রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৭১
অধ্যায়: ৬ তাকওয়া ও আল্লাহভীতি।
৭১। একটি মূল্যবান দুআ:
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করতেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتَّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنى.
(হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট হিদায়াত, তাকওয়া, চারিত্রিক পবিত্রতা ও অমুখাপেক্ষিতা প্রার্থনা করছি।) - মুসলিম। (হাদীস নং ২৭২১)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করতেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتَّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنى.
(হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট হিদায়াত, তাকওয়া, চারিত্রিক পবিত্রতা ও অমুখাপেক্ষিতা প্রার্থনা করছি।) - মুসলিম। (হাদীস নং ২৭২১)
6 - باب في التقوى
71 - الثالث: عن ابن مسعودٍ - رضي الله عنه: أنَّ النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - كَانَ يقول: «اللَّهُمَّ إنِّي أَسألُكَ الهُدَى، وَالتُّقَى، وَالعَفَافَ، وَالغِنَى (1)». رواه مسلم. (2)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ দু'আয় নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছে চারটি জিনিস প্রার্থনা করেছেন। তার মধ্যে প্রথম হিদায়াত। হিদায়াত মানে পথনির্দেশ। অর্থাৎ দীনের “ইলম ও দীনের উপর চলার তাওফীক। এটা অতি ব্যাপক। দীনের সাধারণ স্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত অসংখ্য ধাপ আছে। বরং এ ক্ষেত্রে উন্নতির কোনও সীমা-পরিসীমা নেই। সর্বনিম্ন ধাপ হল শিরক ও কুফর থেকে মুক্তিলাভ করে ঈমান ও ইসলামের অধিকারী হওয়া। সর্বোচ্চ স্তর নবীগণের স্তর। তাঁদেরও সে স্তর থেকে আল্লাহ তা'আলার অধিকতর নৈকট্যে পৌঁছার অসংখ্য ধাপ আছে। সুতরাং প্রত্যেকে আল্লাহ তা'আলার কাছে যে হিদায়াতের দু'আ করবে, তার অর্থ হবে ঈমান ও হিদায়াতের যে স্তরে সে আছে তা থেকে আরও উন্নত স্তরে পৌঁছার জন্য আল্লাহর সাহায্যলাভ।
এ দু'আর দ্বিতীয় বিষয় হল তাকওয়া। হিদায়াতের মত এরও আছে বহু স্তর। সর্বনিম্ন স্তর শিরক ও কুফর থেকে মুক্তিলাভ। সর্বোচ্চ স্তর অন্তরকে গায়রুল্লাহর মহব্বত থেকে মুক্ত করে আল্লাহর ভালোবাসায় বিলীন করে দেওয়া। আল্লাহর ভালোবাসায় নিজেকে বিলীন করে দেওয়ারও আছে বহু স্তর। এ ক্ষেত্রেও সবার উপরে ছিলেন নবী- রাসূলগণ।
তৃতীয় বিষয় চারিত্রিক পবিত্রতা। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা যা-কিছু হারাম ও নাজায়েয করেছেন তা থেকে নিজেকে রক্ষা করা। তা অন্তরের সাথে সম্পর্কিত বিষয় হোক, যেমন অহংকার, হিংসা, লোভ, মোহ ইত্যাদি, অথবা বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে সম্পর্কিত বিষয়, যেমন জুলুম করা, ওয়াদা ভঙ্গ করা, অন্যের কাছে হাত পাতা, অশ্লীলতায় লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি।
চতুর্থ বিষয় 'গিনা'। অর্থাৎ কোনও মাখলুকের কাছে মুখাপেক্ষী হয়ে না থাকা। নিজের কোনও প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণে কোনও সৃষ্টির কাছে আশাবাদী না হওয়া। যাবতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য কেবল আল্লাহ তা'আলার অভিমুখী হয়ে থাকা। প্রকৃতপক্ষে এটা অন্তরের গুণ। হাত, মুখ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা কেবল তার প্রকাশ হয় মাত্র। যার অন্তরে এ গুণ আছে, সেই প্রকৃত ধনী। সেই সত্যিকারের ঐশ্বর্যবান, যদিও তার বিশেষ অর্থ-সম্পদ না থাকে। তাই হাদীছে বলা হয়েছে, অন্তরের ঐশ্বর্যই প্রকৃত ঐশ্বর্য।
নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ চারওটি বিষয়ে সর্বোচ্চ স্তরে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতপ্রাপ্ত। সর্বশ্রেষ্ঠ মুত্তাকী। শ্রেষ্ঠতম চরিত্রবান। আত্মিক ঐশ্বর্যের সর্বশীর্ষে ছিল তাঁর অবস্থান। তা সত্ত্বেও তিনি যে আল্লাহ তা'আলার কাছে এসব বিষয়ে প্রার্থনা করেছেন, তার অর্থ এর প্রত্যেকটিতে আরও বেশি উৎকর্ষলাভের আকাঙ্ক্ষা।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ চারওটি গুণের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও যখন অধিকতর উন্নতির দু'আ করেছেন, তখন আমাদের এগুলো অর্জনের জন্য কত বেশি দু'আ করা উচিত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মূলত এ দু'আ দ্বারা তিনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, তোমরাও আল্লাহ তা'আলার কাছে এগুলো প্রার্থনা করো। প্রকাশ থাকে যে, এ চারটি বিষয়ে দু'আ করার শিক্ষাদান দ্বারা এর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। কাজেই প্রত্যেকের কর্তব্য এগুলো অর্জনের জন্য সচেষ্ট থাকা। কোনও বিষয় অর্জনের জন্য কেবল দু'আই যথেষ্ট নয়, দু'আর পাশাপাশি চেষ্টাও জরুরি। কাজেই এগুলোর জন্য যখন দু'আর শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, তখন যেন এ তাকীদও করে দেওয়া হল যে, তোমরা এগুলো অর্জনের জন্য অবশ্যই চেষ্টা করো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছে হিদায়াত, তাকওয়া, চারিত্রিক পবিত্রতা ও সৃষ্টির প্রতি অনপেক্ষতার দু'আ দ্বারা এগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। সুতরাং আমাদের কর্তব্য এগুলো অর্জনের জন্য দু'আ করার পাশাপাশি নিয়মিত চেষ্টা ও সাধনা করে যাওয়া।
এ দু'আর দ্বিতীয় বিষয় হল তাকওয়া। হিদায়াতের মত এরও আছে বহু স্তর। সর্বনিম্ন স্তর শিরক ও কুফর থেকে মুক্তিলাভ। সর্বোচ্চ স্তর অন্তরকে গায়রুল্লাহর মহব্বত থেকে মুক্ত করে আল্লাহর ভালোবাসায় বিলীন করে দেওয়া। আল্লাহর ভালোবাসায় নিজেকে বিলীন করে দেওয়ারও আছে বহু স্তর। এ ক্ষেত্রেও সবার উপরে ছিলেন নবী- রাসূলগণ।
তৃতীয় বিষয় চারিত্রিক পবিত্রতা। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা যা-কিছু হারাম ও নাজায়েয করেছেন তা থেকে নিজেকে রক্ষা করা। তা অন্তরের সাথে সম্পর্কিত বিষয় হোক, যেমন অহংকার, হিংসা, লোভ, মোহ ইত্যাদি, অথবা বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে সম্পর্কিত বিষয়, যেমন জুলুম করা, ওয়াদা ভঙ্গ করা, অন্যের কাছে হাত পাতা, অশ্লীলতায় লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি।
চতুর্থ বিষয় 'গিনা'। অর্থাৎ কোনও মাখলুকের কাছে মুখাপেক্ষী হয়ে না থাকা। নিজের কোনও প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণে কোনও সৃষ্টির কাছে আশাবাদী না হওয়া। যাবতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য কেবল আল্লাহ তা'আলার অভিমুখী হয়ে থাকা। প্রকৃতপক্ষে এটা অন্তরের গুণ। হাত, মুখ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা কেবল তার প্রকাশ হয় মাত্র। যার অন্তরে এ গুণ আছে, সেই প্রকৃত ধনী। সেই সত্যিকারের ঐশ্বর্যবান, যদিও তার বিশেষ অর্থ-সম্পদ না থাকে। তাই হাদীছে বলা হয়েছে, অন্তরের ঐশ্বর্যই প্রকৃত ঐশ্বর্য।
নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ চারওটি বিষয়ে সর্বোচ্চ স্তরে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতপ্রাপ্ত। সর্বশ্রেষ্ঠ মুত্তাকী। শ্রেষ্ঠতম চরিত্রবান। আত্মিক ঐশ্বর্যের সর্বশীর্ষে ছিল তাঁর অবস্থান। তা সত্ত্বেও তিনি যে আল্লাহ তা'আলার কাছে এসব বিষয়ে প্রার্থনা করেছেন, তার অর্থ এর প্রত্যেকটিতে আরও বেশি উৎকর্ষলাভের আকাঙ্ক্ষা।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ চারওটি গুণের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও যখন অধিকতর উন্নতির দু'আ করেছেন, তখন আমাদের এগুলো অর্জনের জন্য কত বেশি দু'আ করা উচিত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মূলত এ দু'আ দ্বারা তিনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, তোমরাও আল্লাহ তা'আলার কাছে এগুলো প্রার্থনা করো। প্রকাশ থাকে যে, এ চারটি বিষয়ে দু'আ করার শিক্ষাদান দ্বারা এর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। কাজেই প্রত্যেকের কর্তব্য এগুলো অর্জনের জন্য সচেষ্ট থাকা। কোনও বিষয় অর্জনের জন্য কেবল দু'আই যথেষ্ট নয়, দু'আর পাশাপাশি চেষ্টাও জরুরি। কাজেই এগুলোর জন্য যখন দু'আর শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, তখন যেন এ তাকীদও করে দেওয়া হল যে, তোমরা এগুলো অর্জনের জন্য অবশ্যই চেষ্টা করো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছে হিদায়াত, তাকওয়া, চারিত্রিক পবিত্রতা ও সৃষ্টির প্রতি অনপেক্ষতার দু'আ দ্বারা এগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। সুতরাং আমাদের কর্তব্য এগুলো অর্জনের জন্য দু'আ করার পাশাপাশি নিয়মিত চেষ্টা ও সাধনা করে যাওয়া।
