রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৩১
ভূমিকা অধ্যায়
অধ্যায় : ৫৭ অল্পেতুষ্টি, অন্যের কাছে চাওয়া বা আশা করা হতে নিজেকে রক্ষা করা, জীবনযাত্রায় মধ্যপন্থা ও মিতব্যয়ের প্রতি উৎসাহদান এবং অপ্রয়োজনে মানুষের কাছে চাওয়ার নিন্দা
সম্পদ বাড়ানোর লক্ষ্যে অন্যের কাছে সওয়াল করার অবৈধতা
হাদীছ নং: ৫৩১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মানুষের কাছে চেয়ে বেড়ায়, সে প্রকৃতপক্ষে জ্বলন্ত কয়লাই চায়, এবার সে চাইলে সওয়াল কম করুক কিংবা বেশি করুক। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ১০৪১; মুসনাদে আহমাদ: ৭১৬৩; সহীহ ইবন হিব্বান: ৩৩৯৩; সুনানে ইবন মাজাহ : ১৮৩৮; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা ১০৬৭৩; তহাবী, শারহু মা'আনিল আছার : ৩০২৯; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা: ৭৮৭১; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ: ১৬২৪)
হাদীছ নং: ৫৩১
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মানুষের কাছে চেয়ে বেড়ায়, সে প্রকৃতপক্ষে জ্বলন্ত কয়লাই চায়, এবার সে চাইলে সওয়াল কম করুক কিংবা বেশি করুক। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ১০৪১; মুসনাদে আহমাদ: ৭১৬৩; সহীহ ইবন হিব্বান: ৩৩৯৩; সুনানে ইবন মাজাহ : ১৮৩৮; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা ১০৬৭৩; তহাবী, শারহু মা'আনিল আছার : ৩০২৯; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা: ৭৮৭১; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ: ১৬২৪)
مقدمة الامام النووي
57 - باب القناعة والعَفاف والاقتصاد في المعيشة والإنفاق وذم السؤال من غير ضرورة
531 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ سَألَ النَّاسَ تَكَثُّرًا فإنَّمَا يَسْألُ جَمْرًا؛ فَلْيَسْتَقِلَّ أَوْ لِيَسْتَكْثِرْ». رواه مسلم. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে বলা হয়েছে- مَنْ سَأَلَ النَّاسَ تَكَثرًا (যে ব্যক্তি সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মানুষের কাছে চেয়ে বেড়ায়)। অর্থাৎ তার কাছে চলার মতো সম্পদ আছে, তা সত্ত্বেও অন্যের কাছে চায়, যাতে সে সম্পদ আরও বাড়ে। বোঝা গেল চাওয়াটা যদি সম্পদ বাড়ানোর জন্য না হয়; বরং উপস্থিত প্রয়োজন মেটানোর জন্য হয়, তবে কোনও দোষ নেই। চাওয়াটা দোষের হয় তখনই, যখন উদ্দেশ্য হয় সম্পদ বাড়ানো।
বস্তুত সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মানুষের কাছে সওয়াল করা কঠিন গুনাহ। উম্মতের কেউ যাতে এ গুনাহে লিপ্ত না হয়, সে লক্ষ্যে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। কেউ এরকম সওয়াল করলে তিনি তার সম্পর্কে বলেন-
فَإِنَّمَا يَسْأَلُ جَمْرًا (সে প্রকৃতপক্ষে জ্বলন্ত কয়লাই চায়)। এর দু'টি অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ রূপক। অর্থাৎ তাকে আগুনের শাস্তি দেওয়া হবে। সে যেন মানুষের কাছে চাওয়ার দ্বারা নিজের জন্য আগুনের শাস্তিরই ব্যবস্থা করছে। এর আক্ষরিক অর্থও গ্রহণ করা যেতে পারে। তখন বাক্যটির অর্থ হবে, সে চেয়ে চেয়ে মানুষের কাছ থেকে যা নেয়, আখিরাতে তা জ্বলন্ত কয়লায় পরিণত হবে এবং সে কয়লা দ্বারা তাকে দাগানো হবে। যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে, তাদের সম্পর্কে কুরআন মাজীদে এরূপ শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
এ শাস্তির কারণ অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করা। বিনা প্রয়োজনে মানুষের কাছে চাওয়া জায়েয নয়। এটা সম্পদ অর্জনের এক অবৈধ পন্থা। তাছাড়া বিনা প্রয়োজনে চাওয়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলার নি'আমতের অকৃতজ্ঞতাও করা হয়। তার কাছে চলার মতো সম্পদ আছে, কিন্তু সে তা গোপন করে অন্যের কাছে হাত পাতছে। এটা তো অকৃতজ্ঞতাই বটে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়াল করার শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার পর বলছেন- فَلْيَسْتَقِلَّ أَوْ لِيَسْتَكْثِرْ (এখন সে চাইলে সওয়াল কম করুক কিংবা বেশি করুক)। এ কথা বলা হয়েছে তিরস্কার ও ধমকিস্বরূপ। অর্থাৎ বিনা প্রয়োজনে চাওয়ার দ্বারা তো নিজের জন্য আগুনের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। কম সওয়াল করলে কম শাস্তির ব্যবস্থা হবে, আর বেশি সওয়াল করলে বেশি শাস্তির ব্যবস্থা হবে। সর্বাবস্থায় তা আগুনেরই শাস্তি। নিজেদের জন্য সে আগুনের শাস্তির ব্যবস্থা তোমরা কীভাবে করতে পার? সুতরাং সাবধান! তোমরা যেমন মানুষের কাছে বেশি বেশি চাওয়া হতে বিরত থাকবে, তেমনি কম চাওয়া হতেও অবশ্যই বিরত থেকো। সারকথা এ বাক্য দ্বারা সওয়াল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি; বরং সর্বতোভাবে তা থেকে বেঁচে থাকার জন্য তাগিদ করা হয়েছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনওমতে চলার মতো সম্পদ যার আছে, তার কিছুতেই অন্যের কাছে হাত পাতা উচিত নয়।
খ. সম্পদ বাড়ানোর জন্য সওয়াল করলে আখিরাতে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
গ. সওয়াল বেশি বেশি করা বা অল্প করা সবটাই পাপকর্ম ও শান্তির কারণ। তাই এর থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে।
বস্তুত সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মানুষের কাছে সওয়াল করা কঠিন গুনাহ। উম্মতের কেউ যাতে এ গুনাহে লিপ্ত না হয়, সে লক্ষ্যে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। কেউ এরকম সওয়াল করলে তিনি তার সম্পর্কে বলেন-
فَإِنَّمَا يَسْأَلُ جَمْرًا (সে প্রকৃতপক্ষে জ্বলন্ত কয়লাই চায়)। এর দু'টি অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ রূপক। অর্থাৎ তাকে আগুনের শাস্তি দেওয়া হবে। সে যেন মানুষের কাছে চাওয়ার দ্বারা নিজের জন্য আগুনের শাস্তিরই ব্যবস্থা করছে। এর আক্ষরিক অর্থও গ্রহণ করা যেতে পারে। তখন বাক্যটির অর্থ হবে, সে চেয়ে চেয়ে মানুষের কাছ থেকে যা নেয়, আখিরাতে তা জ্বলন্ত কয়লায় পরিণত হবে এবং সে কয়লা দ্বারা তাকে দাগানো হবে। যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে, তাদের সম্পর্কে কুরআন মাজীদে এরূপ শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
এ শাস্তির কারণ অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করা। বিনা প্রয়োজনে মানুষের কাছে চাওয়া জায়েয নয়। এটা সম্পদ অর্জনের এক অবৈধ পন্থা। তাছাড়া বিনা প্রয়োজনে চাওয়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলার নি'আমতের অকৃতজ্ঞতাও করা হয়। তার কাছে চলার মতো সম্পদ আছে, কিন্তু সে তা গোপন করে অন্যের কাছে হাত পাতছে। এটা তো অকৃতজ্ঞতাই বটে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়াল করার শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার পর বলছেন- فَلْيَسْتَقِلَّ أَوْ لِيَسْتَكْثِرْ (এখন সে চাইলে সওয়াল কম করুক কিংবা বেশি করুক)। এ কথা বলা হয়েছে তিরস্কার ও ধমকিস্বরূপ। অর্থাৎ বিনা প্রয়োজনে চাওয়ার দ্বারা তো নিজের জন্য আগুনের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। কম সওয়াল করলে কম শাস্তির ব্যবস্থা হবে, আর বেশি সওয়াল করলে বেশি শাস্তির ব্যবস্থা হবে। সর্বাবস্থায় তা আগুনেরই শাস্তি। নিজেদের জন্য সে আগুনের শাস্তির ব্যবস্থা তোমরা কীভাবে করতে পার? সুতরাং সাবধান! তোমরা যেমন মানুষের কাছে বেশি বেশি চাওয়া হতে বিরত থাকবে, তেমনি কম চাওয়া হতেও অবশ্যই বিরত থেকো। সারকথা এ বাক্য দ্বারা সওয়াল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি; বরং সর্বতোভাবে তা থেকে বেঁচে থাকার জন্য তাগিদ করা হয়েছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনওমতে চলার মতো সম্পদ যার আছে, তার কিছুতেই অন্যের কাছে হাত পাতা উচিত নয়।
খ. সম্পদ বাড়ানোর জন্য সওয়াল করলে আখিরাতে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
গ. সওয়াল বেশি বেশি করা বা অল্প করা সবটাই পাপকর্ম ও শান্তির কারণ। তাই এর থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)