আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৪- আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৬১৬৬
৩২৫৭. কাউকে ‘ওয়াইলাকা’ বলা।
৫৭৩৫। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব (রাহঃ) ......... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বললেনঃ ‘ওয়াইলাকুম’ অথবা ‘ওয়াইহাকুম’ –রাবীর সন্দেহ– (তোমাদের জন্য আফসোস), আমার পরে তোমরা আবার কাফির হয়ে যেয়ো না। যাতে তোমরা একে অন্যের গর্দান মারবে।

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
لَا تَرْجَعُوْا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ (তোমরা যেন আমার পর কুফরীতে লিপ্ত হয়ে না পড় যে, তোমাদের একে অন্যের গর্দান উড়াতে থাকবে)। এর দুটি অর্থ হতে পারে।

ক. তোমরা আমার পরে মুরতাদ হয়ে যেয়ো না। অর্থাৎ বাস্তবিকই ইসলাম পরিত্যাগ করে কুফরী ধর্মের দিকে ফিরে যেয়ো না, যার পরিণামে জাহিলী যুগের মতো পরস্পরে মারামারি ও খুনোখুনিতে লিপ্ত হবে এবং অন্যায়ভাবে একে অন্যের গর্দান উড়িয়ে দেবে।

খ. অথবা এর অর্থ- তোমরা কাফেরদের মতো হয়ে যেয়ো না, যাদের কাছে মানুষের জান-মালের কোনও মূল্য নেই। ফলে তোমরা অন্যায়ভাবে একে অন্যকে হত্যা করবে এবং তুচ্ছ তুচ্ছ কারণে পরস্পরে খুনোখুনিতে লিপ্ত হবে। বাস্তবিকপক্ষে অন্যায় রক্তপাত কাফেরদেরই কাজ। এটা মু'মিনদের কাজ হতে পারে না। মু'মিনদের কাজ তো অন্যের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করা। সুতরাং তোমরা যদি আমার পর আত্মকলহে লিপ্ত হও এবং অন্যায়ভাবে একে অন্যকে হত্যা কর, তবে তা কাফেরদের মতো কাজই হবে। এরকম কাজ তোমরা ইসলাম গ্রহণের আগে জাহিলী যুগে করতে। সাবধান! আমার পরে তোমরা ওইরকম কাজের দিকে ফিরে যেয়ো না। তোমরা যেহেতু মুমিন, আর ঈমানের দাবি হল অন্যের জান, মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা রক্ষা করা, তাই তোমরা সেদিকেই মনোযোগী থাকবে। فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ মানে তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ এবং তোমাদের মান-সম্মানও তোমাদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ (যা ক্ষুণ্ণ করা হারাম)। কাজেই এর বিপরীত কাজ কিছুতেই করবে না। তোমরা ঈমানের উপর মজবুত থাকবে এবং নিজেদের সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব অটুট রাখবে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. মুমিনদের পরস্পরে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ঈমানের দাবি। একের সঙ্গে অন্যের মারামারি ও হানাহানিতে লিপ্ত হওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয ও ঈমানের দাবির পরিপন্থী কাজ।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন