রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৯৯
ভূমিকা অধ্যায়
অধ্যায়ঃ ৫৬ অনাহারে থাকা, কৃচ্ছতাপূর্ণ জীবনযাপন করা, অল্প পানাহার, অল্প পোশাক ও অল্প ভোগে পরিতুষ্ট থাকা এবং চাহিদা ত্যাগের ফযীলত।
গাছের পাতা খেয়েও সাহাবায়ে কেরামের জিহাদে রত থাকা
হাদীছ নং : ৪৯৯
হযরত সা'দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আমিই ছিলাম প্রথম আরব, যে আল্লাহর পথে তির নিক্ষেপ করেছে। আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে এ অবস্থায় জিহাদে অংশগ্রহণ করেছি যে, তখন বাবলা গাছ ও এই ঝাউ গাছের পাতা ছাড়া আমাদের কোনও খাদ্য ছিল না। এমনকি আমাদের একেকজন মল ত্যাগ করত বকরির মলত্যাগের মত, যা পরস্পর জড়াত না - বুখারী ও মুসলিম।
হাদীছ নং : ৪৯৯
হযরত সা'দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আমিই ছিলাম প্রথম আরব, যে আল্লাহর পথে তির নিক্ষেপ করেছে। আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে এ অবস্থায় জিহাদে অংশগ্রহণ করেছি যে, তখন বাবলা গাছ ও এই ঝাউ গাছের পাতা ছাড়া আমাদের কোনও খাদ্য ছিল না। এমনকি আমাদের একেকজন মল ত্যাগ করত বকরির মলত্যাগের মত, যা পরস্পর জড়াত না - বুখারী ও মুসলিম।
مقدمة الامام النووي
56 - باب فضل الجوع وخشونة العيش والاقتصار على القليل من المأكول والمشروب والملبوس وغيرها من حظوظ النفس وترك الشهوات
499 - وعن سعد بن أَبي وقاص - رضي الله عنه - قَالَ: إنِّي لأَوَّلُ الْعَرَبِ رَمَى بِسَهْمٍ في سَبِيلِ الله، وَلَقَدْ كُنَّا نَغْزُو مَعَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مَا لَنَا طَعَامٌ إِلاَّ وَرَقُ الْحُبْلَةِ، وَهذَا السَّمُرُ، حَتَّى إنْ كَانَ أحَدُنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ مَا لَهُ خَلْطٌ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1) [ص:173]
«الحُبْلَة» بضم الحاء المهملة وإسكان الباءِ الموحدةِ: وَهِيَ وَالسَّمُرُ، نَوْعَانِ مَعْرُوفَانِ مِنْ شَجَرِ الْبَادِيَةِ.
«الحُبْلَة» بضم الحاء المهملة وإسكان الباءِ الموحدةِ: وَهِيَ وَالسَّمُرُ، نَوْعَانِ مَعْرُوفَانِ مِنْ شَجَرِ الْبَادِيَةِ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটির বর্ণনায় হযরত সা'দ ইবন আবী ওয়াক্কাস রাযি. নিজেকে আল্লাহর পথে সর্বপ্রথম তির নিক্ষেপকারী বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি এ তিরটি নিক্ষেপ করেছিলেন এক সারিয়্যায় (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাঠানো যুদ্ধাভিযানে)। হযরত উবায়দা ইবনুল হারিছ রাযি. ছিলেন সে অভিযানের আমীর। সৈন্যসংখ্যা ছিল ৬০ জন। এটি ইসলামের প্রথম সারিয়্যা। কারও মতে দ্বিতীয়। তবে এ অভিযানে কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধ হয়নি। তবে হযরত সা'দ ইবন আবী ওয়াক্কাস রাযি. তাদের লক্ষ্য করে একটি তির নিক্ষেপ করেছিলেন।
অপর এক বর্ণনায় আছে, সে তীরে এক কাফের বিদ্ধও হয়েছিল, যে কারণে হযরত সা'দ রাযি, নিজেকে আল্লাহর পথে শত্রুর রক্ত প্রবাহিতকারীদের মধ্যে সর্বপ্রথম বলে উল্লেখ করেছেন। এটা হিজরতের প্রথম বছরের কথা। হযরত সা'দ রাযি. একদম প্রথম দিকের মুসলিম। তাই মক্কা মুকাররামার তো বটেই, মদীনা মুনাউওয়ারারও প্রথম দিকের অবস্থা তাঁর ভালোভাবেই জানা ছিল। তখন কী রকম অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে তাঁদের যেতে হয়েছে, এ হাদীছের বর্ণনায় তিনি তার একটা ছবি এঁকেছেন। তিনি যে যুদ্ধের কথা বলেছেন, সেটি কোন যুদ্ধ ছিল এ সম্পর্কে দু'রকম মত পাওয়া যায়।
একটি হচ্ছে ৮ম হিজরীতে সংঘটিত আল-খাবাতের যুদ্ধ। সে যুদ্ধের আমীর ছিলেন হযরত আবূ উবায়দা রাযি.। কিন্তু প্রশ্ন দাঁড়ায়, হযরত সা'দ রাযি. তো বলছেন-
كنا نغزو مع رسول الله ﷺ (আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে জিহাদে অংশগ্রহণ করেছি), অথচ এ যুদ্ধটি ছিল একটি সারিয়্যা অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাঠানো অভিযান, তিনি নিজে এতে শরীক ছিলেন না, তাহলে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলেন এ কথাটি সঠিক হয় কী করে? উত্তর দেওয়া হয়েছে- এখানে সঙ্গে থাকা বলতে তাঁর আনুগত্যের অধীনে থাকা। তিনি অভিযানে শরীক হতে আদেশ করেছিলেন। তিনি সে আদেশ মেনেছিলেন। সুতরাং এ 'সঙ্গে থাকা' শারীরিক নয়; বরং মানসিক ও আদর্শিকভাবে ছিল।
দ্বিতীয় মত হল এটা অপর কোনও যুদ্ধ ছিল, যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই অংশগ্রহণ করেছেন। এটা প্রমাণিত হলে উপরের ব্যাখ্যার কোনও প্রয়োজন পড়ে না।
যুদ্ধ যেটিই হোক না কেন এতটুকু পরিষ্কার যে, সে যুদ্ধে সাহাবায়ে কেরামকে খাদ্যাভাবের দরুন বাবলা গাছ ও ঝাউ গাছের পাতা পর্যন্ত খেতে হয়েছিল আর এ কারণে তাঁদের মল পর্যন্ত বকরির মলের মত হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও খাদ্যকষ্টের অজুহাতে তাঁরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ হতে বিরত থাকেননি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ আমাদের শিক্ষা দেয়, যত কঠিন অভাব-অনটনই হোক না কেন, এমনকি ক্ষুধা নিবারণের জন্য গাছের পাতা বা মানুষের পক্ষে এরকম কোনও অখাদ্যও খেতে হয়, তবুও আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুম পালনে শিথিলতা করা যাবে না।
খ. এ হাদীছ অভাবগ্রস্ত ও অন্নকষ্টে জর্জরিত ব্যক্তিদের পক্ষে সান্ত্বনার বাণীও বটে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, সে তীরে এক কাফের বিদ্ধও হয়েছিল, যে কারণে হযরত সা'দ রাযি, নিজেকে আল্লাহর পথে শত্রুর রক্ত প্রবাহিতকারীদের মধ্যে সর্বপ্রথম বলে উল্লেখ করেছেন। এটা হিজরতের প্রথম বছরের কথা। হযরত সা'দ রাযি. একদম প্রথম দিকের মুসলিম। তাই মক্কা মুকাররামার তো বটেই, মদীনা মুনাউওয়ারারও প্রথম দিকের অবস্থা তাঁর ভালোভাবেই জানা ছিল। তখন কী রকম অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে তাঁদের যেতে হয়েছে, এ হাদীছের বর্ণনায় তিনি তার একটা ছবি এঁকেছেন। তিনি যে যুদ্ধের কথা বলেছেন, সেটি কোন যুদ্ধ ছিল এ সম্পর্কে দু'রকম মত পাওয়া যায়।
একটি হচ্ছে ৮ম হিজরীতে সংঘটিত আল-খাবাতের যুদ্ধ। সে যুদ্ধের আমীর ছিলেন হযরত আবূ উবায়দা রাযি.। কিন্তু প্রশ্ন দাঁড়ায়, হযরত সা'দ রাযি. তো বলছেন-
كنا نغزو مع رسول الله ﷺ (আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে জিহাদে অংশগ্রহণ করেছি), অথচ এ যুদ্ধটি ছিল একটি সারিয়্যা অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাঠানো অভিযান, তিনি নিজে এতে শরীক ছিলেন না, তাহলে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলেন এ কথাটি সঠিক হয় কী করে? উত্তর দেওয়া হয়েছে- এখানে সঙ্গে থাকা বলতে তাঁর আনুগত্যের অধীনে থাকা। তিনি অভিযানে শরীক হতে আদেশ করেছিলেন। তিনি সে আদেশ মেনেছিলেন। সুতরাং এ 'সঙ্গে থাকা' শারীরিক নয়; বরং মানসিক ও আদর্শিকভাবে ছিল।
দ্বিতীয় মত হল এটা অপর কোনও যুদ্ধ ছিল, যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই অংশগ্রহণ করেছেন। এটা প্রমাণিত হলে উপরের ব্যাখ্যার কোনও প্রয়োজন পড়ে না।
যুদ্ধ যেটিই হোক না কেন এতটুকু পরিষ্কার যে, সে যুদ্ধে সাহাবায়ে কেরামকে খাদ্যাভাবের দরুন বাবলা গাছ ও ঝাউ গাছের পাতা পর্যন্ত খেতে হয়েছিল আর এ কারণে তাঁদের মল পর্যন্ত বকরির মলের মত হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও খাদ্যকষ্টের অজুহাতে তাঁরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ হতে বিরত থাকেননি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ আমাদের শিক্ষা দেয়, যত কঠিন অভাব-অনটনই হোক না কেন, এমনকি ক্ষুধা নিবারণের জন্য গাছের পাতা বা মানুষের পক্ষে এরকম কোনও অখাদ্যও খেতে হয়, তবুও আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুম পালনে শিথিলতা করা যাবে না।
খ. এ হাদীছ অভাবগ্রস্ত ও অন্নকষ্টে জর্জরিত ব্যক্তিদের পক্ষে সান্ত্বনার বাণীও বটে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)