আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৫- অনুমতি গ্রহণ - প্রদান সংক্রান্ত

হাদীস নং: ৫৮১৭
আন্তর্জাতিক নং: ৬২৫১
৩৩০৮. যে সালামের জবাব দিল এবং বললঃ ওয়া আলাইকাস সালাম। [জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) এর সালামের জবাবে] আয়িশা (রাযিঃ) ‘ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ বলেছেন।
আর নবী (ﷺ) বলেনঃ আদম (আলাইহিস সালাম) এর সালামের জবাবে ফিরিশতাগণ বলেনঃ আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
৫৮১৭। ইসহাক ইবনে মানসুর (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদের একপার্শ্বে উপবিষ্ট ছিলেন। সে নামায আদায় করে এসে তাঁকে সালাম করল। নবী (ﷺ) বললেনঃ ওয়া আলাইকাস সালাম; তুমি ফিরে যাও এবং নামায আদায় কর, কেননা তুমি নামায আদায় করনি। সে ফিরে গিয়ে নামায আদায় করে এসে আবার সালাম করল। তিনি বললেনঃ ওয়া আলাইকাস সালাম; তুমি ফিরে যাও এবং নামায আদায় কর, কেননা তুমি নামায আদায় করনি। তখন সে দ্বিতীয় বারের সময় অথবা তার পরের বারে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাকে নামায শিখিয়ে দিন।
তিনি বললেনঃ যখন তুমি নামাযে দাঁড়াবার ইচ্ছা করবে, তখন প্রথমে তুমি যথাবিধি উযু করবে। তারপর কিবলামুখী দাঁড়িয়ে তাকবীর বলবে। তারপর কুরআন থেকে যে অংশ তোমার পক্ষে সহজ হবে, তা তিলাওয়াত করবে। তারপর তুমি রুকু করবে প্রশান্তভাবে। তারপর মাথা তুলে ঠিক সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর তুমি সিজদা করবে প্রশান্তভাবে। তারপর মাথা তুলে বসবে প্রশান্তভাবে। তারপর সিজদা করবে প্রশান্তভাবে। তারপর আবার মাথা তুলে বসবে প্রশান্তভাবে। তারপর ঠিক এভাবেই তোমার নামাযের বাকী সকল কাজ সম্পন্ন করবে। আবু উসামা বর্ণনার শেষে বলেন, (দ্বিতীয় সিজদা হতে উঠে) এমনকি তুমি সোজা হয়ে দাঁড়াবে।
بَابُ مَنْ رَدَّ فَقَالَ: عَلَيْكَ السَّلاَمُ وَقَالَتْ عَائِشَةُ: «وَعَلَيْهِ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ» وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:56]: " رَدَّ المَلاَئِكَةُ عَلَى آدَمَ: السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ "
6251 - حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ المَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَجُلًا دَخَلَ المَسْجِدَ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ فِي نَاحِيَةِ المَسْجِدِ، فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ، فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ، ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ» فَرَجَعَ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ، فَقَالَ: «وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ، فَارْجِعْ فَصَلِّ، فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ» فَقَالَ فِي الثَّانِيَةِ، أَوْ فِي الَّتِي بَعْدَهَا: عَلِّمْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَقَالَ: «إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَأَسْبِغِ الوُضُوءَ، ثُمَّ اسْتَقْبِلِ القِبْلَةَ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ بِمَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ القُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَسْتَوِيَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا» وَقَالَ أَبُو أُسَامَةَ، فِي الأَخِيرِ: «حَتَّى تَسْتَوِيَ قَائِمًا» ،

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রুকু-সিজদায় স্থির হওয়া ওয়াজিব। রুকু-সিজদায় গিয়ে সর্বনি্ম কতটুকু সময় অপেক্ষা করলে ওয়াজিব আদায় হয় এ ব্যাপারে উপরিউক্ত হাদীসের ভিত্তিতে ইমাম ত্বহাবী রহ. বলেন, مِقْدَارُ الرُّكُوعِ أَنْ يَرْكَعَ حَتَّى يَسْتَوِيَ رَاكِعًا وَمِقْدَارُ السُّجُودِ أَنْ يَسْجُدَ حَتَّى يَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ، فَهَذَا مِقْدَارُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ الَّذِي لَا بُدَّ مِنْهُ . রুকু এবং সিজদায় যে পরিমাণ দেরি না করলেই নয় তা হলো, রুকু-সিজদায় গিয়ে স্থির হওয়া। (ত্বহাবী শরীফ-১৩৯২ নং হাদীসের আলোচনায়, খ--১, পৃষ্ঠা-১৬৭) ইমাম ত্বহাবীর এ বক্তব্য থেকেও সর্বসাধারণের নিকট ধীরস্থিরের পরিমাণ নির্ধারণ করা কষ্টকর হতে পারে। তাই তাদের জন্য আরো সহজ করে বলা যেতে পারে যে, একবার তাসবীহ পাঠ করা যায় এই পরিমাণ সময় রুকু-সিজদায় অপেক্ষা করলে সেটাকে স্থিরতা বলা যায় এবং এর দ্বারা রুকু-সিজদা পূর্ণ হয়ে যায়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ৪৬৪) তবে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতে এ ধরণের তাড়াহুড়া কোনক্রমে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করার মতো সময় অপেক্ষা করা উচিত।
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)