রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ১২৪
ভূমিকা অধ্যায়
সৎকর্মের বহুবিধ পন্থা।
কোনও হাদিয়াকে তুচ্ছ মনে না করা
হাদীছ নং: ১২৪
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে আরও বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, হে মুসলিম নারীগণ! কোনও প্রতিবেশী যেন আপন প্রতিবেশীনির জন্য তুচ্ছ মনে না করে (সামান্য হাদিয়াকেও), যদিও তা বকরীর খুর হয়। -বুখারী ও মুসলিম.
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ২৫৬৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩০: জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২১৩০: মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৫৮১)
হাদীছ নং: ১২৪
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে আরও বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, হে মুসলিম নারীগণ! কোনও প্রতিবেশী যেন আপন প্রতিবেশীনির জন্য তুচ্ছ মনে না করে (সামান্য হাদিয়াকেও), যদিও তা বকরীর খুর হয়। -বুখারী ও মুসলিম.
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ২৫৬৬; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০৩০: জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২১৩০: মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৭৫৮১)
مقدمة الامام النووي
13 - باب في بيان كثرة طرق الخير
124 - الثامن: عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «يَا نِسَاءَ المُسْلِمَاتِ، لاَ تَحْقِرنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ شَاةٍ» (1) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (2)
قَالَ الجوهري: الفرسِن منَ البَعيرِ كالحَافِرِ مِنَ الدَّابَةِ قَالَ: وَرُبَّمَا اسْتُعِيرَ في الشَّاةِ.
قَالَ الجوهري: الفرسِن منَ البَعيرِ كالحَافِرِ مِنَ الدَّابَةِ قَالَ: وَرُبَّمَا اسْتُعِيرَ في الشَّاةِ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে সৎকর্মের আরেকটি দিক তুলে ধরা হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য মুসলিম নারীদের পরস্পরে হাদিয়া বিনিময়ে উৎসাহিত করা, যদিও তার পরিমাণ অতি অল্প হয়। একে অপরকে হাদিয়া দেওয়া একটি উৎকৃষ্ট সৎকর্ম। এর দ্বারা পরস্পরে হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয় ও ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। যেমন এক হাদীছে আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ-
تهادوا فإن الهدية تذهب وحر الصدر
“তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া দাও। কেননা হাদিয়া মনের বিদ্বেষ দূর করে।” মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯২৫০
অপর এক হাদীছে আছে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ- تهادوا تحابوا “তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া দাও। এতে তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে।” বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৫৯৪। বায়হাকী, হাদীছ নং ১১৯৪৬: বাগাবী, হাদীছ নং ১৬১২
উল্লেখ্য, পরস্পরকে ভালোবাসা ঈমানের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ- لا تؤمنوا حتى تحابوا “তোমরা প্রকৃত মু'মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালোবাস। সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৫৪; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৬৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদীছ নং ৫১৯৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৪১২
তো প্রকৃত মু'মিন হওয়ার জন্য যখন একে অন্যকে ভালোবাসা জরুরি, তখন যে সমস্ত কাজ দ্বারা পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হয় তার প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন হাদীছে এরকম কাজের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন, বেশি বেশি সালাম দিলে পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। এমনিভাবে হাদিয়া বিনিময়ও ভালোবাসা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বহু হাদীছে একে অন্যকে হাদিয়া দেওয়ার প্রতি উৎসাহ দান করেছেন। আলোচ্য হাদীছটি সেরকমই। এর দ্বারা হাদিয়ার প্রতি উৎসাহদানের পাশাপাশি একটি মূলনীতিও বলে দিয়েছেন। মূলনীতিটি এই যে, প্রত্যেকের পক্ষে হাদিয়া হিসেবে যা দেওয়া সম্ভব হয় তাই দেবে। হাদিয়া কোনও দামী বস্তু হওয়া জরুরি নয়। অনেকে মনে করে দামী জিনিস না হলে হাদিয়া দেওয়া যায় না। তাই গরীবদের অনেকেই এই নেক কাজটির ফযীলত থেকে বঞ্চিত থাকে। দামী হাদিয়া দিতে না পারার কারণে তারা হাদিয়া দেয়ই না। অথচ না দেওয়া অপেক্ষা সামান্য দেওয়াও উত্তম বৈ কি। নেক কাজ যতটুকু করা যায় ততটুকুই লাভজনক। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ-
فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
অর্থ : সুতরাং কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করে থাকলে সে তা দেখতে পাবে।সূরা যিলযাল, আয়াত ৭.
