রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ২০৭
জুলুমের প্রতি নিষেধাজ্ঞা এবং জুলুমের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ফেরত দেওয়ার হুকুম।
জালেম ও পাপী ব্যক্তিকে অবকাশ দেওয়ার কারণ
হাদীছ নং : ২০৭
হযরত আবূ মূসা আশ'আরী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা'আলা জালেমকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। তারপর যখন তাকে ধরেন, তখন আর তাকে ছাড়েন না। তারপর তিনি (কুরআন মাজীদের আয়াত) পাঠ করেন-
وَكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ شَدِيدٌ (102)
(যে সকল জনপদ জুলুমে লিপ্ত হয়, তোমার প্রতিপালক যখন তাদের ধরেন, তখন তাঁর ধরা এমনই হয়ে থাকে। বাস্তবিকই তাঁর ধরা অতি মর্মন্তুদ, অতি কঠিন।) সূরা হূদ (১১), আয়াত ১০২
-বুখারী ও মুসলিম।"
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৬৮৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৮৩: জামে তিরমিযী, নং ৩১১০; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪০১৮; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান, হাদীছ নং ৭০৬৩; মুসনাদুল বাযযার, হাদীছ নং ৩১৮৩)
হাদীছ নং : ২০৭
হযরত আবূ মূসা আশ'আরী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা'আলা জালেমকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। তারপর যখন তাকে ধরেন, তখন আর তাকে ছাড়েন না। তারপর তিনি (কুরআন মাজীদের আয়াত) পাঠ করেন-
وَكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ شَدِيدٌ (102)
(যে সকল জনপদ জুলুমে লিপ্ত হয়, তোমার প্রতিপালক যখন তাদের ধরেন, তখন তাঁর ধরা এমনই হয়ে থাকে। বাস্তবিকই তাঁর ধরা অতি মর্মন্তুদ, অতি কঠিন।) সূরা হূদ (১১), আয়াত ১০২
-বুখারী ও মুসলিম।"
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৬৮৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৫৮৩: জামে তিরমিযী, নং ৩১১০; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪০১৮; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান, হাদীছ নং ৭০৬৩; মুসনাদুল বাযযার, হাদীছ নং ৩১৮৩)
26 - باب تحريم الظلم والأمر بردِّ المظالم
207 - وعن أَبي موسى - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنَّ الله لَيُمْلِي لِلظَّالِمِ، فَإِذَا أخَذَهُ لَمْ يُفْلِتْهُ»، ثُمَّ قَرَأَ: {وكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ شَدِيدٌ} [هود: 102] مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জালেম ও পাপীকে সাবধান করছেন যে, সময় থাকতে পাপাচার এবং জুলুম ও অবিচার পরিত্যাগ করে পুণ্য ও ন্যায়ের পথে ফিরে এস। তুমি অবাধে অন্যায়-অনাচার করতে পারছ বলে ধোকায় পড়ে যেও না। মনে করো না আল্লাহ তা'আলা তোমার কর্মকাণ্ড দেখছেন না, কিংবা দেখলেও তিনি তোমার প্রতি খুশি আছেন বলে শাস্তি দিচ্ছেন না।প্রকৃতপক্ষে তাঁর শাস্তি না দেওয়াটা অপরাধের প্রতি খুশি থাকার ইঙ্গিত বহন করে না। আসলে তিনি অবকাশ দিচ্ছেন।
