রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৫২
উলামায়ে কিরাম, প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ ও সম্মানীত ব্যক্তিবর্গের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, অন্যদের উপর তাদের অগ্রাধিকার প্রদান, তাদেরকে উচ্চস্থানে বসানো ও তাদের মরতবা প্রকাশ করা
একত্রে একাধিক লাশের দাফনে আলেম ও হাফেযকে বিশেষ সম্মান দেখানো
হাদীছ নং : ৩৫২
হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদে নিহতদের দু'-দু'জনকে একত্র করছিলেন। অর্থাৎ কবরে দাফন করার জন্য। তারপর বলছিলেন, এদের মধ্যে কে কুরআনের বেশি ধারক (অর্থাৎ কুরআন কে বেশি জানে)? যখন তাদের কোনও একজনের প্রতি ইঙ্গিত করা হত, তিনি তাকে কবরে সামনে রাখতেন -বুখারী।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৩৪৩; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২০৯৩; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ১৯৫৫; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৩১৩৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৫১৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১১৬৫৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৩১৯৭; বায়হাকী, আস্সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৬৭৯৫; শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৫০০
হাদীছ নং : ৩৫২
হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদে নিহতদের দু'-দু'জনকে একত্র করছিলেন। অর্থাৎ কবরে দাফন করার জন্য। তারপর বলছিলেন, এদের মধ্যে কে কুরআনের বেশি ধারক (অর্থাৎ কুরআন কে বেশি জানে)? যখন তাদের কোনও একজনের প্রতি ইঙ্গিত করা হত, তিনি তাকে কবরে সামনে রাখতেন -বুখারী।
সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ১৩৪৩; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২০৯৩; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ১৯৫৫; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৩১৩৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীছ নং ১৫১৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১১৬৫৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৩১৯৭; বায়হাকী, আস্সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৬৭৯৫; শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৫০০
44 - باب توقير العلماء والكبار وأهل الفضل وتقديمهم عَلَى غيرهم ورفع مجالسهم وإظهار مرتبتهم
352 - وعن جابر - رضي الله عنه: أن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُد يَعْنِي في القَبْرِ، ثُمَّ يَقُولُ: «أيُّهُما أكْثَرُ أخذًا للقُرآنِ؟» فَإذَا أُشيرَ لَهُ إِلَى أحَدِهِمَا قَدَّمَهُ في اللَّحْدِ. رواه البخاري. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে উহুদ যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের দাফনকার্য সম্পর্কিত একটি বিশেষ তথ্য দেওয়া হয়েছে। উহুদের যুদ্ধ হয়েছিল হিজরী ৪র্থ সনে। এতে ৭০ জন সাহাবী শাহাদাত বরণ করেন। মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন অনেকেই। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও ভীষণভাবে আহত হন। যখন দাফন-কাফনের পালা আসে, তখন সাহাবায়ে কেরামকে যে কঠোর-কঠিন সংকটের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তারা ছিলেন নেহায়েত গরীব। সকল শহীদের পূর্ণাঙ্গ কাফনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছিল না। সকলেই ছিলেন আহত ও ক্ষত-বিক্ষত। এতগুলো কবর তাদের পক্ষে কিভাবে খনন করা সম্ভব? আনসারগণ এসে আরয করেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা তো ক্ষত-বিক্ষত, সংকটাপন্ন। তিনি বললেন, তোমরা একটু প্রশস্ত গর্ত কর এবং প্রতি কবরে দুই-তিনজন করে দাফন কর। তা-ই করা হয়েছিল। এমনকি একই কবরে পুরুষ ও নারীকেও স্থান দেওয়া হয়েছিল। মাঝখানে মাটি দিয়ে আড়াল করা হয়েছিল। একেকজনের কাফন এতই ছোট ছিল যে,মাথা ঢাকলে পা ঢাকে না, পা ঢাকলে মাথা ঢাকে না। অগত্যা মাথা ঢেকে পায়ের উপর ঘাস ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
যাহোক যখন দু-দু'জনকে একেক কবরে দাফন করা হচ্ছিল, তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে জেনে নিচ্ছিলেন যে, তাদের মধ্যে কুরআন বেশি কে জানে। যার দিকে ইশারা করা হত যে সে বেশি জানে, তাকে কেবলার দিকে সামনে রাখা হতো। অপরজনকে রাখা হত তার পেছনে। অর্থাৎ এ অগ্রগণ্যতা বয়স বা অন্য কোনও বিচারে বিবেচনা করা হত না; তা বিবেচনা করা হত কুরআন কম-বেশি জানার ভিত্তিতে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রয়োজনে একাধিক ব্যক্তিকে এক কবরে দাফন করা যেতে পারে।
খ. কুরআন যে বেশি জানে তার মর্যাদাও বেশি। এমনকি দাফনের ক্ষেত্রেও সে মর্যাদা বিবেচনাযোগ্য।
যাহোক যখন দু-দু'জনকে একেক কবরে দাফন করা হচ্ছিল, তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে জেনে নিচ্ছিলেন যে, তাদের মধ্যে কুরআন বেশি কে জানে। যার দিকে ইশারা করা হত যে সে বেশি জানে, তাকে কেবলার দিকে সামনে রাখা হতো। অপরজনকে রাখা হত তার পেছনে। অর্থাৎ এ অগ্রগণ্যতা বয়স বা অন্য কোনও বিচারে বিবেচনা করা হত না; তা বিবেচনা করা হত কুরআন কম-বেশি জানার ভিত্তিতে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রয়োজনে একাধিক ব্যক্তিকে এক কবরে দাফন করা যেতে পারে।
খ. কুরআন যে বেশি জানে তার মর্যাদাও বেশি। এমনকি দাফনের ক্ষেত্রেও সে মর্যাদা বিবেচনাযোগ্য।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