এ হাদীছ দ্বারা শেখানো হয়েছে হাদিয়ার জন্য বস্তুটি মূল্যবান হওয়া শর্ত নয়। ব্যাস প্রত্যেকে আপন সংগতি অনুযায়ী দেবে। দৃষ্টান্তস্বরূপ এ হাদীছে ছাগলের খুরের কথা বলা হয়েছে। ছাগলের খুর এমনই তুচ্ছ জিনিস, যা কোনও কাজের নয়। এর দ্বারা রূপকার্থে সামান্য বস্তু বোঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ যে ব্যক্তি অতি সামান্য কিছু দিতে পারে। সে তা-ই দেবে এবং তাতেই হাদিয়া দেওয়ার ফযীলত পেয়ে যাবে। অপর এক হাদীছে এ বিষয়টা ব্যক্ত হয়েছে এভাবে যে-
يا أبا ذر إذا طبخت مرقة فأكثر ماءها وتعاهد جيرانك
“হে আবূ যার! যখন ঝোল রান্না কর, তখন পানি বেশি দিও এবং তোমার প্রতিবেশীদেরকে তা থেকে দিও। সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬২৫। বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ১১৪, বাগাবী,শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৬৮৯.
এ হাদীছে যেমন হাদিয়াদাতাকে সামান্য হাদিয়াদানকে তুচ্ছ মনে করতে নিষেধ করা হয়েছে, তেমনি হাদিয়া গ্রহিতাকেও শেখানো হয়েছে, যেন সে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আসা হাদিয়াকে তুচ্ছ মনে না করে। অনেক সময় দেখা যায় মানুষ কোনও বস্তু অল্প দামী হওয়ায় হাদিয়া হিসেবে তা দিতে কুণ্ঠাবোধ করে, তেমনি অনেকে এমনও আছে, যাদেরকে অল্পদামের কোনও জিনিস হাদিয়া দিলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এবং হাদিয়াদাতার সমালোচনা করে। এ হাদীছ তাদেরকে তা নিষেধ করছে। হাদিয়াপ্রদান আন্তরিকতার পরিচায়ক। আর আন্তরিকতা অতি মূল্যবান জিনিস। সুতরাং হাদিয়া হিসেবে দেওয়া বস্তুটির বাজারমূল্য না দেখে দাতার আন্তরিকতার মূল্য দেওয়া চাই। প্রকৃতপক্ষে তার মূল্য এত বেশি যে, টাকাপয়সা দিয়ে তার মান পরিমাপ করা সম্ভব নয়। সুতরাং হাদিয়ার বাজারমূল্য যা-ই হোক না কেন, দাতার আন্তরিকতার প্রতি লক্ষ করে আন্তরিকভাবেই তা গ্রহণ করা চাই এবং সেজন্য তাকে কৃতজ্ঞতাও জানানো চাই।
উল্লেখ্য, নারী-পুরুষ সকলেই এ আদেশের অন্তর্ভুক্ত। তবে বিশেষভাবে মহিলাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এজন্য যে, প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিনিময় সাধারণত তাদের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। কাজেই এর দ্বারা এ কথাও বোঝা গেল যে, পুরুষদের উচিত নারীদের প্রতি এমন উদার থাকা, যাতে তারা অকুণ্ঠভাবে প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিতরণ করতে পারে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা বোঝা গেল হাদিয়া দেওয়াও একটি নেক কাজ।
খ. এ হাদীছ মু'মিনদেরকে একে অন্যের প্রতি এমন আচরণের শিক্ষা দেয়, যা মহব্বতের পরিচায়ক এবং যা দ্বারা পরস্পরে মহব্বত সৃষ্টি হয়, হাদিয়াও যার একটি।
গ. এ হাদীছ শিক্ষা দেয় হাদিয়ার ক্ষেত্রে যেন কোনও বাড়াবাড়ি করা না হয়। যার পক্ষে যা সম্ভব তা-ই হাদিয়া দেবে।
ঘ. কারও পক্ষ হতে দেওয়া হাদিয়াকে কোনও অবস্থায়ই তুচ্ছ মনে করতে নেই; বরং মহব্বতের নিদর্শন হিসেবে গ্রহণ করে নেওয়া চাই।
ঙ. মহিলাগণ যাতে একে অন্যকে হাদিয়া দিতে পারে, পুরুষদের উচিত সে ব্যাপারে তাদের প্রতি উদার থাকা।
تهادوا فإن الهدية تذهب وحر الصدر
“তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া দাও। কেননা হাদিয়া মনের বিদ্বেষ দূর করে।” মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৯২৫০
অপর এক হাদীছে আছে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ- تهادوا تحابوا “তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া দাও। এতে তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে।” বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৫৯৪। বায়হাকী, হাদীছ নং ১১৯৪৬: বাগাবী, হাদীছ নং ১৬১২
উল্লেখ্য, পরস্পরকে ভালোবাসা ঈমানের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ- لا تؤمنوا حتى تحابوا “তোমরা প্রকৃত মু'মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালোবাস। সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৫৪; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৬৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদীছ নং ৫১৯৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৪১২
তো প্রকৃত মু'মিন হওয়ার জন্য যখন একে অন্যকে ভালোবাসা জরুরি, তখন যে সমস্ত কাজ দ্বারা পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হয় তার প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন হাদীছে এরকম কাজের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন, বেশি বেশি সালাম দিলে পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। এমনিভাবে হাদিয়া বিনিময়ও ভালোবাসা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বহু হাদীছে একে অন্যকে হাদিয়া দেওয়ার প্রতি উৎসাহ দান করেছেন। আলোচ্য হাদীছটি সেরকমই। এর দ্বারা হাদিয়ার প্রতি উৎসাহদানের পাশাপাশি একটি মূলনীতিও বলে দিয়েছেন। মূলনীতিটি এই যে, প্রত্যেকের পক্ষে হাদিয়া হিসেবে যা দেওয়া সম্ভব হয় তাই দেবে। হাদিয়া কোনও দামী বস্তু হওয়া জরুরি নয়। অনেকে মনে করে দামী জিনিস না হলে হাদিয়া দেওয়া যায় না। তাই গরীবদের অনেকেই এই নেক কাজটির ফযীলত থেকে বঞ্চিত থাকে। দামী হাদিয়া দিতে না পারার কারণে তারা হাদিয়া দেয়ই না। অথচ না দেওয়া অপেক্ষা সামান্য দেওয়াও উত্তম বৈ কি। নেক কাজ যতটুকু করা যায় ততটুকুই লাভজনক। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ-
فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
অর্থ : সুতরাং কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করে থাকলে সে তা দেখতে পাবে।সূরা যিলযাল, আয়াত ৭.
