামই, যা মেঘের আওয়াজের ভেতর শোনা গিয়েছিল। লোকটি বুঝতে পারল মেঘখণ্ডটিকে এই ব্যক্তির জমিতেই পানি সিঞ্চনের হুকুম দেওয়া হয়েছিল।
এভাবে অপরিচিত এক ব্যক্তি খোঁজখবর নিতে চাওয়ায় জমির মালিকেরও মনে কৌতূহল লাগল। কাজেই সেও জানতে চাইল কেন এভাবে তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তখন লোকটি মেঘের ভেতর যে ডাক শুনতে পেয়েছিল এবং তারপর এ পর্যন্ত যা ঘটেছে তা তার কাছে খুলে বলল। তারপর জিজ্ঞেস করল-
فَما تَصْنَعُ فيها؟ (তা আপনি এ বাগানে কী করেন)? অর্থাৎ এ বাগানে যে ফল ও ফসল উৎপন্ন হয়, তা দিয়ে কী করেন? আপনি তা কীভাবে খরচ করেন? এমন কী নেককাজ আপনি তাতে করেন, যে কারণে আপনার প্রতি আল্লাহ তা'আলার এমন করুণাদৃষ্টি এবং এভাবে আপনি গায়েব থেকে তাঁর সাহায্য পাচ্ছেন? এর উত্তরে বাগানের মালিক বলল-
أمَّا إذْ قُلْتَ هذا، فإنِّي أنْظُرُ إلى ما يَخْرُجُ مِنْها، فأتَصَدَّقُ بثُلُثِهِ، وآكُلُ أنا وعِيالِي ثُلُثًا، وأَرُدُّ فيها ثُلُثَهُ ‘আপনি যখন জানতে চাইলেন তখন বলছি, আমি লক্ষ করি এ বাগানে কী উৎপন্ন হয়। তারপর তার তিনভাগের একভাগ দান করি। তিনভাগের একভাগ আমি ও আমার পরিবারবর্গ খাই। আর তিনভাগের একভাগ এ বাগানে ফিরিয়ে দিই (অর্থাৎ বপন করি)'। অর্থাৎ আমি তাতে যা করি তা তো এমনিতে বলার কোনও বিষয় নয় এবং বলা উচিতও নয়, যেহেতু তা কেবলই আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য করা হয়। তারপরও আপনি জিজ্ঞেস করছেন বলে বলছি। এ বাগানে যে ফল ও ফসল উৎপন্ন হয়, আমি তা তিনভাগে ভাগ করি। তার একভাগ আল্লাহর তা'আলার পথে দান-খয়রাত করি।
তিন ভাগের একভাগ দান-খয়রাত করা জরুরি নয়। জমির ফসল থেকে কখনও 'উশর (দশ ভাগের এক ভাগ) এবং কখনও তার অর্ধেক (অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ) পরিমাণ গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা ফরয হয়। আবার কখনও সরকারকর্তৃক যে কর নির্ধারণ করা হয় তা দিলেই যথেষ্ট হয়। এ বিষয়ে ফিকহী কিতাবসমূহে বিস্তারিত আলোচনা আছে। তিন ভাগের এক ভাগ সাধারণভাবে ফরয হয় না। তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তি যে তিন ভাগের এক ভাগ আল্লাহর পথে খরচ করত, তা ছিল মূলত নফল দান- খয়রাত। নিজ প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে আল্লাহ তা'আলার পথে যতবেশি খরচ করা যায়, ততোই লাভ। কারণ তা আখিরাতের জন্য জমা হয়ে থাকে। এ ব্যক্তি ছিল প্রকৃত দীনদার ও সমঝদার। তাই আখিরাতের লাভটাই বেশি বিবেচনা করেছে।
আরেক ভাগ নিজ পরিবারের প্রয়োজনে খরচ করত। নফল দান-খয়রাত অপেক্ষা পরিবারের প্রয়োজনে খরচ করা বেশি জরুরি। কারণ এটা ফরয ও অবশ্যকর্তব্য। সম্ভবত তিন ভাগের একভাগ দ্বারাই ওই ব্যক্তির পারিবারিক প্রয়োজন মিটে যেত।
