রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

ভূমিকা অধ্যায়

হাদীস নং: ১২২
ভূমিকা অধ্যায়
সৎকর্মের বহুবিধ পন্থা।
জাহান্নাম থেকে নিজের দূরত্ব সৃষ্টির উপায়
হাদীছ নং: ১২২

হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, সূর্য উদিত হয় এমন প্রতিটি দিনে মানুষের উপর দেহের প্রতিটি জোড়ার বিনিময়ে একেকটি সদাকা করণীয়। দুই ব্যক্তির মধ্যে ন্যায়বিচার করা একটি সদাকা। মানুষকে তার বাহনে সওয়ার করানো অথবা তার পিঠে তার মালপত্র তুলে দেওয়ার সাহায্য করাও একটি সদাকা। ভালো কথা একটি সদাকা। নামাযে যাওয়ার জন্য যে পথ চলা হয় তার প্রতিটি কদমও একটি সদাকা। রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলাও একটি সদাকা। -বুখারী ও মুসলিম'
ইমাম মুসলিম এ হাদীছটি হযরত আয়েশা রাযি.-এর সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আদম সন্তানের প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৩৬০টি জোড়ায় সৃষ্টি করা হয়েছে। যে ব্যক্তি আল্লাহর বড়ত্ব বর্ণনা করে, তাঁর প্রশংসা করে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, সুবহানাল্লাহ বলে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, মানুষের চলাচল পথ থেকে কোনও পাথর সরিয়ে দেয় অথবা মানুষের চলাচল পথ থেকে কাঁটা বা হাড় সরিয়ে দেয়, কিংবা কোনও সৎকাজের আদেশ করে বা অসৎকাজে নিষেধ করে আর এসব কাজ করে ওই ৩৬০টি জোড়ার সংখ্যা পরিমাণ, সেদিনকার সন্ধ্যাবেলা সে এ অবস্থায় উপনীত হয় যে, নিজেকে জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে ফেলেছে।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ২৭০৭, ২৮৯১, ২৯৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১০০৯, ১০০৭: মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৮১৮৩; বায়হাকী, হাদীছ নং ৭৮২০; বাগাবী, হাদীছ নং ১৬৪৫)
مقدمة الامام النووي
13 - باب في بيان كثرة طرق الخير
122 - السادس: عن أبي هريرةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «كُلُّ سُلاَمَى مِنَ النَّاسِ عَلَيهِ صَدَقَةٌ، كُلَّ يَومٍ تَطلُعُ فِيهِ الشَّمْسُ: تَعْدِلُ بَينَ الاثْنَينِ صَدَقةٌ، وتُعِينُ الرَّجُلَ فِي دَابَّتِهِ، فَتَحْمِلُهُ عَلَيْهَا أَوْ تَرفَعُ لَهُ عَلَيْهَا مَتَاعَهُ صَدَقَةٌ، وَالكَلِمَةُ الطَيِّبَةُ صَدَقَةٌ، وبكلِّ خَطْوَةٍ تَمشِيهَا إِلَى الصَّلاةِ صَدَقَةٌ، وتُمِيطُ الأذَى عَنِ الطَّريقِ صَدَقَةٌ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1) [ص:61]
ورواه مسلم أيضًا من رواية عائشة رَضي الله عنها، قَالَتْ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنَّهُ خُلِقَ كُلُّ إنْسانٍ مِنْ بَنِي آدَمَ عَلَى سِتِّينَ وثلاثمِائَة مَفْصَل، فَمَنْ كَبَّرَ اللهَ، وحَمِدَ الله، وَهَلَّلَ اللهَ، وَسَبَّحَ الله، وَاسْتَغْفَرَ الله، وَعَزَلَ حَجَرًا عَنْ طَريقِ النَّاسِ، أَوْ شَوْكَةً، أَوْ عَظمًا عَن طَريقِ النَّاسِ، أَوْ أمَرَ بمَعْرُوف، أَوْ نَهَى عَنْ مُنكَر، عَدَدَ السِّتِّينَ والثَّلاثِمِائَة فَإنَّهُ يُمْسِي يَومَئِذٍ وقَدْ زَحْزَحَ نَفسَهُ عَنِ النَّارِ».

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটির মর্মও পূর্বে হযরত আবূ যার রাযি. থেকে বর্ণিত ১১৮ নং হাদীছের কাছাকাছি। এতে অতিরিক্ত আছে- 'সূর্য উদিত হয় এমন প্রতিটি দিনে'- এর দ্বারা বোঝানো হচ্ছে কেউ যাতে মনে না করে যে, শরীরের জোড়াসমূহের যে নি'আমত আল্লাহ তা'আলা দান করেছেন, তার বিপরীতে হাদীছে বর্ণিত কাজসমূহ জীবনে একবার করাই যথেষ্ট। এর দ্বারাই তার শোকর আদায়ের দায়িত্ব পালন হয়ে যাবে। বরং তার জীবনে যত সূর্যোদয় সে পাবে তত দিনই তাকে এ কাজ করে যেতে হবে। কেননা জোড়াসমূহের নি'আমত সে প্রতিদিনই ভোগ করছে। মৃত্যু পর্যন্ত তা ভোগ করতে থাকবে। তাই মৃত্যু পর্যন্তই তার শোকর আদায় করে যাওয়া কর্তব্য।

বলা হয়েছে দুই ব্যক্তির মধ্যে ন্যায়বিচার করাও একটি সদাকা। দুই ব্যক্তির মধ্যে ন্যায়বিচার করা অতি বড় পুণ্যের কাজ। মানুষের পারস্পরিক ঐক্য ও সম্প্রীতি অনেক বড় নি'আমত। এর অভাবে মানুষের উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয় ও সুখশান্তি নষ্ট হয়। পরিবার ও সমাজে ঝগড়া-ফাসাদ অব্যাহত থাকলে ‘ইবাদত-বন্দেগীও বিঘ্নিত হয়। এভাবে মানুষের দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জীবনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। এজন্যই এক হাদীছে আছেঃ-

فساد ذات البين هي الحالقة

“পরস্পরে ঝগড়া-ফাসাদ অতি সর্বনাশা।” জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৫০৯; বায়হাকী, আল-আদাব, হাদীছ নং ১০২.
তাই পরস্পর কলহবিবাদে লিপ্ত হতে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে এবং কোথাও কলহবিবাদ দেখা দিলে যথাশীঘ্র সম্ভব মীমাংসা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছেঃ-

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

অর্থ : প্রকৃতপক্ষে সমস্ত মুসলিম ভাই-ভাই। সুতরাং তোমরা তোমাদের দু' ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমাদের প্রতি রহমত করা হয়।সূরা হুজুরাত, আয়াত ১০
মীমাংসা করতে হবে ইনসাফের সাথে, কোনও পক্ষপাতিত্ব নয়। একের প্রতি পক্ষপাতিত্ব অন্যের প্রতি জুলুম ও অন্যায় আচরণ- ইসলাম এটা অনুমোদন করে না। এমনকি শত্রুর ক্ষেত্রেও নয়। ইসলাম শত্রুর প্রতিও ইনসাফসম্মত আচরণের নির্দেশ দান করে। সুতরাং কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছেঃ-

وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍ عَلَى أَلَّا تَعْدِلُوا اعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى

অর্থ : এবং কোনও সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে ইনসাফ পরিত্যাগে প্ররোচিত না করে। ইনসাফ অবলম্বন করো। এ পন্থাই তাকওয়ার বেশি নিকটবর্তী।সূরা মায়িদা, আয়াত ৮
বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে ইনসাফের সাথে মীমাংসা করে দেওয়া অনেক ফযীলতের কাজ। এ হাদীছে তো এ কাজকে সদাকা সাব্যস্ত করা হয়েছে। অপর এক হাদীছে আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ-

ألا أخبركم بأفضل من درجة الصلاة والصيام والصدقة؟ قالوا: بلى، قال: إصلاح ذات البين

“আমি কি তোমাদেরকে নামায, রোযা ও সদাকা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট আমল সম্পর্কে অবগত করব না? তারা বললেন, অবশ্যই। তিনি বললেন, মানুষের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়া।”জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৫০৯; আহমাদ, হাদীছ নং ২৭৫০৮; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৪৯১৯; বাগাবী, হাদীছ নং ৩৫৩৮; সহীহ বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৩৯১