আল্লাহ তা'আলার দেওয়া অবকাশের উদ্দেশ্য থাকে দু'টি। এক উদ্দেশ্য হচ্ছে তাওবার মাধ্যমে বান্দাকে সুপথে ফিরে আসার সুযোগ করে দেওয়া। তিনি চান বান্দা সময়-সুযোগ পেয়ে তাওবায় লিপ্ত হোক ও পাপকর্ম ছেড়ে সৎকর্মের দিকে ফিরে আসুক। বান্দা যাতে সতর্ক হয়ে সুপথে ফিরে আসে সে লক্ষ্যে তিনি নবী-রাসূল ও তাঁদের প্রতিনিধিদের দ্বারা তাকে উপদেশ দেওয়ান। তাছাড়া তার নিজ অস্তিত্বে এবং তার আশেপাশে এমন বিভিন্ন ঘটনা ঘটান, যার ভেতর দৃষ্টিপাত করলে বুদ্ধিমান ব্যক্তির সতর্ক হয়ে যাওয়ার কথা। প্রথমে তাকে ছোটখাটো বিপদাপদ দেন, বিভিন্ন দুর্যোদ ও দুর্বিপাক ঘটান। এভাবে একের পর এক নিদর্শন দেখা সত্ত্বেও যখন সে সতর্ক হয় না, তখন তার দিল-মন শক্ত করে দেন। ফলে দ্বিগুণ উৎসাহে পাপকর্মে লিপ্ত হয় এবং জুলুম-অবিচারে উদ্ধত হয়ে ওঠে। এভাবে যখন সব সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন হঠাৎ করেই আল্লাহ তাআলা তাকে পাকড়াও করেন। সে ধরা এমনই শক্ত হয়, যা থেকে মুক্তির কোনও উপায় থাকে না।
অবকাশ দানের দ্বিতীয় উদ্দেশ্য থাকে পাপীকে আরও বেশি পাপ করতে দেওয়া। এটা হয় ওই ব্যক্তির জন্য, যার ক্ষেত্রে সকল আদেশ-উপদেশ ব্যর্থ প্রমাণিত হয় এবং যার অঙ্গীকারই হচ্ছে পাপকর্মে লিপ্ত থাকা। সে যখন আল্লাহর দেওয়া অবকাশকে পাপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ মনে করে এবং অহংকার ও ঔদ্ধত্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন একপর্যায়ে আল্লাহ তা'আলা তাকে পাকড়াও করে ফেলেন। তাকে আর তাওবার সুযোগ দেওয়া হয় না। পাপাচার অবস্থায়ই তাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। সে ধ্বংস স্বাভাবিক মৃত্যু দ্বারাও হতে পারে, আবার কোনও কঠিন আযাব ও গযব দ্বারাও হতে পারে। তার শেষ পরিণাম হয় জাহান্নামবাস।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে গ্রেফতারের দৃষ্টান্ত হিসেবে ফিরআউনের পরিণতির প্রতি ইঙ্গিতবাহী একটি আয়াত তিলাওয়াত করেন। তাতে বলা হয়েছে- যে সকল জনপদ জুলুমে লিপ্ত হয়, তোমার প্রতিপালক যখন তাদের ধরেন, তখন তাঁর ধরা এমনই হয়ে থাকে। বাস্তবিকই তাঁর ধরা অতি মর্মন্তুদ, অতি কঠিন।
প্রথমে ফিরআউনকে নম্রতার সঙ্গে বোঝানো হয়েছিল। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম বিভিন্ন দৃষ্টান্ত দ্বারা তাকে উপদেশ দিতে থাকেন। কিন্তু সে কোনওকিছুতেই কর্ণপাত করেনি। উল্টো সে দাবি করে বসে-
أنا ربكم الأعلى
(আমি তোমাদের শ্রেষ্ঠ প্রতিপালক) (সূরা নাযি'আত (৭৯), আয়াত ২৪)
তারপর আল্লাহ তাআলা তাকে ও তার সম্প্রদায়কে বিভিন্ন বালা-মসিবত দিয়ে সতর্ক করতে থাকেন। পরিশেষে যখন সাব্যস্ত হয়ে গেল তারা কোনও অবস্থায়ই তাদের জুলুম-নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিত্যাগ করার নয় এবং কিছুতেই তারা পাপাচার থেকে ফিরে আসবে না, তখন আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে চূড়ান্তরূপে পাকড়াও করলেন। গোটা সম্প্রদায়কে সাগরে ডুবিয়ে খতম করে দিলেন।
এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা সেদিকে ইঙ্গিত করে বলছেন যে, তিনি ধাপে ধাপে অবকাশ দেওয়া সত্ত্বেও যখন পাপাচারী ও জুলুমবাজ গোষ্ঠী সতর্ক হয় না, তখন একপর্যায়ে আল্লাহ তা'আলা এভাবেই তাদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকেন। সুতরাং তোমরা তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর। তোমরাও যদি আল্লাহর দেওয়া অবকাশকে কাজে না লাগাও; বরং সে অবকাশকে অন্যায়-অপরাধ করে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ মনে কর, তবে মনে রেখ তোমাদেরকেও একদিন কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। তখন আর তোমাদেরকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, আল্লাহর পক্ষ থেকে সে চূড়ান্ত ধরা ফিরআউনী সম্প্রদায়ের মত এ দুনিয়ায়ও হতে পারে এবং হতে পারে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তিদানের মাধ্যমেও। যদি দুনিয়ায় শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করা হয়, তবে যে আখিরাতে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে তা নয়; সে আযাব তো আপন স্থানে আছেই। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাঁর সর্বপ্রকার ধরা থেকে নিস্তার দান করুন এবং এখনই যাতে সকলে জুলুম ও পাপাচার ছেড়ে সৎকর্মে মনোযোগী হতে পারি সেই তাওফীক দিন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জালেম ও পাপী ব্যক্তির আপন আরাম-আয়েশ দেখে ধোঁকায় পড়া উচিত নয়। কেননা হতে পারে তা আল্লাহপ্রদত্ত অবকাশ, যাতে সে আরও বেশি পাপ করে চরম শাস্তির উপযুক্ত হয়ে যায়।
খ. প্রত্যেকের উচিত সময় ও সুযোগকে নেককাজে ব্যবহার করা। কেননা তা নেককাজে ব্যবহার না করে পাপাচারের ভেতর নষ্ট করলে সেটা তার জন্য জালেম সাব্যস্ত হওয়ার আলামত হতে পারে, যার পরিণাম আল্লাহর গযবে নিপতিত হওয়া।
গ. পাপকর্ম সত্ত্বেও আযাব না আসাকে তাওবার সুযোগ মনে করা উচিত। হয়তো আল্লাহ নিজ দয়ায় সুযোগ দান করছেন, যাতে বান্দা তাওবার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করে ফেলে।
ঘ. পাপাচারের কারণে যে সকল জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে তাদের পরিণতি দেখে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, যাতে সেই পরিণতির শিকার আমরাও না হয়ে যাই।
আল্লাহ তা'আলার দেওয়া অবকাশের উদ্দেশ্য থাকে দু'টি। এক উদ্দেশ্য হচ্ছে তাওবার মাধ্যমে বান্দাকে সুপথে ফিরে আসার সুযোগ করে দেওয়া। তিনি চান বান্দা সময়-সুযোগ পেয়ে তাওবায় লিপ্ত হোক ও পাপকর্ম ছেড়ে সৎকর্মের দিকে ফিরে আসুক। বান্দা যাতে সতর্ক হয়ে সুপথে ফিরে আসে সে লক্ষ্যে তিনি নবী-রাসূল ও তাঁদের প্রতিনিধিদের দ্বারা তাকে উপদেশ দেওয়ান। তাছাড়া তার নিজ অস্তিত্বে এবং তার আশেপাশে এমন বিভিন্ন ঘটনা ঘটান, যার ভেতর দৃষ্টিপাত করলে বুদ্ধিমান ব্যক্তির সতর্ক হয়ে যাওয়ার কথা। প্রথমে তাকে ছোটখাটো বিপদাপদ দেন, বিভিন্ন দুর্যোদ ও দুর্বিপাক ঘটান। এভাবে একের পর এক নিদর্শন দেখা সত্ত্বেও যখন সে সতর্ক হয় না, তখন তার দিল-মন শক্ত করে দেন। ফলে দ্বিগুণ উৎসাহে পাপকর্মে লিপ্ত হয় এবং জুলুম-অবিচারে উদ্ধত হয়ে ওঠে। এভাবে যখন সব সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন হঠাৎ করেই আল্লাহ তাআলা তাকে পাকড়াও করেন। সে ধরা এমনই শক্ত হয়, যা থেকে মুক্তির কোনও উপায় থাকে না।
অবকাশ দানের দ্বিতীয় উদ্দেশ্য থাকে পাপীকে আরও বেশি পাপ করতে দেওয়া। এটা হয় ওই ব্যক্তির জন্য, যার ক্ষেত্রে সকল আদেশ-উপদেশ ব্যর্থ প্রমাণিত হয় এবং যার অঙ্গীকারই হচ্ছে পাপকর্মে লিপ্ত থাকা। সে যখন আল্লাহর দেওয়া অবকাশকে পাপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ মনে করে এবং অহংকার ও ঔদ্ধত্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন একপর্যায়ে আল্লাহ তা'আলা তাকে পাকড়াও করে ফেলেন। তাকে আর তাওবার সুযোগ দেওয়া হয় না। পাপাচার অবস্থায়ই তাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। সে ধ্বংস স্বাভাবিক মৃত্যু দ্বারাও হতে পারে, আবার কোনও কঠিন আযাব ও গযব দ্বারাও হতে পারে। তার শেষ পরিণাম হয় জাহান্নামবাস।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে গ্রেফতারের দৃষ্টান্ত হিসেবে ফিরআউনের পরিণতির প্রতি ইঙ্গিতবাহী একটি আয়াত তিলাওয়াত করেন। তাতে বলা হয়েছে- যে সকল জনপদ জুলুমে লিপ্ত হয়, তোমার প্রতিপালক যখন তাদের ধরেন, তখন তাঁর ধরা এমনই হয়ে থাকে। বাস্তবিকই তাঁর ধরা অতি মর্মন্তুদ, অতি কঠিন।