অবশিষ্ট এক ভাগ রাখত পরবর্তী চাষাবাদের জন্য। এটা ছিল তার সুষ্ঠু বণ্টন। পরবর্তী চাষাবাদের জন্য উৎপন্ন ফসলের আংশিক রেখে দেওয়া চাই। বুদ্ধিমান চাষী তাই করে থাকে। কুরআন মাজীদেও এর উৎসাহ পাওয়া যায়। হযরত ইয়ূসুফ আলাইহিস সালাম মিশরের চাষীদেরকে এরূপ পরামর্শ দিয়েছিলেন। ইরশাদ হয়েছে-
قَالَ تَزْرَعُونَ سَبْعَ سِنِينَ دَأَبًا فَمَا حَصَدتُّمْ فَذَرُوهُ فِي سُنبُلِهِ إِلَّا قَلِيلًا مِّمَّا تَأْكُلُونَ (47)
‘ইয়ূসুফ বলল, তোমরা একাধারে সাত বছর শস্য উৎপন্ন করবে। এ সময়ের ভেতর তোমরা যে শস্য সংগ্রহ করবে তা তার শীষসহ রেখে দিয়ো, অবশ্য যে সামান্য পরিমাণ তোমাদের খাওয়ার কাজে লাগবে (তার কথা আলাদা)।(সূরা ইয়ূসুফ (১২), আয়াত ৪৭)
উল্লেখ্য, হাদীছে বর্ণিত নেককার লোকটির জন্য অলৌকিকভাবে বৃষ্টির পানি দ্বারা যে সেচের ব্যবস্থা করা হল, এটা ছিল তার কারামাত। আল্লাহ তা'আলা তাঁর নেককার বান্দাদের ক্ষেত্রে এরকম অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। পরিভাষায় একে কারামাত বলা হয়। কারামাত সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা জরুরি। কুরআন ও হাদীছ দ্বারা এর সত্যতা প্রমাণিত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার পথে দান-খয়রাত করার উপকার সম্পর্কে ধারণা লাভ হয়।
খ. আরও জানা যায় মেঘ আল্লাহ তা'আলার হুকুমের অধীন। এর জন্য বিশেষ ফিরিশতা নিযুক্ত আছেন। আল্লাহ তা'আলার হুকুম অনুযায়ী সেই ফিরিশতা মেঘ পরিচালনা করে থাকেন।
গ. আল্লাহ তা'আলা যার জন্য ইচ্ছা করেন তার পক্ষে ফিরিশতাদের আওয়াজ শুনতে পাওয়া সম্ভব।
ঘ. যার নাম জানা থাকে না, তাকে আব্দুল্লাহ বা আল্লাহর বান্দা বলে ডাকা উত্তম।
ঙ. কারও বিষয়ে অস্বাভাবিক কিছু নজরে আসলে তার সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া দোষের নয়, বিশেষত তা যদি কারামাত জাতীয় কিছু হয়। কেননা এতে প্রকৃত আল্লাহওয়ালার সন্ধান পাওয়া যায়, যার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারা অনেক বড় সৌভাগ্য।
চ. চাষাবাদসহ যে-কোনও পেশায় উত্তম বন্দোবস্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দীনেরও শিক্ষা।
ছ. নিজ আয়ের একটা অংশ দীনের পথে খরচ করা চাই।
জ. দীনের কাজে খরচ করার জোশে পারিবারিক প্রয়োজন উপেক্ষা করতে নেই। কেননা এটাও শরী'আতের হুকুম, যা অবশ্যপালনীয়।
ঝ. অন্যের উপকার বিবেচনায় নিজের কোনও সৎকর্মের কথা প্রকাশ করা যেতে পারে।
ঞ. আল্লাহওয়ালাদের কারামাত সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)