উভয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়া এত বড় পুণ্যের কাজ এ কারণেও যে, এ কাজ করতে গেলে উভয়পক্ষ থেকেই সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। এমন কঠিন কঠিন মন্তব্য তারা করে বসে, যা অনেক সময় সহ্য করা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু মীমাংসাকারীকে তা সহ্য করতেই হয়। এতে করে নিজ মেজাজ-মর্জির অনেক কুরবানি দিতে হয়। এ কুরবানি যেহেতু দীনের স্বার্থে ও মানুষের কল্যাণার্থে, সে কারণেও এ কাজের এত ফযীলত।

‘ভালো কথাও একটি সদাকা । ভালো কথা হচ্ছে আল্লাহর যিকর ও দু'আ, মানুষকে সালাম দেওয়া, শোকে-দুঃখে মানুষকে সান্ত্বনা দেওয়া, দীনের কাজে মানুষকে উৎসাহ দেওয়া, মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা, দীনের উদ্দেশ্যে মানুষের সঙ্গে মনোরঞ্জনমূলক কথা বলা, এমনিভাবে এমন যে-কোনও কথা, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়, সে উপকার আখিরাতের হোক বা দুনিয়ার। মানুষের বৈধ দুনিয়াবী উপকার করাও অনেক বড় ছাওয়াবের কাজ। যেমন কাউকে পার্থিব বিষয়ে সুপরামর্শ দেওয়া বা কারও জন্য সুপারিশ করা। এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা সুপারিশ কর এবং ছাওয়াবের অধিকারী হয়ে যাও। সুতরাং সুপারিশ করাও একটি ভালো কথা। এর দ্বারাও সদাকার ছাওয়াব পাওয়া যাবে।

মসজিদে যাওয়ার পথে প্রত্যেক কদমেও সদাকার ছাওয়াব হয়। এর দ্বারা জামা'আতে নামায পড়ার প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। একাকী নামায পড়লেও নামায হয় বটে, যদিও জামাত তরকের জন্য গুনাহ হয়, কিন্তু মসজিদে গিয়ে নামায পড়লে কেবল নামায হওয়ার ব্যাপারই নয়, সেইসঙ্গে আরও বহু পুণ্যের সুযোগ লাভ হয়। এক তো নামাযও হয় পূর্ণাঙ্গরূপে, যেহেতু ফরয নামায জামা'আতে আদায় করাই শরী'আতে কাম্য। সেইসঙ্গে যাতায়াত পথে আরও বিভিন্ন অনেক কাজের সুযোগ হয়। মানুষকে সালাম দেওয়া, রোগীর খবর নেওয়া, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়া, মানুষকে পথের সন্ধান দেওয়া, মানুষের বোঝা তুলে দেওয়া বা নামিয়ে দেওয়া ইত্যাদি। মসজিদে গেলে মসজিদের নির্মাণ কাজ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশগ্রহণেরও সুযোগ হয়। একাকী নামায পড়লে এসব নেক কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয় না। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন হাদীছে মসজিদে গিয়ে নামায পড়তে উৎসাহিত করেছেন এবং তার বহুবিধ ফযীলতের মধ্যে একটা ফযীলত এই বলেছেন যে, প্রত্যেক কদমে সদাকার ছাওয়াব হয়। সুতরাং কদম যত বেশি হবে, তত বেশি সদাকার ছাওয়াব হবে।

এ দৃষ্টিতে যাদের বাড়ি মসজিদ থেকে দূরে, তারা নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করতে পারে। কেননা বাড়ি দূরে হওয়ায় মসজিদে যাওয়ার পথে তাদের কদমের সংখ্যা অনেক বেশি হয়। ফলে তারা অনেক বেশি সদাকার ছাওয়াব পেয়ে যায়। তাই তো হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত আছে, বনূ সালিমার লোকজন তাদের এলাকা ছেড়ে মসজিদে নববীর কাছাকাছি চলে আসতে চাইলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই বলে তাদের বারণ করেন যে-

يا بني سلمة دياركم، تكتب آثاركم، دياركم، تكتب آثاركم.