প্রথমে ফিরআউনকে নম্রতার সঙ্গে বোঝানো হয়েছিল। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম বিভিন্ন দৃষ্টান্ত দ্বারা তাকে উপদেশ দিতে থাকেন। কিন্তু সে কোনওকিছুতেই কর্ণপাত করেনি। উল্টো সে দাবি করে বসে-
أنا ربكم الأعلى
(আমি তোমাদের শ্রেষ্ঠ প্রতিপালক) (সূরা নাযি'আত (৭৯), আয়াত ২৪)
তারপর আল্লাহ তাআলা তাকে ও তার সম্প্রদায়কে বিভিন্ন বালা-মসিবত দিয়ে সতর্ক করতে থাকেন। পরিশেষে যখন সাব্যস্ত হয়ে গেল তারা কোনও অবস্থায়ই তাদের জুলুম-নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিত্যাগ করার নয় এবং কিছুতেই তারা পাপাচার থেকে ফিরে আসবে না, তখন আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে চূড়ান্তরূপে পাকড়াও করলেন। গোটা সম্প্রদায়কে সাগরে ডুবিয়ে খতম করে দিলেন।
এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা সেদিকে ইঙ্গিত করে বলছেন যে, তিনি ধাপে ধাপে অবকাশ দেওয়া সত্ত্বেও যখন পাপাচারী ও জুলুমবাজ গোষ্ঠী সতর্ক হয় না, তখন একপর্যায়ে আল্লাহ তা'আলা এভাবেই তাদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকেন। সুতরাং তোমরা তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর। তোমরাও যদি আল্লাহর দেওয়া অবকাশকে কাজে না লাগাও; বরং সে অবকাশকে অন্যায়-অপরাধ করে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ মনে কর, তবে মনে রেখ তোমাদেরকেও একদিন কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। তখন আর তোমাদেরকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, আল্লাহর পক্ষ থেকে সে চূড়ান্ত ধরা ফিরআউনী সম্প্রদায়ের মত এ দুনিয়ায়ও হতে পারে এবং হতে পারে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তিদানের মাধ্যমেও। যদি দুনিয়ায় শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করা হয়, তবে যে আখিরাতে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে তা নয়; সে আযাব তো আপন স্থানে আছেই। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাঁর সর্বপ্রকার ধরা থেকে নিস্তার দান করুন এবং এখনই যাতে সকলে জুলুম ও পাপাচার ছেড়ে সৎকর্মে মনোযোগী হতে পারি সেই তাওফীক দিন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জালেম ও পাপী ব্যক্তির আপন আরাম-আয়েশ দেখে ধোঁকায় পড়া উচিত নয়। কেননা হতে পারে তা আল্লাহপ্রদত্ত অবকাশ, যাতে সে আরও বেশি পাপ করে চরম শাস্তির উপযুক্ত হয়ে যায়।
খ. প্রত্যেকের উচিত সময় ও সুযোগকে নেককাজে ব্যবহার করা। কেননা তা নেককাজে ব্যবহার না করে পাপাচারের ভেতর নষ্ট করলে সেটা তার জন্য জালেম সাব্যস্ত হওয়ার আলামত হতে পারে, যার পরিণাম আল্লাহর গযবে নিপতিত হওয়া।
গ. পাপকর্ম সত্ত্বেও আযাব না আসাকে তাওবার সুযোগ মনে করা উচিত। হয়তো আল্লাহ নিজ দয়ায় সুযোগ দান করছেন, যাতে বান্দা তাওবার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করে ফেলে।
ঘ. পাপাচারের কারণে যে সকল জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে তাদের পরিণতি দেখে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, যাতে সেই পরিণতির শিকার আমরাও না হয়ে যাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: