রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং:
ইয়াকীন ও তাওয়াক্কুল।
তাওয়াক্কুল করা জান্নাতীদের বৈশিষ্ট্য
হাদীছ নং: ৭৭
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, জান্নাতে প্রবেশ করবে এমনসব লোক, যাদের অন্তর পাখির অন্তরের মত - মুসলিম। (সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৪০; আহমাদ, হাদীছ নং ৮৩৬৪)
হাদীছ নং: ৭৭
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, জান্নাতে প্রবেশ করবে এমনসব লোক, যাদের অন্তর পাখির অন্তরের মত - মুসলিম। (সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৪০; আহমাদ, হাদীছ নং ৮৩৬৪)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
পাখির অন্তরের মত অন্তর হওয়ার অর্থ দু'রকম হতে পারে।
ক. তাদের অন্তর পাখির অন্তরের মত কোমল।
খ. তাদের অন্তর আল্লাহর উপর নির্ভরশীল।
পাখির অন্তর অত্যন্ত কোমল হয়ে থাকে। সে কোমলতার কারণেই তারা অতি অল্পতেই ভয় পেয়ে যায়। পোষও মানে অতি সহজে। আপন ছানাদের প্রতি তাদের মমতাপূর্ণ আচরণ খুব চোখে পড়ে। জান্নাতবাসী মু'মিনরাও এ চরিত্রের হয়ে থাকে। তাদের মন অতি নরম। ফলে সহজেই সত্য গ্রহণ করে। তাদের আচার-আচরণে থাকে বিনয়। সৃষ্টির প্রতি তারা হয় মমতাশীল। সর্বোপরি তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকে খুব বেশি। আল্লাহর স্মরণ হওয়ামাত্রই তারা ভীত-কম্পিত হয়। তাঁর কাছে জবাবদিহিতা ও তাঁর শাস্তির ভয়ে অন্যায়-অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে এবং তাঁর আনুগত্য ও নেক কাজে সর্বদা যত্নবান থাকে।
পাখিদের অন্তরের সাথে তুলনা করার উদ্দেশ্য যদি দ্বিতীয় অর্থ হয়ে থাকে, অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল, তবে তার ব্যাখ্যা হবে এরকম— পাখিরা আগামী দিনের জন্য কিছু সঞ্চয় করে রাখে না। আগামীকাল কী খাবে সে নিয়ে আজ কিছু চিন্তা করে না। প্রতিদিন ভোরবেলা খালিপেটে বের হয়ে যায় আর সন্ধ্যায় যখন বাসায় ফেরে, তখন উদরপূর্তি করে ফেরে। কোনওদিনই খালিপেটে ফিরতে হয় না। তদ্রূপ আল্লাহর প্রতি যারা পুরোপুরি ভরসা করে, তারাও আগামী দিনের জন্য কিছু সঞ্চয় করে না। সঞ্চয় করার কোনও প্রয়োজনই তারা বোধ করে না। তাদের বিশ্বাস- যেই আল্লাহ আজ আমাকে খাওয়াচ্ছেন, সে আল্লাহই আমাকে কালও খাওয়াবেন। তিনি রায্যাক। সকল সৃষ্টির রিষ্ক তিনিই যুগিয়ে থাকেন। আগামীকালও তিনিই আমার রিক যোগাবেন। সুতরাং সঞ্চয়ের কী প্রয়োজন?
উল্লেখ্য, পাখির সঙ্গে তুলনা করে এখানে উচ্চস্তরের তাওয়াক্কুলের কথা বোঝানো হয়েছে। যাদের সেরকম তাওয়াক্কুল আছে, তাদের সঞ্চয় করার কোনও প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু যাদের তাওয়াক্কুল সে পর্যায়ের নয়, তাদের কিছুটা সঞ্চয় করাই সমীচীন। তার মানে এ নয় যে, সঞ্চয় না করলে তারা রিক থেকে বঞ্চিত থাকবে। বরং তাদের সঞ্চয় করা সমীচীন নিজেদের দীন ও ঈমান রক্ষার প্রয়োজনে। কেননা উচ্চস্তরের তাওয়াক্কুল না থাকায় কোনও কষ্টক্লেশের সম্মুখীন হলে তাদের অন্তরে সংশয়-সন্দেহ দানা বাঁধতে পারে। হয়তো সঞ্চয় না করার কারণে মনে মনে আক্ষেপ করবে কিংবা বলে বসবে, আগে কিছু জমা করে রাখলে এ অবস্থা হত না। এসব ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য তাদের কিছু সঞ্চয় করাই ভালো। না হয় হবে তো সেটাই, যা তাকদীরে আছে। জমা করার পরও ক্ষুধার কষ্ট করতে হতে পারে, যদি তাকদীরে তা লেখা থাকে। কাজেই সর্বাবস্থায় ভরসা করতে হবে আল্লাহরই উপর। যারা উচ্চস্তরের তাওয়াক্কুলকারী তারা তো ভরসা করবে সঞ্চয় ছাড়াই, আর যারা সাধারণ স্তরের, তারা সঞ্চয়ের সাথে। আসবাব-উপকরণ গ্রহণ করা ও না করার ব্যাপারটাও এরকমই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. অন্তর কোমল হওয়া জান্নাতবাসীদের আলামত। সুতরাং চেষ্টা-সাধনা করে হলেও অন্তরে কোমলতা সৃষ্টির প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত।
খ. এ হাদীছের প্রধান শিক্ষা তাওয়াক্কল। মুমিন ব্যক্তির কর্তব্য সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করা। এ গুণ জান্নাতে যাওয়ার পক্ষে সহায়ক।
ক. তাদের অন্তর পাখির অন্তরের মত কোমল।
খ. তাদের অন্তর আল্লাহর উপর নির্ভরশীল।
পাখির অন্তর অত্যন্ত কোমল হয়ে থাকে। সে কোমলতার কারণেই তারা অতি অল্পতেই ভয় পেয়ে যায়। পোষও মানে অতি সহজে। আপন ছানাদের প্রতি তাদের মমতাপূর্ণ আচরণ খুব চোখে পড়ে। জান্নাতবাসী মু'মিনরাও এ চরিত্রের হয়ে থাকে। তাদের মন অতি নরম। ফলে সহজেই সত্য গ্রহণ করে। তাদের আচার-আচরণে থাকে বিনয়। সৃষ্টির প্রতি তারা হয় মমতাশীল। সর্বোপরি তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকে খুব বেশি। আল্লাহর স্মরণ হওয়ামাত্রই তারা ভীত-কম্পিত হয়। তাঁর কাছে জবাবদিহিতা ও তাঁর শাস্তির ভয়ে অন্যায়-অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে এবং তাঁর আনুগত্য ও নেক কাজে সর্বদা যত্নবান থাকে।
পাখিদের অন্তরের সাথে তুলনা করার উদ্দেশ্য যদি দ্বিতীয় অর্থ হয়ে থাকে, অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল, তবে তার ব্যাখ্যা হবে এরকম— পাখিরা আগামী দিনের জন্য কিছু সঞ্চয় করে রাখে না। আগামীকাল কী খাবে সে নিয়ে আজ কিছু চিন্তা করে না। প্রতিদিন ভোরবেলা খালিপেটে বের হয়ে যায় আর সন্ধ্যায় যখন বাসায় ফেরে, তখন উদরপূর্তি করে ফেরে। কোনওদিনই খালিপেটে ফিরতে হয় না। তদ্রূপ আল্লাহর প্রতি যারা পুরোপুরি ভরসা করে, তারাও আগামী দিনের জন্য কিছু সঞ্চয় করে না। সঞ্চয় করার কোনও প্রয়োজনই তারা বোধ করে না। তাদের বিশ্বাস- যেই আল্লাহ আজ আমাকে খাওয়াচ্ছেন, সে আল্লাহই আমাকে কালও খাওয়াবেন। তিনি রায্যাক। সকল সৃষ্টির রিষ্ক তিনিই যুগিয়ে থাকেন। আগামীকালও তিনিই আমার রিক যোগাবেন। সুতরাং সঞ্চয়ের কী প্রয়োজন?
উল্লেখ্য, পাখির সঙ্গে তুলনা করে এখানে উচ্চস্তরের তাওয়াক্কুলের কথা বোঝানো হয়েছে। যাদের সেরকম তাওয়াক্কুল আছে, তাদের সঞ্চয় করার কোনও প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু যাদের তাওয়াক্কুল সে পর্যায়ের নয়, তাদের কিছুটা সঞ্চয় করাই সমীচীন। তার মানে এ নয় যে, সঞ্চয় না করলে তারা রিক থেকে বঞ্চিত থাকবে। বরং তাদের সঞ্চয় করা সমীচীন নিজেদের দীন ও ঈমান রক্ষার প্রয়োজনে। কেননা উচ্চস্তরের তাওয়াক্কুল না থাকায় কোনও কষ্টক্লেশের সম্মুখীন হলে তাদের অন্তরে সংশয়-সন্দেহ দানা বাঁধতে পারে। হয়তো সঞ্চয় না করার কারণে মনে মনে আক্ষেপ করবে কিংবা বলে বসবে, আগে কিছু জমা করে রাখলে এ অবস্থা হত না। এসব ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য তাদের কিছু সঞ্চয় করাই ভালো। না হয় হবে তো সেটাই, যা তাকদীরে আছে। জমা করার পরও ক্ষুধার কষ্ট করতে হতে পারে, যদি তাকদীরে তা লেখা থাকে। কাজেই সর্বাবস্থায় ভরসা করতে হবে আল্লাহরই উপর। যারা উচ্চস্তরের তাওয়াক্কুলকারী তারা তো ভরসা করবে সঞ্চয় ছাড়াই, আর যারা সাধারণ স্তরের, তারা সঞ্চয়ের সাথে। আসবাব-উপকরণ গ্রহণ করা ও না করার ব্যাপারটাও এরকমই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. অন্তর কোমল হওয়া জান্নাতবাসীদের আলামত। সুতরাং চেষ্টা-সাধনা করে হলেও অন্তরে কোমলতা সৃষ্টির প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত।
খ. এ হাদীছের প্রধান শিক্ষা তাওয়াক্কল। মুমিন ব্যক্তির কর্তব্য সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করা। এ গুণ জান্নাতে যাওয়ার পক্ষে সহায়ক।