এ হাদীছ দ্বারা শেখানো হয়েছে হাদিয়ার জন্য বস্তুটি মূল্যবান হওয়া শর্ত নয়। ব্যাস প্রত্যেকে আপন সংগতি অনুযায়ী দেবে। দৃষ্টান্তস্বরূপ এ হাদীছে ছাগলের খুরের কথা বলা হয়েছে। ছাগলের খুর এমনই তুচ্ছ জিনিস, যা কোনও কাজের নয়। এর দ্বারা রূপকার্থে সামান্য বস্তু বোঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ যে ব্যক্তি অতি সামান্য কিছু দিতে পারে। সে তা-ই দেবে এবং তাতেই হাদিয়া দেওয়ার ফযীলত পেয়ে যাবে। অপর এক হাদীছে এ বিষয়টা ব্যক্ত হয়েছে এভাবে যে-
يا أبا ذر إذا طبخت مرقة فأكثر ماءها وتعاهد جيرانك
“হে আবূ যার! যখন ঝোল রান্না কর, তখন পানি বেশি দিও এবং তোমার প্রতিবেশীদেরকে তা থেকে দিও। সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৬২৫। বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ১১৪, বাগাবী,শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ১৬৮৯.
এ হাদীছে যেমন হাদিয়াদাতাকে সামান্য হাদিয়াদানকে তুচ্ছ মনে করতে নিষেধ করা হয়েছে, তেমনি হাদিয়া গ্রহিতাকেও শেখানো হয়েছে, যেন সে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আসা হাদিয়াকে তুচ্ছ মনে না করে। অনেক সময় দেখা যায় মানুষ কোনও বস্তু অল্প দামী হওয়ায় হাদিয়া হিসেবে তা দিতে কুণ্ঠাবোধ করে, তেমনি অনেকে এমনও আছে, যাদেরকে অল্পদামের কোনও জিনিস হাদিয়া দিলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এবং হাদিয়াদাতার সমালোচনা করে। এ হাদীছ তাদেরকে তা নিষেধ করছে। হাদিয়াপ্রদান আন্তরিকতার পরিচায়ক। আর আন্তরিকতা অতি মূল্যবান জিনিস। সুতরাং হাদিয়া হিসেবে দেওয়া বস্তুটির বাজারমূল্য না দেখে দাতার আন্তরিকতার মূল্য দেওয়া চাই। প্রকৃতপক্ষে তার মূল্য এত বেশি যে, টাকাপয়সা দিয়ে তার মান পরিমাপ করা সম্ভব নয়। সুতরাং হাদিয়ার বাজারমূল্য যা-ই হোক না কেন, দাতার আন্তরিকতার প্রতি লক্ষ করে আন্তরিকভাবেই তা গ্রহণ করা চাই এবং সেজন্য তাকে কৃতজ্ঞতাও জানানো চাই।
উল্লেখ্য, নারী-পুরুষ সকলেই এ আদেশের অন্তর্ভুক্ত। তবে বিশেষভাবে মহিলাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এজন্য যে, প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিনিময় সাধারণত তাদের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। কাজেই এর দ্বারা এ কথাও বোঝা গেল যে, পুরুষদের উচিত নারীদের প্রতি এমন উদার থাকা, যাতে তারা অকুণ্ঠভাবে প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিতরণ করতে পারে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা বোঝা গেল হাদিয়া দেওয়াও একটি নেক কাজ।
খ. এ হাদীছ মু'মিনদেরকে একে অন্যের প্রতি এমন আচরণের শিক্ষা দেয়, যা মহব্বতের পরিচায়ক এবং যা দ্বারা পরস্পরে মহব্বত সৃষ্টি হয়, হাদিয়াও যার একটি।
গ. এ হাদীছ শিক্ষা দেয় হাদিয়ার ক্ষেত্রে যেন কোনও বাড়াবাড়ি করা না হয়। যার পক্ষে যা সম্ভব তা-ই হাদিয়া দেবে।
ঘ. কারও পক্ষ হতে দেওয়া হাদিয়াকে কোনও অবস্থায়ই তুচ্ছ মনে করতে নেই; বরং মহব্বতের নিদর্শন হিসেবে গ্রহণ করে নেওয়া চাই।
ঙ. মহিলাগণ যাতে একে অন্যকে হাদিয়া দিতে পারে, পুরুষদের উচিত সে ব্যাপারে তাদের প্রতি উদার থাকা।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)