“হে বনূ সালিমা! আপন বাসভূমিতে থাক। তোমাদের পথচলা (আমলনামায়) লেখা হবে। আপন বাসভূমিতে থাক। তোমাদের পথচলা (আমলনামায়) লেখা হবে। সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৬৬৫। মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৪৫৬৬; জামে তিরমি হাদীছ নং ৩২২৬. সুনানে বায়হাকী, হাদীছ নং ৪৮৮১.
এ হাদীছের শেষে বলা হয়েছে, 'যে ব্যক্তি এসব কাজ করে ওই ৩৬০টি জোড়ার সংখ্যা পরিমাণ, সেদিনকার সন্ধ্যাবেলা সে এ অবস্থায় উপনীত হয় যে, নিজেকে জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে ফেলেছে'। অধিকাংশ বর্ণনায় يمسي -এর স্থলে يمشي (বিচরণ করে) আছে। অর্থাৎ সেদিন সে জাহান্নাম থেকে মুক্ত এক ব্যক্তিরূপে চলাফেরা করে।

সুবহানাল্লাহ! বান্দার প্রতি আল্লাহ তা'আলার কত বড়ই না মেহেরবানী, কী সহজ উপায়ে তিনি বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভের ব্যবস্থা দান করেছেন। ৩৬০ বার এ সকল কাজ করা তো কঠিন কিছু নয়। এরপরও যদি কেউ এ সুযোগ গ্রহণ না করে, তবে তা কত বড়ই না গাফলাতির কথা!

প্রকাশ থাকে যে, সদাকার ছাওয়াব কেবল এ কাজগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এখানে কয়েকটি নমুনা দেওয়া হয়েছে মাত্র। এ জাতীয় আরও যেসব কাজ দ্বারা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ হয় কিংবা যে সকল কাজ আল্লাহ তা'আলার যিকরের অন্তর্ভুক্ত, তার প্রত্যেকটি দ্বারাই সদাকার ছাওয়াব হাসিল করা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, যে-কোনও নফল কাজ তখনই উপকারে আসে, যখন বান্দা ফরয কাজসমূহ পালনে যত্নবান থাকে। ফরয কাজই আসল। নফলসমূহ সম্পূরক মাত্র। আসলকে বাদ দিয়ে সম্পূরক কাজ প্রকৃতপক্ষে কোনও কাজেরই নয়। সুতরাং এ সকল আমল দ্বারা উপকৃত হতে হলে ফরয আমলসমূহ যথাযথভাবে আদায় করা অপরিহার্য ।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছ দ্বারাও নেক কাজের বৈচিত্র্য জানা যায়।

খ. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় দুই ব্যক্তির মধ্যে ইনসাফের সাথে মীমাংসা করে দেওয়া অতি বড় পুণ্যের কাজ।

গ. ভালো কথা বলা অনেক বড় ভালো কাজ, যাতে সদাকার ছাওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং প্রত্যেকের কর্তব্য বাকশক্তিকে ভালো কথায় ব্যবহার করা।

ঘ. মসজিদে জামা'আত ধরার জন্য গেলে কেবল জামা'আতের ছাওয়াবই পাওয়া যায় না; যাতায়াতের প্রত্যেক কদমেও সদাকার ছাওয়াব হয়। কাজেই মসজিদে যাওয়ার ব্যাপারে কিছুতেই অবহেলা করা উচিত নয়।

ঙ. চলতি পথে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে আমরা অতি সহজেই সদাকার ছাওয়াব পেতে পারি।

চ. তাসবীহ, তাহলীল, ইস্তিগফার ইত্যাদি সর্বাবস্থায়ই করা যায়। প্রত্যেকটির আপন আপন ছাওয়াবের পাশাপাশি যেহেতু সদাকার ছাওয়াবও পাওয়া যায়, তাই বিনা পরিশ্রমের এ আমলে আমরা কেন অবহেলা করব?

ছ. এ সকল কাজ যখন মাত্র ৩৬০ বার করলে জাহান্নাম থেকে নিজের দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যায় এবং এটা করাও অতি সহজ, তখন তো আমাদের এখন থেকেই এটা শুরু করে দেওয়া উচিত এবং প্রত্যেক দিনই করা উচিত। আল্লাহ তা'আলা আমাদের তাওফীক দান করুন, আমীন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
রিয়াযুস সালিহীন - হাদীস নং ১২২ | মুসলিম বাংলা